ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরই ছিল বাংলাদেশের প্রধান কোচ স্টিভ রোডসের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট। টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পরও ওয়ানডে ও টি-২০ সিরিজে জিতেছে টাইগার। প্রথম অ্যাসাইনমেন্টেই বাজিমাত করেছেন রোডস। সাকিবদের পারফরম্যান্সে ভীষণ খুশি এই ইংলিশ কোচ।
স্টিভ রোডস বলেন, ‘টেস্ট সিরিজ কঠিন ছিল। আমরা খুবই খারাপ করেছি। ছেলেরা যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে, আমি খুবই গর্বিত। ওয়ানডে সিরিজ জয়ের কথা ভেবেছিলাম। এটা করতে পারাটা দারুণ ছিল। তবে টি-২০র জয়ে কিছুটা বিস্মিত। দ্বিতীয় আর তৃতীয় টি-২০তে আমরা আসলেই খুব ভালো খেলেছি। আমি খুব খুশি যে আমরা দুটি ট্রফি আনতে পেরেছি।’
তিন ফরম্যাটের মধ্যে ওয়ানডেতে বাংলাদেশ গত কয়েক বছর থেকেই দাপট দেখাচ্ছে। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছে টাইগাররা। সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে উঠেছিল টাইগাররা। তাই ক্যারিবীয়দের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজে জয়টা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু টি-২০তে বাংলাদেশের অবস্থা ছিল হ-য-ব-র-ল। ওয়েষ্ট যাওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ভারতের দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে টাইগাররা হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল। তিন ম্যাচের মধ্যে একটিতেও জিততে পারেনি। অথচ সেই দলটাই কিনা ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতেছে। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজ জয়টা কোচ স্টিভ রোডসকে বিস্মিতই করেছে।টি-২০তে সাফল্যের জন্য বড় ভূমিকা রাখেন বিগ-হিটাররা। কিন্তু বাংলাদেশ দলে তো বিগ-হিটার নেই! তবে শেষ ম্যাচে লিটন দাসের পারফরম্যান্স ছিল দেখার মতো। মাত্র ৩২ বলে খেলেছেন ৬১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। তরুণ এই ব্যাটসম্যানকে মনে ধরেছে নতুন কোচের। স্টিভ রোডস বলেন, ‘আমি লিটনকে নিয়ে খুব খুশি। শেষ ম্যাচে সে দুর্দান্ত একটি ইনিংস খেলেছে।’
ওয়ানডে সিরিজ ২-১ হয়েছে। তবে সিরিজটা হতে পারতো ৩-০। কেন না দ্বিতীয় ম্যাচে খু কাছেও গিয়ে হেরেছে বাংলাদেশ। কারণ এক সময় বাংলাদেশের দরকার ছিল ১৩ বলে ১৪ রান। হাতে পর্যাপ্ত উইকেটও ছিল। সেই ম্যাচেও কিনা নাটকীয়ভাবে হেরে যায় বাংলাদেশ। তাই একটুখানি অতৃপ্তিও হয়তো আছে কোচের মনে, ‘জয়ের চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না। আমরা ওয়ানডেতে আগেও ভালো করেছি, তাই আশাবাদী ছিলাম। আমরা সুযোগ নষ্ট করতে চাইনি। নিশ্চিতভাবেই আমরা খুশি। তবে ওয়ানডে সিরিজটা ৩-০ ব্যবধানেও জিততে পারতাম।’
উইন্ডিজ সফরে বাংলাদেশের টেস্টের পারফরম্যান্স ছিল খুবই হতাশার। দুই ম্যাচে খুবই বাজেভাবে হেরেছে টাইগাররা। ৪৩ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জাও আছে। রোডস মনে করেন, টেস্টে ভালো করতে হলে আরও বেশ কিছু জায়গায় উন্নতি করতে হবে। তবে ক্রিকেটারদের সামর্থ্য নিয়ে তার মনে কোনো সংশয় নেই। রোডস বলেন, ‘আমাদের দলে ভালো মানের খেলোয়াড় আছে। আমাদের শুধু বাইরে গেলে কন্ডিশন এবং প্রতিপক্ষের সঙ্গে আরেকটু দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে।’
প্রথম অ্যাসাইনমেন্টে দারুন সফল রোডস। লঙ্কান চন্ডিকা হাতুরাসিংহে বাংলাদেশ দলকে যেখানে রেখে গেছেন সেখান থেকেই যেন শুরু করেছেন এই ইংলিশ কোচ। তবে হারুরার শুরুটা রোডসের মতো এতটা ভালো ছিল না। যদিও ২০১৪ সালে উইন্ডিজ সফর দিয়েই দায়িত্ব নিয়েছিলেন হাতুরা। সেবার টেস্ট ও ওয়ানডে দুই সিরিজেই হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু রোডসের শুরুটা হলো চমকপ্রদ। এখন সামনে কতটা ভালো করতে পারেন সেটাই দেখার বিষয়।