বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

সিরিজ জয়ের হাতছানি

রাশেদুর রহমান

সিরিজ জয়ের হাতছানি

বাবা হয়েছেন মুশফিক। অনুশীলনে নেমে এ আনন্দই যেন ভাগাভাগি করছেন তামিমের সঙ্গে। খুনসুটি করতে গিয়ে ক্যামেরাবন্দী হলেন তারা —রোহেত রাজীব

গত আগস্টে মিরপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০ রানে টেস্ট ম্যাচ জয়ের স্মৃতিটা এখনো উজ্জ্বল। বিশ্ব ক্রিকেটের শাসক হিসেবে পরিচিত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তামিম-সাকিবদের দৃঢ়চেতা ব্যাটিং আর সাকিবের বিধ্বংসী বোলিংয়ের সাক্ষী হয়ে আছে ম্যাচটা। চট্টগ্রাম টেস্টে একটা ড্র হলেই তৃতীয় কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের গৌরবদীপ্ত পালকটা এতদিন টাইগারদের মুকুটে শোভা পেত। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অসিদের ৭ উইকেটের জয় সিরিজটা ড্র করে দিয়েছিল। অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ ড্র করাও ছিল বিরাট আনন্দের। ভক্তরা তাই উদযাপনে কোনো কমতি রাখেননি। টাইগারদের সামনে এখন তৃতীয় প্রতিপক্ষকে টেস্ট সিরিজে কুপোকাত করার সুযোগ।

শ্রীলঙ্কার মাটিতে গত বছরের মার্চে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ড্র করেছিল বাংলাদেশ। প্রথম টেস্ট হেরে যাওয়ার পর দ্বিতীয় টেস্ট জিতেছিল ৪ উইকেটে। এরও আগে নিউজিল্যান্ড, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইংল্যান্ডের সঙ্গে টেস্ট সিরিজে ড্র করে টাইগাররা। এরপর অস্ট্রেলিয়া। এতগুলো সিরিজ (৭টা) ড্র হলেও জিম্বাবুয়ে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া তৃতীয় কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের গৌরব এখনো অর্জিত হয়নি। ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়েকে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২ ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে। বাংলাদেশের তৃতীয় টেস্ট সিরিজ জয়টাও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৪ সালে। এবার সুযোগ এসেছে তৃতীয় প্রতিপক্ষ হিসেবে শ্রীলঙ্কাকে ঘায়েল করার। মঞ্চটা তো প্রস্তুত হয়েই আছে! আগামীকাল থেকে দুই দল মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্টে মুখোমুখি হচ্ছে।

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকে বাংলাদেশের দুর্গই বলা যায়। টেস্টে এখানে দারুণ খেলছে টাইগাররা। ২০১৬ সালের অক্টোবরে ১০৮ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে পুরনো দল ইংল্যান্ডকে কঠিনতম লজ্জায় ফেলেছিলেন মুশফিকরা। এক ম্যাচে ১২ উইকেট শিকারি মিরাজকে চিনেছিল বিশ্বক্রিকেট। ইংল্যান্ডকে হারানোর আগে ২০১৫ সালের আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই মাঠেই ড্র করে বাংলাদেশ (বৃষ্টির কারণে চারদিনই কোনো খেলা হয়নি)। এরপর গত বছরের আগস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০ রানের দারুণ জয়। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ২০১৫ সালের মাসে সর্বশেষ টেস্ট ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ। সেবার পাকিস্তান ৩২৮ রানে হারিয়েছিল মুশফিকদের। এরপর থেকেই মিরপুরে কোনো টেস্ট ম্যাচ হারেনি টাইগাররা। এই রেকর্ডটা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ধরে রেখে সিরিজ জয়ের স্বপ্নে বিভোর এখন টাইগারভক্তরা।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মুমিনুল হকের ব্যাটিং সৌরভে দারুণ এক ড্র করেছে বাংলাদেশ। দলের প্রধান তারকা সাকিব ছিলেন না ইনজুরির কারণে। তারপরও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাঘের মতো লড়াই করেছে বাংলাদেশ। লড়াইয়ের এ মানসিকতা মিরপুরে ধরে রাখতে পারলে শ্রীলঙ্কাই হতে পারে টাইগারের থাবায় ঘায়েল হওয়া তৃতীয় প্রতিপক্ষ। শ্রীলঙ্কাকে এখন আর আগের মতো ধারালো বলে মনে করেন না অনেকেই। কিন্তু এই শ্রীলঙ্কাই পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করেছে কিছুদিন আগে। জয়বর্ধনে আর সাঙ্গাকারার বিদায়ের পর লঙ্কান ক্রিকেটকে যারা মৃতপ্রায় ঘোষণা করে দিয়েছিলেন তাদের ভুল প্রমাণ করছেন কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয় ডি সিলভা আর রোশেন সিলভারা। চট্টগ্রাম টেস্টে তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংই এক সময় কোণঠাসা করে দিয়েছিল টাইগারদের। তবে মুমিনুল হক আর লিটন দাস পঞ্চমদিনের উইকেটে দাঁড়িয়েও বীরত্বপূর্ণ ব্যাটিং করে কাঁচকলা দেখিয়েছেন লঙ্কানদের। এবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সেই একই বীরত্বে লঙ্কানদের পরাজিত করার পালা!

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর