বুধবার, ১৮ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফুটবলে দুর্দিন

ক্রীড়া ডেস্ক

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ফুটবলে দুর্দিন

একবার নয়। টানা চার বার বিশ্বকাপ ফুটবলে ইউরোপরা শিরোপা জয় করল। ২০০৬ ইতালি, ২০১০ স্পেন, ২০১৪ জার্মানি, ২০১৮ ফ্রান্স। ল্যাটিনদের কোনো পাত্তাই নেই। চার বছরে ল্যাটিনদের মধ্যে আর্জেন্টিনা একবার ফাইনাল খেলে ২০১৪ সালে। বাকি তিন আসরে অল ইউরোপিয়ান ফাইনাল। এবার সেমিতেও দেখা মিলছে চার ইউরোপের। ব্রাজিল-বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া-ইংল্যান্ড। ইউরোপদের দাপটে ল্যাটিনদের বেহাল দশা। ব্রাজিল সর্বোচ্চ পাঁচ ও আর্জেন্টিনা দুবার বিশ্বকাপ জিতে। তবে ব্রাজিল শেষ চ্যাম্পিয়ন ২০০২ সালে। আর্জেন্টিনার তো আরও করুণ হাল। ১৯৮৬ সালের পর শিরোপা জেতাটা যেন তাদের স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ১৯৯০ ও ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠলেও রানার্সআপই ছিল তাদের বড় প্রাপ্তি। এবার বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা সেই মানের দল ছিল না। তবে লিওনেল মেসির মতো বিশ্বের সেরা ফুটবলার থাকায় সমর্থকদের প্রত্যাশা ছিল তাদের প্রিয় দল বিজয়ের হাসি হাসবে। প্রত্যাশা ও বাস্তবতা যে এক নয় আবেগে ভুলে গিয়েছিল আর্জেন্টাইন সমর্থকরা। দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে হিমশিম খেতে হয় দুবারের চ্যাম্পিয়নদের। নাইজেরিয়াকে হারিয়ে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে কোনো মতে শেষ  ষোলোতে জায়গা করে নেয়। এরপরই বিদায়। ফ্রান্সের কাছে হেরে মেসিদের দেশে ফিরে যেতে হয়। ব্রাজিল কিছুটা ব্যালেন্সড দল ছিল। ধীরে ধীরে নেইমারও জ্বলে উঠছিলেন। কিন্তু তারাও বেশি দূর এগুতে পারেনি। বেলজিয়ামের কাছে হেরে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়। দুদলের বিদায়ে বিশ্বকাপের উত্তাপটা ম্লান হয়ে যায় বাংলাদেশে। কেননা যতটা উন্মাদনা বা আগ্রহ তাতো ছিল আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলকে ঘিরেই। ল্যাটিনদের বেহাল দশায় বেশ চিন্তিত দুই কিংবদন্তি ফুটবলার ম্যারাডোনা ও জিকো। ম্যারাডোনা বলেন, এক বিশ্বকাপ নয় আমিতো সামনে আর্জেন্টিনার ফুটবলে অন্ধকার দেখছি। ভালোমানের খেলোয়াড় বের হচ্ছে না। ফুটবল কর্মকর্তাদের এনিয়ে মাথা ব্যথাও দেখছি না। পরিকল্পনা নেই বলে দেশের ফুটবল ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বিশ্ব জয় নয়, বিশ্ব ফুটবলে আর্জেন্টিনার নামটি কেউ মনে রাখবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বিপর্যয় ঠেকাতে এখনই মতবিরোধ ভুলে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার জিকো বলেন, অনেকে অনেক মন্তব্য করেছেন। আমার কিন্তু কখনো মনে হয়নি ব্রাজিল বিশ্বকাপ জিতবে। দেখেন এই মানের দল নিয়ে ১/২ টা ম্যাচ জেতা যায় কিন্তু চ্যাম্পিয়ন ভাবাটা বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়। জানিনা ব্রাজিল কর্তৃপক্ষ এ নিয়ে বিচলিত কিনা। আমি কিন্তু দেশের ফুটবল নিয়ে বড্ড দুশ্চিন্তায় আছি। যে অবস্থা দেখছি ইউরোপ থেকে ট্রফি বের করাটা অসম্ভবই বলা যায়— জিকো হতাশ হয়ে বলেন। বিশ্ব ফুটবল অনেক আগে থেকেই ইউরোপের দখলে চলে গেছে। লিগ বা প্রতি বছর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করে তারা ফুটবলকে অনেক দূর নিয়ে গেছে। ল্যাটিনদের যে কৌশলটা ছিল তাও শেষ হয়ে গেছে মেসি, নেইমারদের মানের খেলোয়াড় ইউরোপে খেলে। এ অবস্থায় সামনে আরও বড় বিপর্যয় ঘটবে ল্যাটিনদের জন্য।

সর্বশেষ খবর