রবিবার, ২০ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুকন্যা পিতার মতোই মহান

বাংলাদেশ প্রতিদিনের খবর পড়ে সাঁতারু মোশাররফকে গণভবনে ডেকে নিলেন প্রধানমন্ত্রী

রফিকুল ইসলাম রনি

বঙ্গবন্ধুকন্যা পিতার মতোই মহান

গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কিংবদন্তি সাঁতারু মো. মোশাররফ হোসেন খান

১৬ মে। বাংলাদেশ প্রতিদিনের খেলার পাতার প্রধান শিরোনাম ‘কী আর বলব সব তো পুড়ে ছাই’। এটি কিংবদন্তি সাঁতারু মোশাররফ হোসেন খানের সাক্ষাৎকারের শিরোনাম। এ সাক্ষাৎকারে তুলে ধরা হয়েছে তার জীবনের গল্প। দেশের জন্য মোশাররফের অর্জন এবং মেডেল, সার্টিফিকেট পুড়িয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তাকে দেশছাড়া করার মর্মান্তিক ঘটনাপ্রবাহ উঠে এসেছে এ সাক্ষাৎকারে। রোজকার মতো বাংলাদেশ প্রতিদিন পড়ার সময় সাঁতারু মোশাররফ হোসেনের এ সাক্ষাৎকারভিত্তিক সংবাদে চোখ আটকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। প্রধানমন্ত্রী দেশের একসময়ের কৃতী সাঁতারু মোশাররফকে গণভবনে নিয়ে যেতে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন।

অতঃপর গতকাল কিংবদন্তি সাঁতারু মোশাররফ হোসেনকে গণভবনে ডেকে নিয়ে কথা বলেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুপুরের দিকে গণভবনে যান মোশাররফ হোসেন খান। প্রধানমন্ত্রী সাক্ষাত্দানের সময় এই কৃতী ক্রীড়াবিদের দীর্ঘ সাঁতারু জীবনের নানা স্মৃতি চারণামূলক কথা শোনেন তার কাছ থেকে। প্রথম বাঙালি খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তার দীর্ঘ পরবাসের কারণ জানতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন রাখেন, এতদিন দেশে আসোনি কেন? জবাবে মোশাররফ বলেন, আপা আমি দেশে থেকেই সাঁতারের জন্য কিছু একটা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছিল। তাই এতদিন আসিনি।

দীর্ঘ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপকালে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন মোশাররফ হোসেন। গণভবন থেকে বের হয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা একটুও বদলাননি। ঠিক আগের মতোই আছেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও ঠিক এমনই ছিলেন। ঠিক তার কন্যাও পিতার মতোই মহান। দেশের প্রধানমন্ত্রী আমার মতো একজন মানুষকে এত সময় দেবেন— ভাবতেই পারিনি। দোয়া করি আল্লাহ যেন তাকে দীর্ঘজীবী করেন। দেশ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় আরও সুযোগ যেন তিনি পান। তার মতো মানুষের নেতৃত্ব বাংলাদেশের জন্য প্রয়োজন আছে।

মোশাররফ বলেন, আলাপচারিতার এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোন পত্রিকায় যেন তোমার খবরটি পেলাম?’ আমি বললাম, আপা ‘বাংলাদেশ প্রতিদিন’। প্রধানমন্ত্রী হ্যাঁ সূচক উত্তর জানিয়ে বলেন, ‘পত্রিকাটির প্রতিটি পাতাই আমি পড়ি। পত্রিকা পড়েই তোমাকে নিয়ে আসতে বলি।’

১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের চার ইভেন্টে সোনা জয় এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত কমপক্ষে চারটি করে ইভেন্টে সোনা, সব মিলিয়ে ৯৬টি সোনা ও ৬৪ বার জাতীয় রেকর্ড গড়ার কারিগর সাঁতারু মোশাররফ হোসেন খান। তিনি বলেন, ২০০২ সালে দেশ ছাড়তে বাধ্য হই। এরপর দীর্ঘদিন দেশে আসিনি। আগে বিদেশে নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিতে লজ্জা লাগত। বঙ্গবন্ধুকন্যা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে নতুন করে পরিচয় দাঁড় করিয়েছেন। এখন আমরা বুক ফুলিয়ে নিজেদের পরিচয় দিতে পারি। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশে আজকে খেলাধুলায় ব্যাপক সাফল্য এসেছে।

সর্বশেষ খবর