নীল নয়না মাশা ধবধবে বিয়ের গাউন পড়েছে। মাথায় সুন্দর ফুল গুঁজেছে। হাতে সাদা আর নীল ফুল। আলেক্সান্ডারের গায়ে জড়ানো গাড় নীল রঙা কমপ্লিট স্যুট। সদ্যই বিয়ে করেছেন দুজন। বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে এসেছেন পিটার দি গ্রেটের তৈরি করা ‘পিটারহফ’ প্যালেসে। ছবি তুলছেন নানান ভঙ্গিতে। কেউ পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে চাইলে আবদার মেটাচ্ছেন খুশিমনে।
পিটারহফ এখন আর কোনো প্যালেস নয়। এখানে আর কোনো রাজা বাস করেন না। রাশিয়ান ইতিহাসের একটি অধ্যায় হিসেবে পিটারহফ দাঁড়িয়ে আছে বিরাট এলাকাজুড়ে। সেন্ট পিটার্সবার্গের ছোট্ট উপশহর পিটারহফ। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য তালিকায় স্থান পাওয়া এই প্যালেস থেকেই দুর্দান্ত প্রতাপে শাসন করতেন পিটার দি গ্রেট। রাশিয়ার সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত সেন্ট পিটার্সবার্গের নানা স্থানে এখনো তার সাক্ষী রয়ে গেছে। মেট্রো স্টেশনগুলোতে দেখা যায় পিটার দি গ্রেটের ম্যুরাল। শহরের নামটাই তো তার নামে। প্রতিষ্ঠাতা যে তিনিই। ৩০০ বছর আগের প্রতিষ্ঠিত এ রাজপ্রাসাদটি এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে কালের সাক্ষী হয়ে। বিশ্বের অন্যতম আকর্ষণীয় এই শহরে আসা পর্যটকদের পছন্দের এক নম্বরে থাকে মনোমুগ্ধকর পিটারহফ।
রাস্তার ঠিক পাশেই মূল ফটক। এখান থেকে সোজা তাকালেই দেখা যায় বিরাট রাজ প্রাসাদ। দৃষ্টিপথে দেখা যায় বেশ কয়েকটা ফোয়ারা। সেগুলোতে নানান মূর্তি স্থাপন করা। কোথাও বা সৈনিকের। কোথাও বা রাজন্যবর্গের। তারপর মূল ভবনে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে দৃষ্টিনন্দন নানান স্থাপনা। প্রাসাদ চত্বরে অনেকগুলো ভবন। বেশিরভাগ ভবনেরই আছে সোনালি রঙের গম্বুজ। দেখলে মনে হবে যেন সোনায় মোড়ানো। এছাড়াও আছে লেক আর বিরাট উদ্যান। সেখানে নানা জাতের ফুল আর ফলের গাছ।বিশ্বকাপ উপলক্ষে নতুন রূপে সেজেছে পিটারহফ। চারপাশে ছড়ানো ছিটানো আছে প্রচুর ফুটবল আকৃতির ফুলের টব। দেখলে মনে হয়, যেন মেসি-নেইমারদের জন্য তৈরি করা ‘টেল স্টার ১৮’ ফুটবল। পিটারহফের রূপ যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে দর্শকও। সুদূর ল্যাটিন আমেরিকা থেকে রাশিয়ায় বিশ্বকাপ দেখতে আসার সমর্থকরা গাড়ি ভাড়া করে দল বেঁধে আসছেন পিটারহফের সৌন্দর্য দেখতে।