রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জয়ের স্বপ্ন মুশফিকের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জয়ের স্বপ্ন মুশফিকের

দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মুশফিক সৌম্য রুবেল মিরাজ ও মুস্তাফিজ —বাংলাদেশ প্রতিদিন

দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে খেলা। যেখানে এর আগে চার টেস্টের সব কটিতে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার সেখানে টাইগাররা যাচ্ছে দলের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে ছাড়াই। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার দলে না থাকা মানে, তার জায়গায় খেলাতে হয় দুজনকে- একজন ব্যাটসম্যান এবং একজন বোলার। তারপরেও দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে স্বপ্ন দেখছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। গতকাল দেশ ছাড়ার আগে জানিয়ে দিয়ে গেছেন, এই সফরটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য মাইলফলক হতে পারে। টাইগার দলপতি জোড় গলায় বলেন, ‘বাংলাদেশ দল কখনোই হারের জন্য খেলে না। অনেকে হয়তো মনে করতে পারেন দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে আমাদের কোনো সুযোগই নেই। আমি তাদের সঙ্গে কোনোভাবেই একমত নই। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিশ্বাস না করা শিখলে সাফল্য পাওয়া সম্ভব হয় না। আগে বিশ্বাস করতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানো সম্ভব। এই বিশ্বাস না আসলে কাজটা কঠিন হয়ে যাবে। আমাদের মধ্যে তিন বছর আগেও এই বিশ্বাসটা ছিল না। আমরা গত কিছুদিন যে ধরনের ক্রিকেট খেলেছি, সেই ধারা ধরে রাখতে পারলে যে কোনো কন্ডিশনেই আমাদের সুযোগ আছে। হয়তো আমাদের বোলিং আক্রমণটা কিছুটা অনভিজ্ঞ। অনভিজ্ঞ হলেও তারা অনেক স্কিলফুল। তারা যদি প্ল্যান অনুযায়ী বোলিং করতে পারে তাহলে আমার মনে হয় ওদের ব্যাটসম্যানদেরও অনেক স্ট্রাগল করতে হবে। আমাদের আত্মবিশ্বাস আছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এই সিরিজটা আমাদের ক্রিকেটের জন্য বড় মাইলফলক হতে পারে।’ দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। বাউন্সি উইকেটে তারা বুঝতেই পারেন না কি করবেন। মুশফিকের বিশ্বাস, এবারের চিত্র অন্যরকম হবে। তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটটা হচ্ছে চ্যালেঞ্জের খেলা। নিউজিল্যান্ডে যাওয়ার আগে আমরা ভেবেছিলাম তাদের সুইংয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা ক্যাপাবল না। আমরা সেখানে সফল হয়েছি। ব্যাটসম্যানদের সব সময়ই ভিন্ন ভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। অবশ্যই এটা আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। আট বছর আগে যে দলটি দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিল সেখান থেকে এই দলের ব্যাটসম্যানরা অনেক বেশি পরিণত। আশা করি এই চ্যালেঞ্জ ব্যাটসম্যানরা নিতে পারবে। আমাদের দলে বেশ কিছু ম্যাচ উইনার ব্যাটসম্যান আছে।’ সাকিবের মতো একজন ক্রিকেটার দলে না থাকাটা অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। তারপরেও মেনে নিয়েছেন মুশফিক, ‘সাকিবের জায়গাতে দুইজন খেলোয়াড়কে খেলাতে হয়। ওর জায়গায় যে কোনো খেলোয়াড়কেই রিপ্লেস করা যায় না। শুধু ও না, আমার মনে হয় প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ও যদি ইনজুরিতে পড়ত, তাহলে আমাদের খেলতে হতো। ওর মতো নাম্বার ওয়ান ক্রিকেটারকে মিস করা অধিনায়ক হিসেবে আমার জন্য খারাপ খবরই। তবে এটা ওর জায়গায় যারা খেলবে তাদের জন্য দারুণ সুযোগ। আমি বলব, ওরা জায়গায় যারা খেলবে এই সুযোগটা তাদেরও নতুনভাবে নেওয়া উচিত। সাকিব থাকলে যে কোনো অধিনায়কের জন্যই প্লাস পয়েন্ট। তারপরও সাকিবকে ছাড়াও আমরা ওয়েস্ট ইন্ডিজ, নিউজিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ জিতেছি। তবে ওকে অনেক মিস করব। আশা করি ও যে কারণে ব্রেকটা নিয়েছে সেটা যেন ফুলফিল করে ফ্রেশ হয়ে ফিরতে পারে।’

সাকিব ছুটিতে যাচ্ছেন এটা জানতেন মুশফিকুর রহিম। একই ড্রেসিংরুমে ছিলেন তারা। ক্যাপ্টেনের সঙ্গে সাকিবের সম্পর্কও দারুণ। তারপরেও মুশফিককে জানানোর প্রয়োজন মনে করেননি সাকিব। তাই টাইগার দলপতি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের এমন সিদ্ধান্তে বেশ কষ্টই পেয়েছেন। মুশফিক বলেন, ‘যখন সাকিব বোর্ড সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছে তখন আমরা জানতে পেরেছি। ছুটি পাবে কি পাবে না সেটা আমি জানতাম না। যখন আমি শুনেছিলাম, তখন মানসিকভাবে আমি প্রস্তুত ছিলাম। তার রিপ্লেসমেন্টতো পাওয়া যাবে না। তারপরও ক্রিকেট হচ্ছে টিম গেম। চেষ্টা করব, ওকে ছাড়াই ভালো কিছু করতে। দল হিসেবে আমরা খেলতে পারলে তার অপূর্ণতা আমরা পূরণ করতে পারব।’

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর