শনিবার, ১০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

লড়াই এবার শ্রেষ্ঠত্বের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

লড়াই এবার শ্রেষ্ঠত্বের

শুরু হচ্ছে যুব গেমসের চূড়ান্ত পর্ব। স্মরণীয় করতে আয়োজন হচ্ছে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের। গতকাল শেষ মুহূর্তেও চলেছে মহড়া —বাংলাদেশ প্রতিদিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পরই শুরু হয়ে যাবে বাংলাদেশ যুব গেমসের চূড়ান্ত পর্ব। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে যুব গেমসের চূড়ান্ত পর্বের যাত্রা হবে আজ। ১৬ মার্চ পর্দা নামবে এই আলোচিত গেমসের। মনোমুগ্ধর অনুষ্ঠান দেখতে দর্শকদের কোনো টিকিট কিনতে হবে না। তবে আসন সংখ্যা সীমিত বলেই বিকাল ৪টার আগে গেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে গেমসের উদ্বোধন করবেন। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে স্টেডিয়াম আঙিনা। গতকাল থেকেই স্টেডিয়ামের ভিতরে চলাচলের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকবে। পাশের দোকানগুলোও বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যুব গেমস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম নতুনরূপে সাজানো হয়েছে। পুরো গ্যালারি রং করা হয়েছে। নষ্ট চেয়ার সরিয়ে দর্শকদের সুবিধার কথা ভেবে বসানো হয়েছে নতুন চেয়ার। বাইরেও আলোকসজ্জা করা হয়েছে। অন্তর শোবিজের ব্যবস্থাপনায় নানা রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে। দেশের প্রখ্যাত শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করবেন। লেজার শো, আতশবাজি ও ক্রীড়াবিদরা মার্চ পাস্টে অংশ নেবেন। মশাল প্রজ্বালন করবেন কমনওয়েলথ ও এসএ গেমসে সোনাজয়ী বাংলাদেশের কৃতী শুটার আসিফ হোসেন। ১৬ মার্চ সমাপনী দিনেও নানা রকম অনুষ্ঠান রাখা হয়েছে। অনূর্ধ্ব-১৭ বয়সের সীমাবদ্ধ যুব গেমসের চূড়ান্ত পর্বে বালক ও বালিকা মিলিয়ে দুই হাজার ৬৬০ জন প্রতিযোগী ২৪০টি সোনার পদকের জন্য লড়বে। চূড়ান্ত পর্বে ফুটবল ইভেন্ট ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। থাকছে হকি, কাবাডি, বাস্কেটবল ও ভলিবল। ব্যক্তিগত ইভেন্টে অ্যাথলেটিকস, সাঁতার, টেবিল টেনিস, ভারোত্তোলন, রেসলিং, উশু, শুটিং, আরচ্যারি, ব্যাডমিন্টন, বক্সিং, দাবা, জুডো, কারাতে, তায়কোয়ান্দো ও স্কোয়াশ থাকছে।

তৃণমূল পর্যায়ে খেলোয়াড় সন্ধানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন অনেক আগে থেকেই যুব গেমসের পরিকল্পনা নিয়েছিল। নানা কারণে তা মাঠে নামানো সম্ভব হচ্ছিল না। বর্তমান কমিটি আর পিছু হটেনি। উপজেলা পর্যায়ে যুব গেমস শুরু করে সাড়া ফেলে দেয়। এরপর বিভাগীয় পর্যায় শেষ করে চূড়ান্ত পর্ব মাঠে গড়াচ্ছে। বিওএর অনেক কর্মকাণ্ডে সমালোচনা হয়েছে। কিন্তু যুব গেমস মাঠে নামিয়ে প্রশংসায় ভাসছে দেশের ক্রীড়ার অভিভাবক সংস্থাটি। খেলোয়াড়দের মান বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশ গেমসের পাশাপাশি যুব গেমসেরও প্রয়োজন ছিল। সত্যি বলতে কি, দেশে ভালো মানের খেলোয়াড় সৃষ্টি হচ্ছে না। এক জায়গায় তা আটকে আছে। তাই আন্তর্জাতিক গেমসগুলোর সাফল্য আসছে না। ৪৭ বছরে বাংলাদেশ কমনওয়েলথ গেমসে দুবার ও এশিয়ান গেমসে একবার সোনা জিতেছে।

অলিম্পিক গেমসে এখন পর্যন্ত তো কোনো পদকেরই দেখা মেলেনি। যা সাফল্য তা এসএ গেমসেই সীমাবদ্ধ। এখানেও জ্বলে উঠতে রীতিমতো ভাগ্যের সহায়তা নিতে হয়। দুবার দ্রুততম মানবের খেতাব পেলেও সাউথ এশিয়ান গেমসের এখন অ্যাথলেটিকসে সোনা জেতাটা স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। সাঁতারেও চলছিল অকাল। গতবার মাহফুজা খাতুন শিলা দুই সোনা জিতে ব্যর্থতা দূর করেছেন। ভারোত্তোলনে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত সোনা জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেন। শুধু শিলা ও মাবিয়ার ওপর ভরসা থাকলে তো চলবে না, নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টি করতে হবে। যুব গেমসের প্রধান লক্ষ্যই নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টি। বিওএর মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা বলেছেন, এই গেমসে যারা ভালো করবে তাদের বাছাই করে উন্নত মানের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আমরা চাই নতুনরা এসে দেশের মান বাড়াক। যে পরিকল্পনা বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন হাতে নিয়েছে তা যদি বাস্তবায়ন করা যায় তাহলে অবশ্যই খেলাধুলার চেহারা পাল্টে যাবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর