সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

এক ম্যাচ নিষিদ্ধ স্মিথ, সরে দাঁড়ালেন ওয়ার্নার

বল টেম্পারিং নিয়ে তোলপাড়

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এক ম্যাচ নিষিদ্ধ স্মিথ, সরে দাঁড়ালেন ওয়ার্নার

স্মিথ ও ওয়ার্নার

আশির দশকে ‘টু ডব্লিউ’ ওয়াসিম আকরাম ও ওয়াকার ইউনুসের সুইংয়ে কুপোকাত হচ্ছিলেন বিশ্বের তাবৎ ব্যাটসম্যান। বোকার মতো আউট হচ্ছিলেন ব্যাটসম্যানরা। তখনই দুই ডব্লিউ’র বোলিং নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ আনেন তাদের বিরুদ্ধে। সেই প্রথম। এরপর সময়ের চোরাস্রোতে বল টেম্পারিং পরিণত হয় শিল্পে। নানা দেশের ক্রিকেটাররা নানাভাবে বল টেম্পারিং করতে থাকেন। কখনো কখনো দোষী সাব্যস্ত হয়ে নিষিদ্ধ হয়েছেন। কখনো আবার পার পেয়েছেন। কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিং করে এবার নিষিদ্ধ হলেন অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। নিষিদ্ধ হয়েছেন এক টেস্টের জন্য। তার সঙ্গী ক্যামেরন ব্যানক্রাফট নিষিদ্ধ না হলেও ম্যাচ ফি’র ৭৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে তাকে এবং একই সঙ্গে ৩ ডিমেরিট পয়েন্টও পেয়েছেন তিনি। শুধু নিষেধাজ্ঞাতেই থেমে থাকেনি, অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে স্মিথকে সরিয়ে দিতে নির্দেশ দেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ওয়ার্নার টার্নবুল। অবশ্য স্মিথ ও সহ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ স্বীকার করে টেস্টের মাঝপথেই সরে দাঁড়ান দায়িত্ব থেকে। তার জায়গায় দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উইকেটরক্ষক টিম পেইন।

চার টেস্টের প্রথম দুটিতে জয় পায় অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। চলছে তৃতীয় টেস্ট। তৃতীয় দিনের মধ্যাহ্ন বিরতি পর্যন্ত ১০০ রানে পিছিয়ে ছিল সফরকারীরা। বলে কোনোরকম সুইং পাচ্ছিলেন না অসি পেসাররা। তাই অনেকটা বাধ্য হয়ে অসি অধিনায়ক স্মিথ তার সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন বল টেম্পারিংয়ের। দায়িত্ব দেন মাত্র ৮ টেস্ট খেলা ব্যানক্রাফটকে। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী হলুদ রঙের কিছু টেপ বল টেম্পারিংয়ে ব্যবহার করা হয়। অধিনায়কের নির্দেশে এই হলুদ টেপে মাঠের ধুলোবালু মাখিয়ে সেটা দিয়ে বল ঘষার পরিকল্পনা ধরা পড়ে যায় চা বিরতির সময় টেলিভিশন ক্যামেরায়।  দেখা যায়, ব্যানক্রফট পকেট থেকে সেই হলুদ টেপ বের করে তা দিয়ে বল ঘষছেন। একটা পর্যায়ে সেই হলুদ টেপ পকেটে রাখার দৃশ্যও ধরা পড়ে। থার্ড আম্পায়ার ইয়ান গোল্ড লাউঞ্জে বসে সেই ফুটেজ দেখে মাঠের আম্পায়ারদের নির্দেশ দেন ব্যানক্রফটকে ধরার। অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যান অবশ্য আম্পায়ারদের চোখে সে সময়ের জন্য ধুলো দিয়েছিলেন। পরে বাঁচতে পারেননি। যদিও দিন শেষে স্মিথ জানিয়েছিলেন, তিনি নেতৃত্ব ছাড়বেন না। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টার্নবুল যখন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ) নির্দেশ দেন স্মিথকে সরিয়ে দেওয়ার, তখন আর কিছু করার ছিল না তার। গতকাল ম্যাচের মাঝপথেই নেতৃত্ব ছেড়ে দেন স্মিথ। তার সঙ্গে সহ অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ান ওয়ার্নারও। বল টেম্পারিংয়ের বিষয় স্বীকার করে স্মিথ বলেন, ‘কিছু বাড়তি সুবিধা নিতেই তিনি ও তার দলের সিনিয়র ক্রিকেটাররা এমনটা করার সিদ্ধান্ত নেন। দলের কোচরা জানতেন না।’

স্মিথের আগে প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাপ ডু প্লেসি ও ইংলিশ অধিনায়ক আথারটনও বল টেম্পারিং করে জরিমানা গুনেছেন। দুজনেই করেছেন দলের স্বার্থে। অসি অধিনায়ক স্মিথও করেছেন দলের স্বার্থে। কিন্তু ক্রিকেটের স্পিরিটের সঙ্গে যায় না বলেই এতো আলোচনা। 

সর্বশেষ খবর