বৃহস্পতিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

নির্বাচনী জটিলতায় বিসিবি

ক্রীড়া প্রতিবেদক

নির্বাচনী জটিলতায় বিসিবি

ভারতের পর অপরাপর ক্রিকেট বোর্ডগুলোর মধ্যে আর্থিকভাবে অন্যতম স্বচ্ছল বিসিবি। বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর আয়োজন করেছে টি-২০ বিশ্বকাপ, এশিয়া কাপ, অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপের মতো বড় বড় আসর। ক্রিকেটের বাইরেও বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছে ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেটাররা পারফরম্যান্স করছে এবং বিসিবির কোষাগার স্ফীত হচ্ছে। সময়ের চোরাবালিতে আবার বর্তমান কমিটির মেয়াদও শেষ হওয়ার পথে। নতুন নির্বাচনের যখন প্রস্তুতি নিচ্ছে বিসিবি, তখনই আইনি ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছে। ২৬ জুলাই বিসিবির গঠনতন্ত্র-সংক্রান্ত এক মামলার রায়ের ওপর ভিত্তি করে ১৬ সেপ্টেম্বর সাত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আইনি নোটিস পাঠানো হয়। ২০১৩-এর বিসিবি নির্বাচন এবং বর্তমান পরিচালনা পর্ষদকে অবৈধ দাবি করে বার্ষিক সাধারণ সভা ও বিশেষ সভা আয়োজনের প্রস্তুতিসহ বিসিবির সব কার্যক্রম বন্ধ করতে বলা হয়েছে ওই নোটিসে। উল্লেখ্য, ২ অক্টোবর রেডিসান ব্লুতে বিসিবি এজিএম ও ইজিএম অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে অংশ নিতে বিসিবি কাউন্সিলরদের চিঠি পাঠিয়েছে ২৯ আগস্ট। আইনি নোটিস পাঠানোর পর এখন কি এজিএম ও ইজিএম করতে পারবে বিসিবি? আইনি জটিলতা সত্ত্ব্বেও বিসিবির বর্তমান কিমিটি নির্দিষ্ট সময়েই এজিএম ও ইজিএম করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।  এরই মধ্যে বিসিবির সাবেক সভাপতি ও বারিধারা ড্যাজলার্সের কাউন্সিলর সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি ২০১২ সালে সংশোধিত বিসিবির গঠনতন্ত্র এবং সে অনুযায়ী করা কাউন্সিলর তালিকাকে অবৈধ উল্লেখ করে বিসিবির বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসানকে চিঠি দিয়েছেন। আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি বর্তমান কাউন্সিলরদের দিয়ে এজিএম ও ইজিএম না করার আহ্বান জানিয়েছেন। নিজ ক্লাব বারিধারা ড্যাজলার্সের প্যাডে লেখা চিঠিতে বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রায় অনুযায়ী তিনি কাউন্সিলর হওয়ার যোগ্যতা রাখেন না। সভায় যোগদানের যে চিঠি তাকে বা অন্যদের দেওয়া হয়েছে, সেটা যথাযথ নয়। কারণ, যে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী এসব কাউন্সিলর ঠিক করা হয়েছে এবং তার ওপর ভিত্তি করে ২০১৩ সালে বিসিবির নির্বাচন হয়েছে, সেটি অবৈধ। বিসিবি সভাপতির কাছে তার অনুরোধ, বর্তমান কাউন্সিলরদের নিয়ে যেন বিসিবি বার্ষিক সভা ও বিশেষ সভা আয়োজন না করে। কারণ, সেটি হবে আদালতের রায়ের পরিষ্কার অবমাননা। সাবেক সভাপতির পাঠানো চিঠির পর বিষয়টি আরও গোলেমেলে হয়ে গেছে। এর আগে বিসিবির সাবেক পরিচালক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনের দায়েরকৃত মামলায় বিসিবির বর্তমান কমিটিতে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। অবশ্য বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেছেন, ‘২ অক্টোবর এজিএম ও ইজিএম আয়োজন করার সব পরিকল্পনাই নিয়ে রেখেছে বিসিবি। সে উদ্দেশে ইতিমধ্যে কাউন্সিলরদের চিঠি পাঠানো হয়েছে।’ স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন চৌধুরীর দায়েরকৃত মামলায় কোর্ট বিসিবির বর্তমান কমিটি এবং ২০১৩ সালের গঠনতন্ত্রকে অবৈধ ঘোষণা করেছে। সে প্রসঙ্গে বিসিবি সিইও বলেন, ‘আমরা আইনগতভাবেই মোকাবিলা করব। আমাদের আইনজীবীরা বিষয়টি দেখবেন।’  এজিএম ও ইজিএম নিয়ে যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে, এরফলে কি বিসিবি ২০০৮ সালের পুরনো গঠনতন্ত্রে ফিরে যাবে? না, বর্তমান গঠনতন্ত্রকে এজিএম ও ইজিএমে পাস করিয়ে বৈধতা দিবে। না, বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত করে অ্যাডহক কমিটিতে ফিরে যাবে? অনেক প্রশ্নের জন্ম দেওয়া পরিস্থিতি কিন্তু জটিলই হচ্ছে দিন দিন।

সর্বশেষ খবর