শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জাপান ফের হারাল জিমিদের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

জাপান ফের হারাল জিমিদের

এশিয়া কাপে পঞ্চম ও ষষ্ঠ স্থান নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছিল জাপানের। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে বড় ব্যবধানে হার মানেন জিমিরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

ইতিহাস ছোঁয়ার সুযোগ ছিল। রাসেল মাহমুদ জিমিদের সুযোগ ছিল নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চটা প্রমাণ করার। কিন্তু বৃষ্টিস্নাত দিনে সেই সুযোগ হাতছাড়া করলেন জিমিরা। ৩২ বছর আগের ইতিহাসকেও ছোঁয়া হলো না বাংলাদেশের। মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামে এশিয়া কাপে পঞ্চম-ষষ্ঠ স্থান নির্ধারণী ম্যাচে লড়াই করতে পারল না। ‘সূর্যোদয়ের দেশ’ জাপানের কাছে ৪-০ গোলে হেরে ষষ্ঠ হয়েই আসর শেষ করলেন জিমিরা। আট দলের মধ্যে ছয় নম্বর। তারপরও প্রাপ্তি-যোগ ভালো। আগের দিন চীনকে পেনাল্টি শুট আউটে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ২০২১ সালের এশিয়া কাপ হকিতে সরাসরি খেলার সুযোগ নিশ্চিত করে নেওয়াই এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। এশিয়া কাপের শীর্ষ ছয় দল আগামী আসরে সরাসরি খেলবে।

৩২ বছর আগে ১৯৮৫ সালের এশিয়া কাপের দ্বিতীয় আসরের আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। সেবার পঞ্চম হয়েছিল স্বাগতিক দল। এবারও সেই সম্ভাবনা ছিল। এ জন্য বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৪ নম্বর দল জাপানকে হারাতে হতো। যদিও শক্তিমত্তায় জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবধান বেশ কয়েক ধাপ। তার ওপর পরিসংখ্যানও বলছে জিমিরা পিছিয়ে। লিগ পর্বে অনেকটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল জাপানের সঙ্গে। হেরেছিল ৩-১ গোলে। গতকাল তৃতীয় কোয়ার্টার পর্যন্ত লড়াই করেছিল। কিন্তু শেষ কোয়ার্টারে খেই হারিয়ে ফেলে। একই রকম অবস্থা হয়েছিল লিগ পর্বের ওই ম্যাচে। শেষ দুই মিনিটে দুই গোল খেয়ে হেরেছিল। গতকাল বৃষ্টিতে দিনের প্রথম খেলা ওমান-চীন নির্ধারিত সময়ে হতে পারেনি। সেটা পিছিয়ে শুরু হয় রাত ৮টায়।

ওই ম্যাচে চীন ৩-২ গোলে হারিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানকে। এ জয়ে এশিয়াকাপের দশম আসরে সপ্তম হলো চীন এবং ওমান অষ্টম। বাংলাদেশ-জাপান ম্যাচ শুরু হয় নির্ধারিত সময়ের ৪০ মিনিট পর।

প্রথম কোয়ার্টারে সমানে সমানে লড়াই করেন জিমিরা। আটকে রাখেন জাপানকে। দ্বিতীয় কোয়ার্টার শুরুর পর এগিয়ে যায় জাপান। ১৭ মিনিটে প্রথম গোল করেন ইয়ামোদো সোটা। প্রথম পেনাল্টি কর্নার রিভিউতে বাদ হয়। পরমুহূর্তে দ্বিতীয় পিসিতে গোল করে জাপান। গোলটি করেন সোটা দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় (১-০)। এরপর তৃতীয় কোয়ার্টার পর্যন্ত আর কোনো গোল হয়নি। জিমিরা সমানতালে লড়াই করেন। চতুর্থ কোয়ার্টারে বাংলাদেশের ক্লান্তিকে কাজে লাগিয়ে আরও তিন গোল আদায় করে নেয় জাপান। ৪৬ মিনিটে ম্যাচের দ্বিতীয় গোল করেন কিতাজাতো কেনজি (২-০)। দলের সেরা স্ট্রাইকার তানাকা কেনটার পাসে কানেক্ট করে গোল করেন কেনজি। তিন মিনিট পর ম্যাচের তিন নম্বর গোলটি করেন মুরাতা কাজুমা (৩-০)। জিরো ডিগ্রি অ্যাঙ্গেল থেকে দুর্দান্ত এক ফিল্ড গোল করেন মুরাতা। চার মিনিট পর ৫৩ মিনিটে ম্যাচের চার ও শেষ গোলটি করেন তানাকা সেরেন (৪-০)। তানাকা একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে আসা বাংলাদেশের গোলরক্ষককে কাটিয়ে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন। অবশ্য ৫৭ মিনিটে ম্যাচে একমাত্র পেনাল্টি কর্নার আদায় করে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু কোনো কাজে লাগাতে পারেননি চয়নরা। ফলে চার গোলের বড় হারেই মাঠ ছাড়তে হয় বাংলাদেশকে। এশিয়া কাপে ষষ্ঠ হয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু পারফরম্যান্স কিন্তু আহামরি কিছু নয়। চীনের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য জয় ছাড়া বাকি ম্যাচগুলোতে হেরেছে যাচ্ছেতাইভাবে। লিগ পর্বের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৭-০, ভারতের কাছে ৭-০ ও জাপানের কাছে ৩-১ গোলে হার মানে। সব মিলিয়ে এশিয়া কাপে জিমিরা ৪ গোলের বিপক্ষে ২৪টি।

সর্বশেষ খবর