সোমবার, ২৩ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিশ্বকাপের ভেন্যু এখন ক্লাবগুলোর

রাশেদুর রহমান

বিশ্বকাপের ভেন্যু এখন ক্লাবগুলোর

শুধু মস্কোর লুঝনিকি স্টেডিয়াম ক্লাবগুলোকে বরাদ্দ দেয়নি রাশিয়ার সরকার —ফাইলফটো

দীর্ঘ চার বছর অপেক্ষায় থাকার পর শেষ হয়ে গেল বিশ্বকাপের আসর। আরও চারটি বছরের জন্য ফুটবল ফিরে গেল দেশে দেশে। রাশিয়া বিশ্বকাপে ১১টি শহরের ১২টি স্টেডিয়াম আয়োজন করেছিল বিশ্বকাপ। ৩২ দলের ফুটবল যুদ্ধ দেখতে এসেছিল লাখ লাখ দর্শক। বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর বিশ্বকাপের বিরাট আয়োজনের কী হলো! কোটি কোটি ডলার খরচ করে নতুন করে তৈরি করা স্টেডিয়ামগুলো কী এমনিতেই পড়ে থাকবে! নাকি নতুন কোনো কাজে লাগবে এই স্টেডিয়ামগুলো!

বিশ্বকাপ চলাকালীন ফিফা সভাপতি জিয়ানি ইনফ্যান্টিনো বলেছিলেন, রাশিয়া বিশাল এই আয়োজন বিশ্বকাপের পরও কাজে লাগবে। অবকাঠামোগত এই উন্নয়ন থেকে সুবিধা পাবে রাশিয়ার ক্লাবগুলো। এরই মধ্যে অনেক ক্লাবই বুঝে নিয়েছে বিশ্বকাপের স্টেডিয়াম। কে কোনো স্টেডিয়াম পেল!

রাশিয়া বিশ্বকাপের সবচেয়ে দামি স্টেডিয়াম ছিল সেন্ট পিটার্সবার্গ স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামকে স্থানীয়রা ক্রেস্টোভস্কি স্টেডিয়াম কিংবা জেনিত অ্যারিনা বলেও ডাকে। ১.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নির্মিত এই স্টেডিয়ামটি পৃথিবীর সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্টেডিয়ামগুলোর একটি। সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের অন্যতম সেরা ক্লাব জেনিতকে এই ক্লাব হস্তান্তর করেছে রাশান কর্তৃপক্ষ। বিশ্বকাপের আগেই বিষয়টি নির্ধারিত হয়েছিল। বিশ্বকাপের পর জেনিতের হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হবে এই স্টেডিয়াম।

স্পার্টাক স্টেডিয়ামকে রাশানরা অতক্রিতি অ্যারিনা বলেও ডাকে। বিশ্বকাপের আগে নতুন করে এই স্টেডিয়াম তৈরি করা হয়। ব্যয় হয়েছিল ৪৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিশ্বকাপের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্টেডিয়াম হিসেবে ব্যবহৃত এই স্টেডিয়ামটি এখন থেকে এফসি স্পার্টাক মস্কো ক্লাব নিজেদের হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করবে। সোচির দৃষ্টিনন্দন ফিস্ট অলিম্পিক স্টেডিয়ামটিও আর খালি পড়ে থাকবে না। ৭৭৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে নির্মিত এই স্টেডিয়ামটি এখন থেকে ব্যবহার করবে স্থানীয় ক্লাব পিএফসি সোচি। এই ক্লাবটি রাশিয়ার দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লিগে খেলে। পিএফসি সোচি পুনর্গঠিত হয়েছে মাত্র ৪৩ দিন আগে (৬ জুন, ২০১৮)। নতুন করে গঠিত এই ক্লাব নিয়ে অনেক আশাবাদী রাশানরা। রুস্টভ অ্যারিনা এখন থেকে হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করবে স্থানীয় ক্লাব এফসি রুস্টভ। কাজান অ্যারিনায় বিশ্বকাপের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হয়েছে। এখান থেকেই বিদায় নিয়েছে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। দৃষ্টিনন্দন এই স্টেডিয়ামটি এখন থেকে হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করবে স্থানীয় ক্লাব এফসি রুবিন কাজান। রাশিয়ায় বেশ নামকরা ক্লাব রুবিন কাজান। প্রায়ই তারা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টিকিট পায়। সাইবেরিয়ান অঞ্চল একাটেরিনবার্গের সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামটিও নতুন করে তৈরি করা হয়েছিল বিশ্বকাপের জন্য। ১৯৫৭ সালের মূল স্টেডিয়ামটি ভেঙে নতুন করে গড়ার পর বিশ্বকাপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে এই মাঠে। এবার এই মাঠটির মালিকানা ফিরে পেয়েছে এফসি উরাল একাটেরিনবার্গ। কালিনিনগ্রাদ স্টেডিয়ামটি এখন থেকে ব্যবহার করবে এফসি বাল্টিকা কালিনিনগ্রাদ। সারানস্কের মরদভিয়া অ্যারিনা তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই স্টেডিয়ামটি এখন থেকে হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করবে এফসি মরদভিয়া সারানস্ক। ক্লাবটি রাশিয়ায় দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল লিগে খেলে। বিশ্বকাপের জন্য সামারার কসমস অ্যারিনা তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৩২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই স্টেডিয়াম এখন থেকে হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করবে এফসি ক্রিলিয়া সভেতভ সামারা। নিঝনি নভগরদ স্টেডিয়ামটি হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে স্থানীয় ক্লাব এফসি নিঝনি নভগরদ। ভলগোগ্রাদ অ্যারিনা হোম গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহার করবে এফসি রোটর ভলগোগ্রাদ।

বিশ্বকাপের সব স্টেডিয়াম বিভিন্ন ক্লাবের মধ্যে বিতরণ করা হলেও বাকি রয়ে গেছে লুঝনিকি স্টেডিয়াম। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচ হয়েছে এখানে। লুঝনিকি স্টেডিয়াম আগে বিভিন্ন সময়ে সিএসকেএ মস্কো, স্পার্টাক মস্কো কিংবা টর্পেডো মস্কোর দখলে থাকলেও এখন এটা রাশিয়ার জাতীয় দলের হোম গ্রাউন্ড হিসেবেই ব্যবহৃত হবে।

সর্বশেষ খবর