রবিবার, ২০ আগস্ট, ২০১৭ ০০:০০ টা

দল নির্বাচনের প্রক্রিয়া কি?

ক্রীড়া প্রতিবেদক

দল নির্বাচনের প্রক্রিয়া কি?

প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন

মিনহাজুল আবেদিন খুব বেশি ওয়ানডে খেলেননি। টেস্ট খেলার স্বপ্নও পূরণ হয়নি। নব্বই দশকে দেশের সেরা ব্যাটসম্যানের আজীবনকার কষ্ট, টেস্ট খেলতে না পারা। ১৯৯৯ সালের বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের পর বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে তার খেলার বিষয়টি ছিল অনেকটাই নিশ্চিত। অথচ কোনো এক অজানা কারণে স্কোয়াডে সুযোগ পাননি নান্নু। এই খেলতে না পারার দুঃখ আজীবন বয়ে বেড়াতে হতে হবে নান্নুকে। দেশসেরা ব্যাটসম্যান নান্নুকে কেন অভিষেক টেস্টে খেলানো হয়নি- প্রশ্নবাণে জর্জরিত ছিলেন তৎকালীন নির্বাচক প্যানেল এনায়েত হোসেন সিরাজ, আলিউল ইসলাম ও জিয়াউল হক মাসুদদের। নির্বাচক প্যানেলের উত্তরকে সদূত্তর বলে ভাবতে পারেননি বলে ক্রিকেটপ্রেমীরা দেশের অনেক স্থানে কুশপুত্তলিকা পুড়িয়েছিলেন। ১৭ বছর আগের সেই মুহূর্তের কথা নিশ্চিত মনে আছে আজকের প্রধান নির্বাচক ও সে সময়কার অবহেলিত ক্রিকেটার নান্নুর। দেশের সেরা ক্রিকেটার হওয়ার পরও যখন দলে সুযোগ পান না, তখন তার মানসিক অবস্থা কি হতে পারে- সেটা বোধকরি নান্নুর চেয়ে ভালো কেউ জানেন না!  ১৭ বছর পর মুমিনুল হক সৌরভকে বাদ দিয়ে ঠিক বুঝতে পেরেছেন মিনহাজুল আবেদীন নান্নু, প্রধান নির্বাচকের চেয়ার কতটা উত্তপ্ত?

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে মুমিনুলকে কেন নেওয়া হলো না- প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন প্র্রধান নির্বাচক। তিনি যখন মুমিনুলকে বাদ দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দিচ্ছিলেন, তখন পাশে বসে কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে হাসছিলেন। মুমিনুলকে বাদ দেওয়ার সঙ্গে মিডিয়া যখন তার বাদ পড়ার প্রসঙ্গটি টেনে আনেন, তখন বড্ড বিমর্ষ মনে হয়েছে তাকে। যদিও তাত্ক্ষণিকভাবে সামাল দিয়ে বলেন, ‘এমনভাবে আমাকে বলা ঠিক নয়। আমাদের কোচ আছেন, তাকেও বিষয়টি জিজ্ঞাসা করতে পারেন।’ প্রধান নির্বাচক কিন্তু ঠিকই বলেছেন। টানা ১১ টেস্টে হাফসেঞ্চুরি হাঁকানো মুমিনুল শেষ দুই টেস্টে পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করেননি। তাই কোচ তার গুডবুক থেকে ছেঁটে ফেলেছেন মুমিনুলকে। প্রধান নির্বাচকের বক্তব্যই প্রকারান্তরে বলছে, দল নির্বাচনে আসলে কোচ হাতুরাসিংহেই সব ও শেষ কথা। তার চাওয়া-পাওয়ার মূল্যই দিতে হয় সবার আগে। দিতে হয় বলেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সম্ভাবনা শূন্যের কোটায় থাকার পরও সৌম্য সরকারকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ইংল্যান্ডে। মুমিনুলের বাদ পড়া, মাহমুদুল্লাহকে নিয়ে কোনো রকম আলোচনা না করা এবং দুই বছরে কোনো টেস্ট না খেলেও নাসির হোসেনকে সুযোগ দেওয়ার পর এখন প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচক প্যানেলের সত্যিকার অর্থে কাজ কি? দল নির্বাচনে তাদের পলিসিটাই কি? শুধু বাংলাদেশে নয়, পৃথিবীর কোনো দেশেই দল নির্বাচন করে সাধুবাদ পাননি নির্বাচকরা। সমালোচিত হয়েছেন বারবার। এর আগে নাইমুর রহমান দুর্জয়কে বাদ দিতে যেয়ে নির্বাচক মাইনুল হক বলেছিলেন, ‘আমি বাঁ হাতেও তার  চেয়ে ভালো স্পিন করতে পারি!’ হয়তো নির্বাচকের উত্তপ্ত চেয়ারে বসে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। কিংবা কারও দ্বারা আদিষ্ট হয়ে দল নির্বাচন করেন। অথবা কারও জিম্মি হয়ে লোক দেখানো দল নির্বাচন করেন।

সর্বশেষ খবর