কোটি টাকার সুপার কাপ জিতেছে। ফেডারেশন কাপের ট্রফিও তুলেছে ঘরে। কিন্তু ১৫ বছর ধরে লিগ শিরোপার দেখা পাচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান। ভাবা যায়, ঢাকা আবাহনী যেখানে পেশাদার লিগে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। সেখানে মোহামেডানের কাছে তা স্বপ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০০২ সালে মাসুদ রানার নেতৃত্বে মোহামেডান লিগ জিতেছিল। পেশাদার লিগে রানার্সআপই তাদের বড় প্রাপ্তি।
মোহামেডান প্রথম দিকে শক্তিশালী দল গড়লেও শিরোপার ট্রফি ঘরে তুলতে পারেনি। গতবার লিগে দশম হওয়ায় সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। এবার ঘুরে দাঁড়াতে নামি-দামি খেলোয়াড়ই সংগ্রহ করে সাদা-কালোরা। সদস্যসচিব লোকমান হোসেন ভূঞা ও ফুটবল ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবুর প্রচেষ্টায় শক্তিশালী দল গড়া হয়। শিরোপা ফাইট দেওয়ার জন্য এই শক্তি যথেষ্টই ছিল। কিন্তু অবস্থানের কোনো পরিবর্তনের লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ৯ ম্যাচে মোহামেডানের এখন সংগ্রহ মাত্র ১১। সুতরাং এবারও দলটি শিরোপাহীন থাকছে তা নিশ্চিতই বলা যায়। কথা হচ্ছে কেন এই পরিণতি? দীর্ঘদিন ধরে মোহামেডানের সুখ-দুঃখের সঙ্গী আমিরুল ইসলাম বাবু এ ব্যাপারে বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের। এত কষ্ট করে দলটাকে সাজালাম। সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে কোচের কারণে।’ কোচ মানে অভিজ্ঞ সৈয়দ নইমুদ্দিন। প্রথম দিকে কোচ হিসেবে সেন্টুকে বেছে নেওয়া হয়। পরে আবার নিয়োগ দেওয়া হয় নইমুদ্দিনকে। বাবু আক্ষেপের সুরে বললেন, ‘নইম ভাইয়ের সব চাহিদা আমরা পূরণ করেছি। তার কোনো সিদ্ধান্তে ম্যানেজমেন্ট হস্তক্ষেপ করেনি। আমরা তাকে সহযোগিতা করার জন্য সেন্টুকে সহকারী কোচ করতে চেয়েছিলাম। নইমুদ্দিন আপত্তি তোলেন। বলেন, তিনি একাই কোচিং করাবেন। পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হলো অথচ তিনি কি তার দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করছেন? কোনো কারণে লিগ বন্ধ হলেই তিনি ভারতে চলে যান। রহমতগঞ্জের বিপক্ষে ম্যাচের পরই নইমুদ্দিন ভারতে চলে যান। এখনো আসেননি। উনি ফোন না করলেও আমরা জানতে চেয়েছি কবে আসবেন। নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। আসবেন কবে তা আর বলছেন না। এ অবস্থায় লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে নইমুদ্দিনের বদলে নতুন কাউকে কোচের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে কি? বাবু বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত ম্যানেজমেন্ট নেবে। তবে এটুকু বলব কোচ নইমুদ্দিনের কথা ও কাজের মধ্যে কোনো মিল নেই। ওনাকে আমি দারুণ শ্রদ্ধা করি, এসব কথা বলতে তাই খারাপ লাগছে। কিন্তু পরিস্থিতি বাধ্য করেছে মুখ খুলতে। সত্যি বলতে কি ওনার মতো অভিজ্ঞ কোচ মোহামেডানকে এতটা ভোগাবেন তা ভাবতেই পারিনি।’