মঙ্গলবার, ২০ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

জিমিদের পারফরম্যান্স হতাশাজনক

পাকিস্তান, ভারত থেকে কোচ না এনে মালয়েশিয়া বা কোরিয়া থেকে কোচ আনার পক্ষে আমি

জিমিদের পারফরম্যান্স হতাশাজনক

এশিয়ান গেমসের আয়োজক জাকার্তা। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানীতে গেমসটি চলবে ১৮ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। বাংলাদেশও অংশ নিবে গেমসে। গেমসের অন্যতম আকর্ষণীয় ইভেন্ট হকিতে অংশ নিবে ১২টি দেশ। স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন ও জাপানের সঙ্গে বাছাইপর্ব ডিঙিয়ে আসা বাকি পাঁচ দেশ বাংলাদেশ, ওমান, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড ও চাইনিজ তাইপেই। গেমসে খেলতে বাছাইপর্ব খেলতে হয়েছে বাংলাদেশকে। বাছাইপর্বের ফাইনালে আমাদের ২-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ওমান।

ঢাকায় দশম এশিয়া কাপে ষষ্ঠ হয়েছিলাম আমরা। গোটা আসরে আমাদের পারফরম্যান্স আহামরি ছিল না। একমাত্র চীনের বিরুদ্ধে একটি কোয়ার্টার উজ্জীবিত খেলে দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও জিতেছি। তবে র‌্যাঙ্কিংয়ে চীন এগিয়ে থাকায় আমাদের বাছাইপর্ব খেলেই এশিয়ান গেমসে যেতে হল।

এশিয়া কাপের পর বড় কোনো প্রস্তুতি বাদেই আমাদের হকি দল ওমান যায়। বিপরীতে ওমান বাছাইপর্বের প্রস্তুতি নিতে পাকিস্তান ও জাপানের সঙ্গে তিন জাতির টুর্নামেন্ট খেলেছে। এছাড়া প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে হংকংয়ে। খেলার মধ্যে ছিল বলেই বাংলাদেশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ওমান। নিয়মিত খেলা না হলে সেটার প্রভাব পড়ে খেলোয়াড়দের স্ট্যামিনার ওপর। মাত্র একমাস অনুশীলনে ভালো যে করা যাবে না তা বলার অবকাশ রাখে না। আমাদের দুজন শর্ট কর্নার স্পেশালিস্ট চয়ন ও আশরাফুল। তবে আধুনিক হকিতে পেনাল্টি কর্নার স্পেশালিস্ট থেকে ইনডাইরেক্টভাবে গোল বের করতেই সুবিধা বেশি। অনুশীলন কম হলে টেকনিকের অভ্যাসও মাঠে কম হবে। বাছাইপর্বে প্রতিদ্বন্দ্বী হংকং, থাইল্যান্ড, আফগানিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং ওমান, এদের জন্য আমাদের ‘বি’ দল গেলেও একই রেজাল্ট হতো। বরং আমাদের জাতীয় দলকে এক মাসের জন্য চীন বা কোরিয়াতে পাঠালে এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতি ভাল হতো। বাছাইপর্ব খেলতে ওমানে ‘বি’ দল পাঠালে দেশে নতুন একদল তাজা ও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় পেত। আমাদের খেলোয়াড়দের স্কিলের অভাব নেই। তবে মাঠে খেলা না থাকায় স্ট্যামিনা আর স্পিড কমে গেছে। রাসেল মাহমুদ জিমি প্রায় পুরো খেলাতেই ফ্লপ ছিলেন।

ফাইনালের আগে মোট ৩৮ গোল করে বাংলাদেশ। কিন্তু আসল সময়েই ওমানের কাছে ২-০ গোলে পরাজয় দুঃখজনক। যে ফল ওমানে হয়েছে তার জন্য হতাশ না হয়ে গেমসের জন্য একজন ভালো কোচ খুবই জরুরি। পাকিস্তান, ভারত থেকে কোচ না এনে মালয়েশিয়া বা কোরিয়া থেকে কোচ আনার পক্ষে আমি। আব্দুস সাদেক ভাই মালয়েশিয়ার গোপীনাথ কৃষ্ণ মূর্তির কথা বলেছেন কোচ হিসেবে। এখনই টিম ম্যানেজার এবং চিফ দ্য মিশন চূড়ান্ত করা উচিত। তারা যেন দলের অনুশীলনে কঠোর হতে পারেন এবং জবাবদিহি করতে পারেন। আমাদের হকি খেলোয়াড়রা এশিয়া মানের। অভাব হলো প্রস্তুতির ঘাটতি। অনুশীলনের কোনো বিকল্প নেই। এশিয়ান গেমসের প্রস্তুতিতে প্রিমিয়ার লিগ শুরু করা একটা ভালো পদক্ষেপ। খেলোয়াড়রা যত মাঠে থাকবেন, তত দক্ষতা বাড়বে তাদের। হকি বারবার হতাশ করছে। দেশবাসী এবার হতাশা থেকে বেরিয়ে উজ্জ্বল হকি দেখতে চায়।

মেজর (অব.) চাকলাদার, সাবেক হকি খেলোয়ার

সর্বশেষ খবর