রবিবার, ২৯ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

ঘরের মাঠে অগ্নিপরীক্ষা

সেপ্টেম্বরে ঢাকায় সাফ ফুটবল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ঘরের মাঠে অগ্নিপরীক্ষা

ফুটবল চাঙা করতে সাফ টুর্নামেন্টে শিরোপাটা জরুরি হয়ে পড়েছে বাংলাদেশের কাছে। ফেবারিট হওয়া সত্ত্বেও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে লাল-সবুজরা ট্রফি জিতেছে একবারই। ২০০৩ সালে ঘরের মাঠে শিরোপা জেতার পর রানার্স-আপ হলেও ট্রফি জেতা যেন বাংলাদেশের স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। গত তিন আসরে পারফরম্যান্স খুবই হতাশাজনক। সেমিফাইনালই খেলতে পারেনি। গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে ঢাকায় তৃতীয়বারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ ফুটবল হতে যাচ্ছে। অনেক অপেক্ষার পর সেপ্টেম্বরেই আসরের পর্দা ওঠার কথা।

আগে যাই হোক এবার প্রস্তুতির দিকে ভালোই গুরুত্ব দিচ্ছে বাফুফে। ইংলিশ জেমিডেকে নতুন কোচও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কাতারে কন্ডিশনিং ক্যাম্প ছাড়াও প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। আগে থাইল্যান্ড ও লাউসে ক্যাম্পের পাশাপাশি প্রস্তুতি ম্যাচও খেলে এসেছিল ফুটবলাররা। বর্তমানে দক্ষিণ কোরিয়া সফরে আছে তারা। এবার আসরে শক্তিশালী দেশ আফগানিস্তান নেই। এটা বাংলাদেশের জন্য বাড়তি সুবিধাই বলা যায়। তা ছাড়া ভারতের মিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে, ঢাকায় জাতীয় দলের পরিবর্তে ভারত বয়সভিত্তিক দল নিয়েই অনুশীলন করেছে। অনূর্ধ্ব ২৩ ও ১৭ ফুটবলারদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের কাছে স্বপ্ন হলেও ভারতের কাছে সাফ জেতাটা যেন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বাফুফে প্রতিশ্রুতির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও প্রতিবেশী ভারত ফুটবল উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

বাফুফে হবে হবে করে ফুটবলে এখনো ফ্রাঞ্চাইজি লিগ মাঠেই নামাতে পারেনি। অথচ ভারত প্রতি বছর ইন্ডিয়ান সুপার লিগ করে ফুটবলকে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলেছে। ইউরোপ, ল্যাটিন আমেরিকার ফুটবলার ছাড়াও দলগুলো বিখ্যাত কোচ বেছে নিচ্ছে। জিকোর মতো কিংবদন্তি ফুটবলারও ইন্ডিয়ান সুপার লিগের একটি দলের দায়িত্ব পালন করেছেন। আয়োজন সফল করতে এক আসরে দিয়েগো ম্যারাডোনাকে শুভেচ্ছ দূতও করা হয়েছিল।

গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ। সফল আয়োজন দেখে ফিফা সভাপতি ইনফ্যান্টিনো বলতে বাধ্য হয়েছেন, অদূর ভবিষ্যতে ভারত বিশ্বকাপ আয়োজনের সামর্থ্য রাখে। ক্রিকেটে ভারত বিশ্ব পরাশক্তি দল। বিশ্বকাপসহ সব ট্রফিই তারা জিতেছে। সেই তুলনায় ফুটবলে বড্ড পিছিয়ে। এখন তাই মান বাড়াতে তৃণমূল থেকে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যাতে আগামী ২০ বছরের মধ্যে ভারত বিশ্ব ফুটবলে শক্তিশালী দলে পরিণত হতে পারে।

ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নকেই তারা পরীক্ষা হিসেবে নিচ্ছে। অন্যান্য দেশে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা খেলবেন। ভারতের প্রয়োজন শিরোপা নয়, অপেক্ষাকৃত তরুণ ফুটবলারদের ঝালাই করে নেওয়া। ভালো খেললে ভালো, না হয় টুর্নামেন্ট দেখে তাদের ভুলত্রুটি শোধরানো হবে। আফগানিস্তান নেই। ভারতও যদি বয়সভিত্তিক দল পাঠায় তাহলে তো বাংলাদেশের পথটা অনেক সহজই হবে। এখানে বড় উদাহরণ হতে পারে শেষ দুটি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপই। ২০১৫ সালে মালয়েশিয়া, পরের বছর নেপাল ক্লাবভিত্তিক দল পাঠালেও বাংলাদেশ জাতীয় দল চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। সুতরাং ভারত তারুণ্যনির্ভর দল পাঠালেও বাংলাদেশের খুশি হওয়ার কারণ নেই। তা ছাড়া মালদ্বীপ ও নেপাল শক্তিশালী দল। পাকিস্তান অনেক দিন পর টুর্নামেন্টে ফিরলেও ব্রাজিলিয়ান কোচের মাধ্যমে তারাও প্রস্তুত হয়ে আসছে। যতই প্রস্তুতি নেওয়া হোক না কেন ঘরের মাঠে চ্যালেঞ্জে পড়তে হবে বাংলাদেশকে। শোনা যাচ্ছে, কোচ বাংলাদেশ দলে তরুণদেরইে প্রাধান্য দিচ্ছেন। তিনি তাদের নিয়ে আশাবাদিও প্রশ্ন উঠেছে, এরা চ্যালেঞ্জ জানাতে কতটা প্রস্তুত। কেননা লিগে দেখা গেছে, তরুণ হলেও প্রথমার্ধ যাওয়ার পরই দম হারিয়ে ফেলে। সেখানে সাফের মতো বড় টুর্নামেন্টে নিজেদের মেলে ধরতে পারবে কি?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর