বুধবার, ১১ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

৫২ বছরের অবসান ঘটবে কি?

আসিফ ইকবাল

৫২ বছরের অবসান ঘটবে কি?

শুরু হয়ে গেছে কাউন্ট ডাউন। লন্ডন, ম্যানচেস্টার, লিভারপুলসহ ইংল্যান্ডের শহর, শহরতলীগুলোতে ছোট, বড়, বৃদ্ধ সবাই ক্ষণ গণনা করছেন। স্নায়ুক্ষয়ী অপেক্ষায় সবাই সোনালি ইতিহাসের সাক্ষী হতে। ইতিহাসের সোনালি ফ্রেমে বন্দী হতে অপেক্ষার যেন শেষ হচ্ছে না কারও। তর সইছে না উৎসব করার। অপেক্ষায় সবাই আরও একটি রূপকথা লেখার। নতুন করে রূপকথা লিখতে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে আজ জিততেই হবে গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ডকে। জিতলেই ববিমুর, ববি চার্লটন, জিওফ হার্স্ট, গর্ডন ব্যাংকসদের দেখানো পথে হাঁটতে শুরু করবেন হ্যারি কেইন, লিনগার্ড, ডেলে আলিরা। একই সঙ্গে ৫২ বছরের ব্যর্থতার বন্ধ্যত্ব ঘুচিয়ে নতুন ইতিহাস লেখার পটভূমি তৈরি করবেন কেইন ও তার সঙ্গীরা। নাক উঁচু স্বভাবের ইংলিশরা অংশই নেয়নি ১৯৩০, ১৯৩৪ ও ১৯৩৮ সালের বিশ্বকাপে। ১৯৫০ সাল থেকে অংশ নেওয়া শুরু এবং প্রথম আসরেই হেরে যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। মার্কিনীদের কাছে ১-০ গোলের হারকে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন হিসেবে ধরা হয়। পরের আসরে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। ১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক হয়েই ফাইনালে জায়গা নেয় ইংল্যান্ড। সেমিফাইনালে ববি চার্লটনের জোড়া গোলে হারায় ইউসেবিওর পর্তুগালকে। আজ আরেক ইউরোপীয় প্রতিনিধি ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নামছেন কেইনরা। ৫২ বছর আগে বিশ্বকাপে ৪ গোল করেছিলেন ৯ নম্বর জার্সিধারী চার্লটন। এবার আরেক ৯ নম্বর জার্সিধারী কেইন এখন পর্যন্ত করেছেন ৬ গোল। কেইনের সোনালি বুটের ঝলকে স্বপ্ন দেখছে ইংল্যান্ড। ৫২ বছর আগে ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে ৪-২ গোলে জেতা ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছিলেন জিওফ হার্স্ট। বিশ্বকাপের ৮৮ বছরের ইতিহাসে ওটাই একমাত্র হ্যাটট্রিক। ৬৬-এর বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ফাইনালে ওঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল ২৮ বছর আগে। ১৯৯০ সালে সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে যায় টাইব্রেকারে। এবার তৃতীয়বার ফাইনাল খেলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং সেটাকে কাজে লাগাতে মরিয়া সাউথগেটের ইংল্যান্ড। মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়ামে লুকা মডরিচ, রাকিতিচ, মানজুকিচদের বিপক্ষে জিতে ইতিহাসের পথে হাঁটতে চায় ইংল্যান্ড। এমন সুযোগ হেলায় যেন না হারায় সেজন্য শিষ্যদের উদ্দীপ্ত করছেন, অনুপ্রাণিত করছেন  কোচ সাউথগেট, ‘১৯৬৬ সালে বিশ্বকাপ জেতা সেই ইংল্যান্ড দলকে ছোঁয়ার কাছাকাছি চলে এসেছি আমরা। সেসব লেজেন্ডারি ফুটবলাররা কিভাবে সন্মানিত হয়েছিলেন, আমরা জানি। কিন্তু এবার চ্যাম্পিয়ন হলে আগের চেয়েও বেশি পাগলামি হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে ফুটবল দুনিয়াটা এখন অনেক বিশাল।’ শুধু তাই নয়, কেইনদের উৎসাহিত করতে বলেছেন, ‘১৯৬৬ সালের বিশ্বজয়ীদের চেয়েও বড় হতে ঝাঁপিয়ে পড়ো তোমরা।’ তার এই মন্তব্য সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। থোড়াই কেয়ার  সাউথগেটের। ইংলিশ কোচের স্বপ্ন এখন বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা এবং শেষে বিশ্ব জয় করা। কোচের মতো সঙ্গীদের অনুপ্রাণিত করেছেন ২৬ বছর বয়সী অধিনায়ক হ্যারি কেইনও, ‘১৯৬৬ সালের সেই বিশ্বকাপ জয়ের মুহূর্তই এবার আমাদের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।’

স্যার আলফ র‌্যামসের ইংল্যান্ডের পাশে গ্যারি সাউথগেটের ইংল্যান্ডকে দাঁড়াতে সিঁড়ি ভাঙতে হবে দুটি। ক্রোয়েশিয়ার ম্যাচটি স্বপ্ন পূরণের সেই পথে আরেকটি সিঁড়ি!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর