শিরোনাম
শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ইস্ট লন্ডনে মাশরাফিদের শেষ পরীক্ষা কাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ইস্ট লন্ডনে মাশরাফিদের শেষ পরীক্ষা কাল

টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ। ওয়ানডেতেও সিরিজ হার নিশ্চিত হয়ে গেছে আগের ম্যাচে। এবার কি তবে ওয়ানডেতেও টাইগারদের টেস্ট সিরিজের মতো একই অবস্থা হবে নাকি ঘুড়ে দাঁড়াবে? আগামীকাল শেষ ওয়ানডে। জয়ের কথা চিন্তা করার চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে কিনা তা নিয়েই হয়তো ভাবছেন ক্রিকেটামোদীরা! দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি বাংলাদেশ। অবশ্য জয় দূরের কথা প্রতিদ্বন্দ্বিতাই তো হয়নি। প্রতিটি ম্যাচেই যেন টাইগাররা অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। ২০০৩ সাল এবং ২০০৮ সালে বাংলাদেশ দলের যে অবস্থা হয়েছিল এবারও তাই হচ্ছে।

শেষ দুই বছরে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলছে বাংলাদেশ। অনেক ম্যাচ জিতেছে। আবার হারলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় দেখা যাচ্ছে অন্য বাংলাদেশকে। যেন দলটা পুরনো চেহারায় ফিরে গেছে। ৭-৮ বছর আগে যেমন বড় দলগুলোর সামনে দাঁড়াতেই পারত বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে তেমনই দেখা যাচ্ছে।

বাই লেটারেল সিরিজে প্রতিটি দলই ঘরের মাঠে নিজেদের পছন্দ মতো উইকেট তৈরি করে বাড়তি সুবিধা নেয়। সেটাই স্বাভাবিক। দক্ষিণ আফ্রিকাও নিচ্ছে। তাই বলে এত খারাপ করবে বাংলাদেশ?

বোলাররা তাদের সেরাটা দিতে পারছেন না। ব্যাটসম্যানরা পছন্দের উইকেট পেয়েও খেলতে পারছেন না। তবে সবাই যে খুব খারাপ করছেন এমনও নয়। অনেকেই ভালোও করছেন। কিন্তু ক্রিকেট তো দলীয় খেলা। দু-একজন ভালো করলেই হবে না, দলগতভাবে পারফরম্যান্স করতে হবে।

ওয়ানডে সিরিজে দারুণ ব্যাটিং করেছেন মুশফিক। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি। দ্বিতীয় ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি। হাফ সেঞ্চুরি করেছেন ইমরুল কায়েসও। কিন্তু দলীয় প্রয়াস নেই। অন্যরা ব্যর্থ। আবার বোলিংয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে দাপুটে বোলিং করেছেন। একাই নিয়েছেন চার উইকেট। কিন্তু অন্য বোলাররা ব্যর্থ। সে কারণেই বিশাল ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ।

বড় বড় দলগুলোর দিকে তাকালে দেখা যায় অনেক সময় তাদের দু-একজন ক্রিকেটার ভালো করলেও ম্যাচ জিততে পারে না। যেমন দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচটা এবি ডি ভিলিয়ার্স একাই শেষ করে দিয়েছেন। মাত্র ১০৪ বলে খেলেছেন ১৭৬ রানের টর্নেডো ইনিংস। এমন একটা ইনিংসের পর আর কিছু লাগে না। ইনিংসে ৭ ছক্কা ও ১৫টি চার। কিন্তু বাংলাদেশ দলে এমন বিগ-হিটার কোথায়? বাংলাদেশকে নির্ভর করতে হয় কয়েকজন ব্যাটসম্যানের ওপর। নির্ভর করতে হয় দলের ওপর।

ভিলিয়ার্সের মতো ব্যাটসম্যানরা যে কাজটা একা করেন, সেই কাজ বাংলাদেশের কয়েকজন মিলে করতে হয়। বোলারদের ক্ষেত্রেও একই বিষয়। বড়গুলোর বিরুদ্ধে জয় পেতে হলে মানসিকভাবেও শক্ত থাকতে হয়। সেই সঙ্গে পারফরম্যান্স করতেই হবে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা যেন মানসিকভাবেই ভেঙে পড়েছেন। তা না হলে অন্তত ওয়ানডেতে এত বাজে অবস্থা হওয়ার কথা নয় বাংলাদেশের।

দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে উপমহাদেশের সব দলকেই ভুগতে হয়। তারপর টেস্ট সিরিজে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ওয়ানডে সিরিজে দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। ক্রিকেটারদের শরীরীভাষাতেও সমস্যা। সবার ভিতরই কেমন যেন আতঙ্ক কাজ করছে। টাইগাররা হারিয়ে ফেলেছে আত্মবিশ্বাস। কাল শেষ ওয়ানডে। এখন আর হারানোর কিছু নেই। তাই বাড়তি চাপ না নিয়ে অন্তত সিরিজের শেষ ম্যাচে ভয়-ডরহীন ক্রিকেট খেলা কি ভালো নয়!

বাংলাদেশ দলের সামর্থ্য আছে। সেটা মাশরাফিরা প্রমাণও করেছেন। ২০১৫ সালে বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা কিংবা ২০১৭ ইংল্যান্ডের মাটিতে সেমিফাইনাল খেলা সোজা কথা নয়। বাংলাদেশ যে বিদেশের মাটিতে ভালো খেলতে পারে না এটা ঠিক নয়। তা ছাড়া আগের সিরিজেই শ্রীলঙ্কায় গিয়ে দাপুটে পারফর্ম করেছেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়েই কেন যেন সব কিছু এলোমেলো হয়ে গেল।

বাংলাদেশ দল এখন ইস্ট লন্ডনে। সেখানেই আগামীকাল শেষ ম্যাচ খেলতে নামবে। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন টাইগাররা। সিরিজ হারলেও অন্তত শেষ ম্যাচে দাপুটে পারফর্ম করুক বাংলাদেশ। শেষ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হোক টাইগাররা।

সর্বশেষ খবর