বুধবার, ৮ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

কোথায় থাকবে জিমিদের অবস্থান

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কোথায় থাকবে জিমিদের অবস্থান

সত্তর, আশির দশকে ফুটবলের পেছন পেছন হেঁটেছে ক্রিকেট, হকিসহ অন্য খেলাগুলো। ফুটবল ছিল বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। জনপ্রিয়তায় ফুটবলের চেয়ে খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না হকি। আবদুস সাদেক, প্রতাপ শংকর হাজরা, সাব্বির ইউসুফ, ইব্রাহিম সাবের, ড্যানিয়েল, জুম্মন লুসাইদের স্টিকের জাদু মুগ্ধতা ছড়াত ক্রীড়াপ্রেমীদের মনে। খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত হতেন হাজারো দর্শক। উজ্জ্বল সম্ভাবনার হকি এখনো জনপ্রিয়। তবে মানের বিচারে ভারত, পাকিস্তান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, জাপানের পরেই অবস্থান। যদিও জিমি, চয়নরা খেলছেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন অপরাপর দেশগুলোর সঙ্গে। তারপরও ৬ নম্বরের ওপর কখনই ওঠেনি র‌্যাঙ্কিংয়ে। এশিয়ান গেমস শুরু ১৮ আগস্ট। জাকার্তা গেমসের হকি ডিসিপ্লিনে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ান কোচ গোপীনাথানের কোচিংয়ে এবারও টার্গেট ষষ্ঠ। ভারত, পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, কোরিয়া, জাপান ছাড়া ওমান ও চীন থাকায় সেটা কি সম্ভব?

বাংলাদেশের গ্রুপে স্বাগতিক ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও ওমান। গ্রুপের শীর্ষ দুই দল সেমিফাইনাল এবং লড়বে সোনা, রুপা ও তামার জন্য। বাকি দলগুলো খেলবে স্থান নির্ধারণী ম্যাচে। গেমসে সাফল্য পেতে মরিয়া জিমিরা। ভারত ও কোরিয়ায় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছেন। ঢাকায় এখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন মূল মঞ্চে নামার। মূল আসরে কতদূর পৌঁছাবে হকি দল? সে সম্পর্কে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি কোচ গোপীনাথান। শুধু সেরাটা খেলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন, ‘মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান খুবই শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। আমাদের টার্গেট তাদের বিপক্ষে ভালো খেলা। সত্যি বলতে আমাদের টার্গেট ওমানসহ র‌্যাঙ্কিংয়ের নিচের সারির দলগুলোর বিপক্ষে জয়।’ একসময় জাপান, চীন মূল প্রতিপক্ষ থাকলেও এখন জিমিদের লড়তে হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমানের বিপক্ষে। ওমানের বিপক্ষে জয়ই এখন মূল টার্গেট দলের।

১৯৭৮ সালের ব্যাংকক এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ প্রথম অংশ নেয়। সেবার হকিতে অংশ নিয়ে ষষ্ঠ হয়েছিল। এরপর হয় সপ্তম, না হয় অষ্টম। এভাবেই চলছে। ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও প্রথম জয় পেয়েছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। প্রথমবারই ষষ্ঠ হয়েছিল। ১৯৯৮ সালে ব্যাংকক গেমসে অংশ নেয়নি। ২০১৪ সালের ইনচন গেমস পর্যন্ত প্রতিটি আসরেই অংশ নিয়ে হকি দল এখন পর্যন্ত ৪১ ম্যাচে অংশ নিয়ে জিতেছে ১০টি। ড্র এক এবং হার ৩০টিতে। গেমসে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয় হংকংয়ের বিপক্ষে। ২০১০ সালে গুয়াংজু এশিয়াডে হংকংকে হারিয়েছিল ৭-৩ গোলে। এশিয়াডে এখন পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বড় জয় বাংলাদেশের। এ ছাড়া সিঙ্গাপুর ও চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে জয় আছে ৫-১ গোলে। ৫-৩ ও ৪-২ গোলে জয় আছে ওমানের বিপক্ষেও। একমাত্র ড্রটি ৪০ বছর আগে ১৯৭৮ সালে ব্যাংককে ২-২ গোলে থাইল্যান্ডের সঙ্গে। সবচেয়ে বড় হার পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭-০ গোলে। এ ছাড়া ১২-০, ১০-০ গোলে হারও আছে।

সর্বশেষ ইনচন এশিয়াডে বাংলাদেশের স্থান ছিল অষ্টম। গ্রুপ পর্বে একমাত্র জয়টি পেয়েছিল সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-১ গোলে। স্থান নির্ধারণী ম্যাচে হেরেছিল ওমানের কাছে ২-৩ গোলে। গেমসে সবচেয়ে বেশি পাঁচবার করে মুখোমুখি হয়েছে মালয়েশিয়া ও ওমানের বিপক্ষে। ওমানের বিপক্ষে ২ জয়ের বিপরীতে হার ৩টি। ১৭ গোল করে খেয়েছে ১৬টি। মালয়েশিয়া, জাপান, পাকিস্তান, ভারত ও কোরিয়ার বিপক্ষে কোনো জয় কিংবা ড্র নেই। চীনকে হারিয়েছে ১৯৯৪ হিরোশিমা এশিয়াডে ২-১ গোলে। হংকংয়ের বিপক্ষে জয়-পরাজয় সমান। দুই জয়ের বিপরীতে হার দুটি। তবে গোল গড়ে এগিয়ে জিমিরা। ১৩ গোল দিয়ে খেয়েছে ৮টি।

সোনা, রুপা কিংবা তামা জিততে না পারলেও ভালো খেলা সব সময় টার্গেট বাংলাদেশের। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।               

এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ হকি দল

১। অসীম গোপ

২। মো. আবু সাইদ নিপ্পন

৩। মামুনুর রহমান চয়ন

৪। মো. ইমরান হাসান

৫। খোরশেদুর রহমান

৬। ফরহাদ আহমেদ শিঠুল

৭। মো. আশরাফুল ইসলাম

৮। কামরুজ্জামান

৯। সোহানুর রহমান সবুজ

১০। মো. সারোয়ার হোসেন

১১। মো. রোমান সরকার

১২। মো. নাইম উদ্দিন

১৩। মো. ফজলে হোসেন রাব্বি

১৪। রাসেল মাহমুদ জিমি

১৫। পুস্কর ক্ষিসা মিমো

১৬। মো. মিলন হোসেন

১৭। মো. মইনুল ইসলাম

১৮। মো. আরশাদ হোসেন

সর্বশেষ খবর