শুক্রবার, ১০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

এশিয়া কাপ অনিশ্চিত সাকিবের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এশিয়া কাপ অনিশ্চিত সাকিবের

দেশে ফিরে মিডিয়ার মুখোমুখি সাকিব

প্রথম সুযোগেই বাজিমাত। প্রথম সুযোগেই হাজার হাজার মাইল দূরে মার্কিন মুল্লুকে লাল সবুজ পতাকা উড়ালেন সাকিব, তামিমরা। ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের বাকরুদ্ধ করে আমেরিকা জয় করা সাকিব বাহিনী ঢাকায় পা রেখেছেন গতকাল সকালে। দেশে ফেরার পথে সঙ্গী করছেন টি-২০ ও ওয়ানডে সিরিজ জয়ের সাফল্য। ক্রিকেট দল দেশে ফিরলেও ছুটি নিয়ে মার্কিন মুল্লুকে রয়ে গেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ সিপিএল খেলতে উড়ে গেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সৌম্য সরকার আয়ারল্যান্ডে যোগ দিবেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের সঙ্গে।   

আগামী মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপে খেলবে বাংলাদেশ। আঙ্গুলে অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে সেই টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন না টাইগার টেস্ট ও টি-২০ অধিনায়ক সাকিব। যা বাংলাদেশের জন্য বেশ বড় ধাক্কা। অবশ্য বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার পুরোপুরি সুস্থ না হয়ে খেলতেও চান না। এশিয়া কাপে খেলা নিয়ে সংশয় থাকলেও দলকে নিয়ে ভীষণ আশাবাদী সাকিব। বিশ্বাস করেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ জয় দলকে আত্মবিশ্বাসী করবে, ‘সব মিলিয়ে আমি বলবো সফরটি সফল হয়েছে। তিনটি ট্রফির দুটি জিতেছি। দেশের বাইরে এরকম পারফরম্যান্সে আমি খুবই সন্তুষ্ট। এরকম ভালো সিরিজ খেলায় দলের সবার আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে। আমি বিশ্বাস করি ক্যারিবীয় সফরের পারফরম্যান্স এশিয়া কাপে আমাদের অনেক সহায়তা করবে।’ কোচ স্টিভ রোডসও সন্তুষ্ট দলের ঘুরে দাঁড়ানোয়, ‘টেস্ট সিরিজে বাজে পারফরম্যান্সের পর ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দল, তাতে আমি সন্তুষ্ট।’

মার্চে নিদাহাস ট্রফিতে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। কিন্তু জুনে সেই সাফল্যে বড়সড় ধাক্কা খায়। নিরপক্ষে ভেন্যু ভারতের মাটিতে আফগানিস্তানের টি-২০ সিরিজে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয় বাংলাদেশ। নবাগত টেস্ট খেলুড়ে দেশটির কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর মান গেল, মান গেল বলে রব উঠে চারিদিকে। মানসিকভাবেও বেশ জোরালো ধাক্কা খায় টাইগাররা। কাচভঙ্গুর মানসিক অবস্থায় দুই টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও তিন টি-২০ ম্যাচ খেলতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ উড়ে যায় বাংলাদেশ। আফগানদের কাছে হারের ধাক্কা সামাল দেওয়ার আগে দুই টেস্টে পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয় টাইগাররা। বিশেষ করে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে গুটিয়ে যাওয়ায় বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়। ওই ধাক্কা সামলে নিতে পারেনি গোটা সিরিজে। দুই টেস্টের স্থায়ীকাল ছিল মাত্র পাঁচ দিন। প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ২১৯ রানে এবং দ্বিতীয়টিতে হারে ১৬৬ রানে। টেস্ট সিরিজে হোয়াইট ওয়াশের লজ্জা নিয়ে মুখোমুখি হয়ে তিন ম্যাচের ওয়াডে সিরিজে।

ওয়ানডে সিরিজে যোগ দেন মাশরাফি। মাশরাফির জাদুর কাঠির পরশে পুরোপুরি পাল্টে যায় টাইগাররা। প্রথম ওয়ানডে জিতে নেয় ৪৮ রানে। ১৩০ রানের ইনিংস খেলেন তামিম ইকবাল। নার্ভাস নাইনটিজের শিকার হন সাকিব। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয়ের কাছাকাছি এসেও হেরে যায় ৩ রানে। শেষ ওয়ানডেতে ফের সেঞ্চুরি করেন তামিম। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক সিরিজে দুই দুটি সেঞ্চুরি করেন বাঁ হাতি ওপেনার। তার সেঞ্চুরিতে জয় পায় ১৮ রানে। ওয়ানডে সিরিজের অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সের ছোঁয়ায় বদলে যায় টি-২০ সিরিজেও। যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে প্রথম ম্যাচে হেরে যায় ৭ উইকেটে। সিরিজের শেষ দুটি ম্যাচের দুই দল মুখোমুখি হয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায়। সিরিজের দ্বিতীয় ও আমেরিকায় নিজেদের ইতিহাসের প্রথম ম্যাচে জয় পায় ১২ রানে। সিরিজের সমতা আসার পর তৃতীয়টিতেও জয় পায় ১৯ রানে। ওয়ানডের পর টি-২০ সিরিজও জিতে নেয় ২-১ ব্যবধানে।

টেস্ট সিরিজে টাইগার ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স আহামরি ছিল না। কিন্তু ওয়ানডে সিরিজে অসাধারণ খেলেন তামিম, সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ। তামিম দুই সেঞ্চুরিসহ রান করেন ২৮৭। সাকিবও করেন দুই হাফসেঞ্চুরি। মাহমুদুল্লাহ ও মুশফিক করেন একটি করে হাফসেঞ্চুরি। টি-২০তেও ধারাবাহিকতা ধরে রাখেন তামিম। একটি হাফসেঞ্চুরিসহ তিন ম্যাচে রান করেন ৯৫। সাকিব করেন ১০৩ রান। লিটন করেন ৮৬ রান। মুস্তাফিজুর রহমান নেন ৮ উইকেট।

ক্রিকেটার সম্মিলিত পারফরম্যান্সেই ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজ জিতে ক্রিকেটাররা আজ দেশে ফিরছেন। এবার প্রস্তুতি নিবেন সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ খেলার।

সর্বশেষ খবর