বুধবার, ১১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

সেমিতে নির্ভার ক্রোয়েশিয়া

ফিফা খুব তাড়াহুড়া করেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করল লুঝনিকি স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সেরই এক ছোট্ট ট্রেনিং গ্রাউন্ডের কনফারেন্স কক্ষে। ক্রোয়েশিয়ার সেই সংবাদ সম্মেলনে আসবেন মারিও মানজুকিচ। বর্তমান ফুটবল দুনিয়ার অন্যতম সেরা ফুটবলার। বায়ার্ন মিউনিখের জার্সিতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, বুন্দেসলিগাসহ অন্যান্য শিরোপা জিতে মানজুকিচ তার নামের প্রসার ঘটিয়েছেন ফুটবল দুনিয়াজুড়ে। তার নাম শুনেই ফিফা ভলান্টিয়ারদের সহায়তায় অসংখ্য সাংবাদিক ছুটল ছোট্ট সেই ট্রেনিং গ্রাউন্ডের দিকে। কনফারেন্স কক্ষটা আরও ছোট্ট। বেশ কয়েকটা গাড়িতে করে আনা সাংবাদিকদের স্থান দিতে পারল না ফিফা। অগত্যা দাঁড়িয়েই মানজুকিচের সংবাদ সম্মেলন করতে হলো। মানজুকিচ এলেন। সাংবাদিকদের ভিড় ঠেলে গায়ে গা ঘেঁষে পৌঁছলেন মঞ্চে। নানান প্রশ্নের উত্তর দিতে লাগলেন। মানজুকিচ খুব লাজুক প্রকৃতির। মাঠে তাকে সাড়ে ছয় ফুট উচ্চতার ভয়ঙ্কর দানব বলে মনে হলেও বাস্তবে পুরোপুরিই ভিন্ন। নিজের প্রশংসাটা নিতে পারেন না। প্রশংসা শুনলে মুখ লুকাতে চান যেন! প্রশ্নের উত্তরে উত্তরে অনেক কথা বললেন তিনি। সবই ক্রোয়েশিয়ান ভাষায়। তবে সঙ্গে অনুবাদক আছেন। তিনি মানজুকিচের বক্তব্যটা অনুবাদ করে দেন সঙ্গে সঙ্গেই। অনুবাদ থেকে উদ্ধার করা গেল, মানজুকিচরা চান বিশ্বকাপ জিতে ইতিহাস গড়তে। এর আগেই ক্রোয়েশিয়া সেমিফাইনাল খেলেছে। শেষ চারে খেলাটা তাদের জন্য নতুন কিছু নয়। কিন্তু ফাইনাল! ক্রোয়েশিয়া ফাইনাল খেলতে পারে বলেই বিশ্বাস করেন মানজুকিচ। তিনি বলেন, ‘প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। তবে আমরা ভীত নই। বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার জন্য সেরা ফুটবলটাই খেলব।’

সমর্থকদের উল্লাস করতে দেখে মুগ্ধ মারিও মানজুকিচ দারুণ একটা কাজ করেছেন। তিনি তার গ্রামের সমর্থকদের জন্য ৩ হাজার ৪০০ ইউরোর (প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা) মদ কিনে দিয়েছেন। বলেছেন, ‘সমর্থকরা আমাদের প্রেরণা। তারা আমাদেরকে এরই মধ্যে অনেক ভিডিও পাঠিয়েছে। ছবি পাঠিয়েছে।’ ক্রোয়েশিয়ার সমর্থকদের এই উচ্ছ্বাস কী আজও থাকবে? নাকি সেমিফাইনালে ইংল্যান্ড বিজয় পতাকা উড়িয়ে শেষ করে দিবে ক্রোটদের স্বপ্ন? এই প্রশ্নটাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ফুটবল ভক্তদের মনে। মারিও মানজুকিচ অবশ্য নিজেদেরকেই সেরা বলে গেলেন পরোক্ষভাবে। তবে ইংল্যান্ডের সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেননি তিনি। ‘বিশ্বকাপের আগে আমি যে কয়টা দলকে ফেবারিট বলে ভেবেছিলাম তার মধ্যে ইংল্যান্ডের নাম ছিল উপরের দিকে। তারা সব বাধা পেছনে ফেলে সেমিফাইনালে উঠে এসেছে। এটা তাদের প্রাপ্য।’ সেমিফাইনালে উঠে আসাটা ক্রোয়েশিয়ারও প্রাপ্য ছিল বলে মন্তব্য করলেন মারিও মানজুকিচ। ইংল্যান্ডের জন্য যারা সেমিফাইনালকে খুব সহজ বলে মনে করছেন, তাদের জন্য মানজুকিচ একটা সতর্কবার্তা দিয়ে রাখলেন। ‘ফাইনাল খেলাটা আমাদের স্বপ্ন। দলের সবার মধ্যে একই চিন্তা। একই পথের পথিক আমরা। নেতা হিসেবে লুকা মডরিচ দুর্দান্ত। কোচ হিসেবে মার্টিনেজও অসাধারণ।’ মানজুকিচ কিন্তু পরোক্ষভাবে একটা হুমকি দিয়ে রাখলেন ইংল্যান্ডকে। আর ক্রোয়েশিয়ার অনুশীলন দেখেও মনে হয়েছে, এই দলটা যেন জেতার জন্যই বিশ্বকাপে এসেছে! পরাজয় নামক শব্দটা তারা অনেক আগেই সাগরে ডুবিয়েছে!

সর্বশেষ খবর