সোমবার, ২৫ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা
আসলামের কলাম

এ যেন লাইফ সাপোর্ট থেকে বেঁচে ওঠা

এ যেন লাইফ সাপোর্ট থেকে বেঁচে ওঠা

বাংলাদেশে জার্মানিরও সাপোর্টার আছে। তবে আর্জেন্টিনা বা ব্রাজিলের ধারের কাছেও না। তবে জার্মানির যারা বিরোধিতা করে তারাও মনে হয় চেয়েছিলেন শনিবার জার্মানরা জিতুক। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিলে বিশ্বকাপের আকর্ষণ কমে যাবে। আমি বলব লাইফ সার্পোটে থেকেও জার্মান নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে। রক্ষণভাগের ভুলে প্রথমার্ধেই তারা গোল হজম করে বসে। এরপর যে পরিকল্পনাহীন খেলা খেলছিল তাতে মনে হচ্ছিল সুইডেন জিতে যাবে। টানা দুই ম্যাচ হেরে জার্মানরা গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেবে এর চেয়ে বড় ট্রাজেডি আর কি হতে পারে। দল যখন পিছিয়ে ছিল কোচ জোয়াকিম লোর চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল যে কোনো সময় কেঁদে ফেলবেন।

১৯৩৮ সালে জার্মানিরা গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছিল। অর্থাৎ আশি বছর পর সেই শঙ্কা জেগে উঠেছিল। সুইডেনকে হারালেও এখনো বাদ পড়ার শঙ্কা আছে জার্মানদের। শেষ ম্যাচে যদি তারা দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে হেরে যায়। আর মেক্সিকো যদি সুইডেনের সঙ্গে ড্র করে তাহলেই বিদায়।

তবে আমার মনে হয় দক্ষিণ কোরিয়াকে হারাতে তাদের বেগ পেতে হবে না। ফুটবলে যে কোনো অঘটন ঘটতেই পারে। কিন্তু সুইডেনের বিপক্ষে জয়ের পর নতুন শক্তির টনিক সঞ্চার করেছে। মেক্সিকো হারলে আর জার্মানি জিতলে তখন গ্রুপে তিন দলেরই ছয় পয়েন্ট হবে। এই ক্ষেত্রে গোল ব্যবধানে গুরুত্ব অনেক। নিরাপদ জায়গায় থাকতে হলে কোরিয়ার বিপক্ষে জার্মানিকে বড় ব্যবধানে জিততেই হবে।

ফুটবল ইতিহাসে জার্মানির ডিফেন্স লাইন বরাবরই শক্তিশালী। এবার কেন জানি নড়বড়ে মনে হচ্ছে। মেক্সিকো ও সুইডেনের কাছে গোল খাওয়ার জন্য আমি রক্ষণভাগকেই দায়ী করব। সুইডেনের তোইভোলেন যে গোলটি করেন তা টনি ক্রোস অনায়াসে ক্লিয়ার করতে পারতেন। যাক ভাগ্য ভালো দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র চার মিনিটের মাথায় জার্মানি সমতা আনতে পেরেছিল। মার্কো রয়েস বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে জালে বল পাঠান। এখানেও সুইডিশ ডিফেন্ডারদের দায়ী করব। গোল পাওয়ার পর জার্মানিকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি।

৮১ মিনিটে বোয়াটেং লাল কার্ড পাওয়ায় জার্মানরা ১০ জনের দলে পরিণত হয়। সুযোগটা কাজে লাগাতে পারেনি সুইডেন। জোয়াকিম লো কত উঁচুমানের কোচ তা তিনি এই ম্যাচে প্রমাণ করেছেন। তিনি সুযোগ বুঝে দলের খেলোয়াড়দের পরিবর্তন করেন। এতে খেলার গতিও বেড়ে যায়। ইনজুরি টাইমে ফ্রি কিক থেকে টনি ক্রোস যে গোলটি করেন তা আমি বিশ্বকাপের অন্যতম সেরা গোলই বলব।

দেখেন একজন খলনায়ক সামান্য ব্যবধানের মধ্যে কিভাবে নায়ক হয়ে যান তা আমরা দেখলাম ম্যাচে। ম্যাচ যদি হারত তাহলে টনি ক্রোস হয়ে যেতেন ম্যাচের খলনায়ক। বিজয়সূচক গোলটি দিয়ে তিনিই নায়ক বলে গেলেন।

সর্বশেষ খবর