সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

কতটা প্রস্তুত মুশফিকরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক


কতটা প্রস্তুত মুশফিকরা

তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে বেনোনি থেকে গত সন্ধ্যায় পচেফস্ট্রোমে পৌঁছেছেন মুশফিকুর রহিমরা। ছোট্ট এই শহরেই দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটি খেলবে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর পচেফস্ট্রোম। জনসংখ্যা দেড় লাখের মতো। শহরটি মূলত ‘সিটি অব এডুকেশন’ বা ‘শিক্ষার শহর’ নামে পরিচিত। জোহানেসবার্গ, কেপটাউনের মতো পরিচিত নয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে। তবে বাংলাদেশ ও দেশটির ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে খুবই পরিচিত ক্রিকেট ভেন্যু। এখানে একটি টেস্ট ও দুটি ওয়ানডে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের। কিন্তু ফল সুখকর নয়। টেস্টে হেরেছিল ইনিংস ও ১৬০ রানে এবং ওয়ানডে দুটির ব্যবধান ছিল ১৬৮ রান ও ৬১ রানে। সেই পচেফস্ট্রোমেই ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম টেস্ট খেলতে নামবেন মুশফিক, তামিমরা। পচেফস্ট্রোমের ক্রিকেট ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় টেস্ট এবং অভিষেক টেস্টটিও ছিল দুই দলের। ২০০২ সালে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটি খেলেছিল দুই দল। সুখকর নয় এমন ভেন্যুতে খেলতে এবার কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ?

গত ১৭ বছরে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ১০২টি। জয় সাকল্যে ১০টি। সেখানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পারফরম্যান্সের গ্রাফ একেবারে তলানিতে। দুই দল টেস্ট খেলেছে ১০টি। ২০১৫ সালে বৃষ্টি ভাগ্যে ড্র হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রামের টেস্ট দুটি। আগের ৮ টেস্টের সাতটির ব্যবধানই ইনিংস হার। একটির ব্যবধান শুধু উইকেটে। এছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকায় টাইগাররা এখন পর্যন্ত দুটি সিরিজ খেলেছে। ২০০২ ও ২০০৮ সালে। ২০০২ সালে প্রথম সফরে ইস্ট লন্ডনে ইনিংস ও ১০৭ রান এবং পচেফস্ট্রোমে ইনিংস ও ১৬০ রানে হেরেছিল। ২০০৮ সালে ব্লোমফন্টেইনে ইনিংস ও ১২৯ রানে এবং সেঞ্চুরিয়ানে হেরেছিল ইনিংস ৪৮ রানে। ৯ বছর পর ফের আফ্রিকা সফরে গেল বাংলাদেশ। অতীত পারফরম্যান্সের বিচারে এবার কি স্বপ্ন দেখা যায়? সাদা চোখে হয়তো নয়। কিন্তু গত দুই বছরের পারফরম্যান্সে স্বপ্ন দেখতেই পারে। এ সময়ে মুশফিকরা হারিয়েছেন ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার মতো ক্রিকেট পরাশক্তিগুলোকে। যদিও শ্রীলঙ্কা ছাড়া বাকি দুটি দেশের মাটিতে। খেলা বিপরীত কন্ডিশনে। তারপরও স্বপ্ন দেখছে গোটা দেশ। যদিও দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান নেই। ক্লান্তি এড়াতে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন আফ্রিকা সিরিজ থেকে। অথচ সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার ছিলেন সাকিব। ব্লোমফন্টেইনে তিনি ৩৮ ওভারের স্পেলে ১৩০ রানের খরচে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। পরের টেস্টে সেঞ্চুরিয়ানে ধারাবাহিকতা রেখে ২৮ ওভারের স্পেলে ৬ উইকেট নিতে রান খরচে করেছিলেন ৯৯। সেই সাকিবকে ছাড়া বাংলাদেশের বোলিং কতটা সাফল্য পাবে? বাংলাদেশ যে পাঁচ পেসার ও দুই স্পিনার নিয়ে গেছে সফরে, তারা এবারই প্রথম খেলবে সেখানে। সাকিবের অভাব পূরণে নেওয়া হয়েছে বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে। তাইজুল কতটা সাফল্য পাবেন, কিংবা মিরাজ কতটা ভেল্কি দেখাবেন, সেটা প্রশ্নবিদ্ধ। তার উপর সেখানকার সবুজ ঘাসের উইকেটে মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শফিউল ইসলাম, শুভাশীষ রায়, রুবেল হোসেনরা কতটা সাফল্য পাবেন, সেটাও প্রশ্ন সাপেক্ষ। সাকিবের ব্যাটিংয়ের অভাব পূরণে নেওয়া হয় মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা আমন্ত্রিত একাদশের বিপক্ষে খুব ভালো ব্যাটিং করেননি তিনি। ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত রেখেছেন তবে সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েসরা। যা দলকে আত্মবিশ্বাস জোগাবে অনেকটা। তিন দিনের প্রস্তুতি ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করেছেন মুশফিক, মুমিনুল হক সৌরভ, সাব্বির রহমান, ইমরুল। থাই ইনজুরিতে পড়ে তামিম ইকবাল ও ফিল্ডিংয়ে ব্যথা পেয়ে বিশ্রামে রয়েছেন সৌম্য।

সর্বশেষ খবর