বুধবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

রেকর্ডটা হলো না বুফনের

রাশেদুর রহমান

রেকর্ডটা হলো না বুফনের

গোলবারের সামনে দাঁড়ানো ফুটবলারকে একই সঙ্গে শান্ত এবং চঞ্চল হতে হয়। শান্ত থাকতে ব্যর্থ হলে প্রতিপক্ষের আক্রমণ বুঝতে পারা কঠিন। আবার ত্বরিত গতির না হলে প্রতিপক্ষের আক্রমণ রুখতে পারা কঠিন। বিপরীতমুখী এই আচরণ ধারণ করাটা কঠিন বৈকি। ফুটবল ইতিহাসে একই সঙ্গে শান্ত ও চঞ্চল প্রকৃতির যে কজন গোলরক্ষক এসেছেন তাদের মধ্যে ইতালির জিয়ানলুইগি বুফন অন্যতম। কারও কারও মতে, ইতিহাসে সেরা তিনিই। যুক্তি হিসেবে তুলে ধরা হয়, এতটা দীর্ঘ সময় (দুই দশকেরও উপরে) ফর্মের শীর্ষে থাকতে পারেননি কোনো গোলরক্ষকই। বুফন তা করে দেখিয়েছেন। রেকর্ড গড়েছেন একের পর এক।

ইতালিয়ান সিরিএ লিগে টানা ৯৭৪ মিনিট গোল করতে দেননি প্রতিপক্ষকে। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচেও গোলবার অক্ষত রেখেছেন। উয়েফা ইউরো কাপের বাছাই পর্বেও গোলবার অক্ষত রাখার রেকর্ডটা তার (৬৪৪ মিনিট)। এমনই আরও কত রেকর্ডই না গড়েছেন বুফন। একজন বিশ্বকাপজয়ী এবং কিংবদন্তি হিসেবে বহু আগেই স্বীকৃতি পেয়েছেন তিনি। দিনে দিনে ছাড়িয়ে গেছেন নিজেকেই। হাজারও তরুণ গোলরক্ষকদের আদর্শ হিসেবে বিবেচিত তিনি। দুটি যুগ পেরিয়ে এসেছেন বুফন। সেই রোনাল্ডোদের যুগ থেকে মেসিদের যুগে খেলছেন। কোনো সময়ই বদলে যাননি ইতালিয়ান এই গোলরক্ষক। অনেক ফুটবলারের মতেই, সবচেয়ে কঠিন হলো বুফনকে পাড়ি দিয়ে গোল করা। এর মধ্যে ইকার ক্যাসিয়াস এবং নিউয়ারের মতো গোলরক্ষক এসেছে। কিন্তু বুফনকে গুরু হিসেবে মেনে নিয়েছেন সবাই। এত এত রেকর্ডের পাশে আরও একটা দারুণ রেকর্ড গড়তে পারতেন বুফন। সবচেয়ে বেশি বিশ্বকাপ খেলার রেকর্ড।

১৯৯৮ বিশ্বকাপ থেকে ইতালি দলে আছেন তিনি। টানা পাঁচটা বিশ্বকাপ খেলেছেন বুফন। ২০০৬ সালে তো বিশ্বকাপটা জয়ই করেছেন। রাশিয়াতে খেললেই ষষ্ঠ বিশ্বকাপ খেলা হতো তার। কিন্তু বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের বাধা পেরিয়ে চূড়ান্ত পর্ব নিশ্চিত করতে পারেনি চারবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালি। ইউরোপ অঞ্চলের বাছাই পর্বে প্লে-অফ রাউন্ডে সুইডিশরা শেষ করে দিয়েছে ইতালির বিশ্বকাপ স্বপ্ন। শেষ করেছে বুফনের রেকর্ড গড়ার আশাটাও। বর্তমানে তিনি ৪০ বছরের বৃদ্ধ। ফুটবলের জন্য বয়সটা অনেক বেশি। বিশেষ করে একজন গোলরক্ষকের জন্য। কিন্তু জুভেন্টাসের এই অধিনায়ক এখনো ক্লাব ফুটবলে নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন। বাছাই পর্বেও তিনি খেলেছেন দুর্দান্ত। ইতালি বিশ্বকাপ খেললে হয়ত তিনিই হতেন অধিনায়ক। তা আর হলো না। ৫টি বিশ্বকাপ খেলাও একটা রেকর্ড। বুফন ছাড়া কেবল দুজন এই রেকর্ড গড়েছেন। মেক্সিকোর অ্যান্টোনিও কারবাহাল। তিনি ১৯৫০ থেকে ১৯৬৬ সালের মধ্যে পাঁচটি বিশ্বকাপেই অংশ নিয়েছেন। জার্মানির লুথার ম্যাথিউস খেলেছেন ১৯৮২ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে সবকটি বিশ্বকাপ। এর মধ্যে তিনি তো ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপজয়ীও। অ্যান্টোনিও কারবাহাল ও লুথার ম্যাথিউসকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সুযোগটা পেলেন না বুফন।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর