বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সেই পচেফস্ট্রোমে প্রত্যয়ী মুশফিকরা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সেই পচেফস্ট্রোমে প্রত্যয়ী মুশফিকরা

অনুশীলনে তাসকিন ও রুবেল

পনের বছর পর আবার সেই দুঃস্মৃতির পচেফস্ট্রোমে খেলতে নামছে বাংলাদেশ! কিন্তু পনের বছর আগে খেলা টেস্টে কি ঘটেছিল?

ফল—বাংলাদেশ ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে! টাইগাররা অনেক ম্যাচেই এমন বাজেভাবে হেরেছে! কিন্তু এই পচেফস্ট্রোমে দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানরা দুই ইনিংসে ২১৫ ও ১০৭ রান করেছিলেন। আবার বোলাররা প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের কাছে পাত্তাই পায়নি। মাত্র এক ইনিংস খেলতে হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আর এক ইনিংসেই তিন সেঞ্চুরি— হার্শেল গিবস ১১৪, গ্যারি কারস্টেন ১৬০ এবং জ্যাক ক্যালিস অপরাজিত ১৩৯। অথচ দুই ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কোনো সেঞ্চুরি ছিল না। হাফ সেঞ্চুরিই মাত্র একটি! দক্ষিণ আফ্রিকার সেই পচেফস্ট্রোম এবার দুঃস্মৃতি ভুলতে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। এবার বেশ প্রত্যয়ী বাংলাদেশ দল। এই বাংলাদেশ দলটি ১৫ বছর আগের দলটির মতো ছন্নছাড়া নয়। এই বাংলাদেশ আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান এক দল। যে দলের ক্রিকেটাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে জয়ে অভ্যাস। তাই আজকের ম্যাচে মাঠে নামার আগে সংবাদ সম্মেলনে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম, ‘আমাদের লক্ষ্য থাকবে স্বাভাবিক খেলাটাই প্রদর্শন করা। বেশ কিছুদিন থেকে আমরা ভালো খেলছি। এটা আমাদের কাছে আরেকটি চ্যালেঞ্জ। বিদেশের মাটিতে আমরা খুব খারাপ করি—এমন নয়। কয়েক মাস আগে আমরা শ্রীলঙ্কায় জিতেছি। ভারতের সঙ্গেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। নিউজিল্যান্ডেও প্রথম টেস্টে আমরা দারুণ খেলেছি। আমরা সেশন বাই সেশন ভালো খেলার চেষ্টা করব। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রতিটি বলই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের চেষ্টা থাকবে সামর্থ্য অনুযায়ী খেলা।’ এখন বাংলাদেশের সামর্থ্য আছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারানোর! তাই সামর্থ্য অনুযায়ী স্বাভাবিক খেলার কথাই বলেছেন টাইগার দলপতি। এখানেই বোঝা যায়, এখন বাংলাদেশ কতটা আত্মবিশ্বাসী।

২০০২ এবং ২০০৮ সালের বাংলাদেশকে ঘরের মাঠে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে প্রোটিয়ারা। কিন্তু এবার ভিন্ন চিত্রনাট্য দেখা যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মুশফিক, ‘যার সঙ্গেই খেলা হোক না কেন সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং। আমরা কিন্তু টপ তিন দলের মধ্যে নেই। যে যাব আর সবাইকে হারিয়ে দিয়ে চলে আসব। আমরা আছি লোয়ার টিম, সবার কাছেই অন্যরকম চ্যালেঞ্জিং থাকে। সবাই কাছে নিজেদেরকে অন্যরকমভাবে উপস্থাপন করতে হয়। কোনো ম্যাচে ভালো করতে হলে আমাদেরকে ২০০ ভাগ করে দিতে হয়। আমরা সেটা করার জন্যও প্রস্তুত।’

বাংলাদেশ দলের প্রধান তারকা সাকিব আল হাসান নেই। বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ থেকে স্বেচ্ছায় বিশ্রাম নিয়েছেন। আর সাকিবের মতো ক্রিকেটার না থাকা মানে বাড়তি চাপ। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে একজন বাড়তি বোলার কিংবা ব্যাটসম্যান খেলাতে হয়। কেন না সাকিব হচ্ছে বাংলাদেশের সব্যসাচী এক ক্রিকেটার! ব্যাটে-বলে সমান পারদর্শী তিনি। তাই সাকিবকে না পাওয়াটা ক্যাপ্টেন মুশফিকের জন্য অনেক বড় ধাক্কা।

তবে টাইগার দলপতি মনে করেন না কেবলমাত্র একজন ক্রিকেটারের ওপর নির্ভর করে কোনো দল ভালো করতে পারে। ক্রিকেট দলীয় খেলা। দলগতভাবে পারফরম্যান্স করাই বড় কথা। ভালো কিছু করতে হলে পুরো দলকেই ভালো করতে হবে। মুশফিক বলেন, ‘সাকিবকে আমরা খুব মিস করব। তবে তামিম সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। তা ছাড়া        আমরা খেলব দল হিসেবে। দল হিসেবে ভালো  করাই আসল।’

 তারপরেও টেস্ট দলে সাকিব না থাকলে একাদশ গঠন করতে গিয়ে বেশ সমস্যায় পড়তে হয় টিম ম্যানেজমেন্টকে। তা ছাড়া দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে সাকিবের অনুপস্থিতি আর বেশি ঝামেলায় ফেলার কথা। তাই একাদশ নির্বাচনে চ্যালেঞ্জিংয়ের কথা জানালেন মুশফিক, ‘চ্যালেঞ্জিং তো অবশ্যই। চ্যালেঞ্জিং আরও মনে হয়, সেটা ম্যাচ শেষে। যখন রেজাল্ট মনে হয় এটা করলে ভালো হতো বা ওটা করলে ভালো হতো। আমরা সবাই চেষ্টা করব সেরা একাদশটা গঠন করার— কন্ডিশন বিচার, প্রতিপক্ষ বিচার করে। যেহেতু সাকিব নেই, খেলাতে হবে দুইটা খেলোয়াড়। শেষ দশ দিনে আমরা অনেক ভালো অনুশীলন করেছি।’ প্রস্তুতি ম্যাচে ইনজুরিতে পড়েছিলেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তবে দুজনই আজ খেলতে পারবেন। দুই ওপেনার সম্পর্কে মুশফিক বলেন, ‘তামিম ইকবাল এখন ভালো আছেন। আশা করছি, আগামীকাল খেলবেন তিনি। সৌম্যও খেলতে পারবেন।’

সর্বশেষ খবর