শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা
আসলামের কলাম

সত্যিই অসাধারণ ক্রোয়েশিয়া

সত্যিই অসাধারণ ক্রোয়েশিয়া

বিশ্বকাপের ফাইনাল নিয়ে আগাম মন্তব্য করা ঠিক হবে না। ফ্রান্স ও ক্রোয়েশিয়া যোগ্য দুই দলই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ খেলবে। কে জিতবে বলাটা কঠিন। ক্রোয়েটরা যদি হেরেও যায় আমি বলব তারা বিশ্ব কাঁপিয়েই মিশন শেষ করবে। দেখেন মনে জেদ ও পরিকল্পনা থাকলে অসম্ভবকে সম্ভব করা যায় তা প্রমাণ করেছে ক্রোয়েশিয়া। বেশি দিনের কথা নয়, নতুন দেশ হিসেবে ১৯৯৮ সালে তাদের বিশ্বকাপে অভিষেক হয়। শুরুতেই বাজিমাত। অচেনা অজনা খেলোয়াড় নিয়ে ক্রোয়েটরা সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিল। তৃতীয় হয়ে তারা জানিয়ে দেয় ফুটবলে নতুন শক্তির উত্থান ঘটতে যাচ্ছে। ২০০২, ২০০৬ ও ২০১৪ সালে ও তারা চূড়ান্ত পর্বে উঠেছিল। সুবিধা করতে পারেনি। গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল। ১৯৯৮-২০১৮ ব্যবধান মাত্র বিশ বছর। কর্মকর্তাদের সততা, সুষ্ঠু পরিকল্পনা ও খেলোয়াড়দের দেশ প্রেমের কারণে ক্রোয়েটরা নিজেদের কতটা যে গুছিয়ে নিয়েছে তা প্রমাণ দিল রাশিয়া বিশ্বকাপে। অভিষেকের মাত্র বিশ বছরের মধ্যে ফাইনালে উঠে নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করল ক্রোয়েটরা। যোগ্যতা দেখিয়ে যখন এতদূর এগুতে পেরেছে বিশ্ব জয়ের সামর্থ্যও রাখে ক্রোয়েশিয়া। ৫২ বছর পর ইংল্যান্ড এবার বিশ্বজয়ের স্বপ্ন দেখছিল। সত্যি কথা বলতে কি তারণ্যনির্ভর দলটি খেলছিলও সেভাবে। অনেক দিন পর ইংল্যান্ড ফিরেছিল চেনা রূপে। কিন্তু সেমিফাইনালেই থেমে গেল তাদের অগ্রযাত্রা। সেমিফাইনাল এমনিতেই টেনশনের ম্যাচ। দুদলই স্নায়ু চাপে থাকে। এই অবস্থায় শুরুতেই যদি কেউ গোল পেয়ে যায় প্রতিপক্ষরা হতাশায় ভেঙে পড়ে। ম্যাচের পাঁচ মিনিটেই কিয়েরেন ট্রিপলার ফ্রি-কিকে গোল করে ইংল্যান্ডকে এগিয়ে রাখেন। এরপরও প্রাধান্য ছিল ইংলিশদের। তবে ভেঙে পড়েনি ক্রোয়েট ফুটবলাররা। ধীরে ধীরে তারা কৌশল ঠিক করে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ৬৫ মিনিট পর্যন্ত ব্যবধান একই ছিল। ক্রোয়েশিয়া আক্রমণ করছে। কিন্তু গোল পাচ্ছে না। এই অবস্থায় অনেকে ধরে নিয়েছিলেন ইংল্যান্ডই যাচ্ছে ফাইনালে। ৬৬ মিনিটেই পাল্টে যায় ম্যাচের চেহারা। সিমের ক্রসে ইভান পেরিসিচ সমতা ফেরান। অসাধারণ এক গোল। এই গোলের পরই ইংলিশরা এলোমেল হয়ে যায়। নির্ধারিত সময়েই জিতে যেতে পারত ক্রোয়েটরা। দুর্ভাগ্য বলতে হয় তাদের। ৭১ মিনিটে পেরিসিচ সহজ সুযোগ নষ্ট করেন। তরুণ হলেও ইংলিশদের ক্লান্ত শরীরই বলে দিচ্ছিল অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে তারা সুবিধা করতে পারবে না। হয়েছেও তাই। যে হ্যারি কেইন ৬ গোল করে গোল্ডেন বুটের দাবিদার। তাকে তো মাঠেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশ্য দুটো সুযোগ সে হাতছাড়া করেছে। অন্যদিকে লুকা মডরিচ গোল না পেলেও সারা মাঠে খেলেছেন। ১০৮ মিনিটে মারিও মানজুকিচ গোল করলে ক্রোয়েশিয়ার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায়। সত্যিই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অসাধারণ খেলে ফাইনালে জায়গা করে নিল ক্রোয়েশিয়া।

সর্বশেষ খবর