সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কিপিংয়ে পরিবর্তন আসছে!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কিপিংয়ে পরিবর্তন আসছে!

সাকিব আল হাসানের বিশ্রামের বিষয়টি এখনো ‘টক অব দ্য কান্ট্রি’। ক্রিকেটার, ক্রিকেটপ্রেমীরা বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি মনেপ্রাণে। যদিও সরাসরি কেউ কোনো মন্তব্য করছেন না। তারপরও সমালোচনার তীরে এফোঁড়-ওফোঁড় হচ্ছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। বিশেষ করে দুই টেস্ট সিরিজ খেলতে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যাওয়ার আগে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম দলের প্রত্যাশা ও নিজের বিশ্রাম নিয়ে যখন কথা বলেন। তখন থেকেই ফের আলোচনায় উঠে সাকিবের বিশ্রামের বিষয়টি। টাইগারদের টেস্ট অধিনায়ক সমালোচনা না করলেও নিজের বিশ্রাম নেওয়া প্রসঙ্গে জানান, তিনি এত বড় ক্রিকেটার নন যে তাকে বিশ্রাম নিতে হবে! অধিনায়কের এমন বক্তব্যই আগুনে ঘি ঢেলে দিয়েছে। ক্রিকেটাররা বিশ্রাম নিবেন। এ নিয়ে নানামুখী আলোচনা হবে। কিন্তু এই মুহূর্তে আলোচনায় থাকা উচিত বাংলাদেশের দক্ষিণ আফ্রিকা সফর এবং মুশফিকের ব্যাটিং অর্ডার ও উইকেট কিপিং প্রসঙ্গ।

চট্টগ্রামে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের পর ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে ভীষণভাবে সমালোচিত হন কোচ চন্ডিকা হাতুরাসিংহে ও টিম ম্যানেজমেন্ট। বিশেষ করে দ্বিতীয় ইনিংসে মুমিনুল হককে ৮ নম্বরে ব্যাটিং করতে পাঠিয়ে সমালোচনার খাপ খোলা তলোয়ারে ছিন্নভিন্ন হয়েছেন টিম ম্যানেজমেন্ট। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানও বিষয়টিকে আরও জোরালো করে দেন এই বলে যে, মুশফিককে ৪ নম্বরে ব্যাট করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি করেননি। প্রতিবাদ না জানিয়ে শুধু ভদ্রস্তভাবে টেস্ট অধিনায়ক উত্তর দিয়েছিলেন, ‘১২০/১৩০ ওভার কিপিং করে চার নম্বরে ব্যাটিং করা কষ্টকর।’ অধিনায়কের বক্তব্যের পরপরই শোরগোল পরে যায় ক্রিকেটাঙ্গনে। এরপর আলোচনায় উঠে আসেন মুশফিকের কিপিং নিয়েও। চট্টগ্রাম টেস্টের পরই মুশফিক বলেছিলেন, দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিবেন। আফ্রিকা সফরে যাওয়ার আগে টাইগার অধিনায়ক পুনরায় জানিয়েছেন, উইকেটরক্ষকের বিষয়ে দলের সিদ্ধান্তই মেনে নিবেন তিনি। তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে বাংলাদেশের আফ্রিকা সফর। ওই ম্যাচে মুশফিক উইকেটের পেছনে দাঁড়াতেও পারেন। আবার লিটন দাসও দাঁড়াতে পারেন। সিদ্ধান্ত টিম ম্যানেজমেন্টের।

মুশফিকের কিপিংয়ের বিষয়টি বহুদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। ১১ বছর আগে অধিনায়কের টেস্ট অভিষেক একজন সলিড ব্যাটসম্যান হিসেবে। এরপরও অনেকগুলো টেস্ট খেলেছেন শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে। তবে সবসময়ই বলে এসেছেন, কিপিং করতে ভালোবাসেন তিনি। কিপিং করে ব্যাটিং করতে কোনো সমস্যা হয় না। এবারই প্রথম অনুযোগের সুরে জানিয়েছেন, দীর্ঘসময় কিপিং করে আসার পর আবার তাড়াহুড়া করে ব্যাটিং করতে নামা কষ্টকরই। তার এই বক্তব্যই টিম ম্যানেজমেন্টকে নতুন করে তার ব্যাটিং অর্ডার ও কিপিং নিয়ে ভাবার পথ করে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কা সিরিজে মুশফিক প্রথম টেস্টে খেলেছিলেন ব্যাটসম্যান হিসেবে। তখন কিপিং করেছিলেন লিটন। দ্বিতীয় টেস্টে লিটন আহত হলে পুনরায় কিপিং করেন মুশফিক। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে কিপিং করেন। কিন্তু তার কিপিং সমালোচিত হয়েছে। তখন তিনি বলেন, কর্মকর্তারা যা ভাববেন, সেটাই হবে। দেশ ছাড়ার আগে কিপিং এবং ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে বলেন, ‘টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিব আমি। তিনদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে যদি বুঝতে পারি একজন ব্যাটসম্যান খেলা উচিত, তাহলে সেটাই হবে। টিম ম্যানেজমেন্ট যদি মনে করেন আমি একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললে ভালো হবে, সেটাই হবে। দলের ভালো হবে যেটা, সেখানেই খেলব।’

সফরে বাংলাদেশ দুটি টেস্ট, তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টি-২০ খেলবে। সফরে আইসিসির নতুন নিয়মে খেলবে দুই দল। নতুন নিয়মে ব্যাটের মাপ নির্দিষ্ট করা হয়েছে। এখন থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ মিলিমিটার চওড়া ব্যাট ব্যবহার করতে পারবেন ব্যাটসম্যানরা। ব্যাটের সর্বোচ্চ পুরুত্ব ৬৭ মি.মি এবং পাশে ৪০ মি.মি। নতুন নিয়ম সম্পর্কে ধারণা নিয়েই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। বিপরীত কন্ডিশন এবং শক্তিশালী দলের বিপক্ষে খেলতে নেমে কতটা সাফল্য পাবেন মুশফিকরা, সেটাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর