রবিবার, ১২ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

এত প্রাপ্তি তবু আফসোস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

এত প্রাপ্তি তবু আফসোস

দক্ষিণ কোরিয়ায় কন্ডিশনিং ক্যাম্পে মামুনুল

মামুনুল ইসলাম বাংলাদেশের ফুটবলে পরিচিত মুখ। দেখতে দেখতে এক যুগে এসে ঠেকেছে তার ক্যারিয়ার। এমন কোনো বড় দল নেই যে মামুনুল খেলেননি। ফুটবলে আগের সেই সোনালি দিন না থাকলেও তারকারখ্যাতি পেয়েছেন। ঢাকা আবাহনী, শেখ জামাল ধানমন্ডি, শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রে খেলে লিগ জিতেছেন। মোহামেডানে কোটি টাকার সুপারকাপসহ অন্য ট্রফি জেতার কৃতিত্ব রয়েছে তার। জাতীয় দলকে নেতৃত্বে দিয়ে অসংখ্য আন্তর্জাতিক ম্যাচও খেলেছেন। ঘরোয়া ফুটবলে বেশ কবার সর্বোচ্চ পারিশ্রম পেয়েছেন। শৃঙ্খলা ভাঙার অপরাধে শাস্তিও পেয়েছেন। তবু তাকে টানতে এখনো দলগুলো প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠে।

এত প্রাপ্তির পরও মামুনুলের তৃপ্তি মেটেনি। বড় একটা আক্ষেপ বা আসসোস থেকেই গেছে। তা হলো দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপকে ঘিরেই। নিজেই জানালেন ‘ক্লাব পর্যায়ে সাফল্যের অবশ্য গুরুত্ব রয়েছে। তা না হলে মামুনুল হলাম কীভাবে? তবে ক্যারিয়ারে বড়প্রাপ্তি হিসেবে অবশ্যই আমি এসএ গেমসের কথা বলবো। ২০০৯ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত এই গেমসে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বার সোনা জিতেছিল আফগানিস্তানকে শোচনীয়ভাবে হারিয়ে। সেই দলে আমিও ছিলাম।

এস এ গেমসে সোনা জিতলেও মামুনুলের ক্যারিয়ার অপূর্ণ থেকে গেছে। বললেন, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মানের প্রেক্ষাপটে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ অত্যন্ত মর্যাদাশীল লড়াই। আমরা এখানেই মার খাচ্ছি। ২০০৩ সালে ঘরের মাঠে এই টুর্নামেন্টে একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। এরপর রানার্সআপ হলেও শিরোপাটা যেন স্বপ্নে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিককালে অবস্থাতো বড্ড নাজুক। গেল তিন আসরে সেমিফাইনালই খেলতে পারেনি। গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায় নিচ্ছে বার বার।

আগামী মাসেই প্রথম সপ্তাহে ঢাকায় তৃতীয় বারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের পর্দা উঠতে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই ফুটবলপ্রেমীরা প্রত্যাশা করছে অতীতে যাই হোক না কেন এবার বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। সত্যি বলতে কি এবার প্রস্তুতিটাও হচ্ছে সেভাবে। আগে দেখা যেত দায়সারা প্রশিক্ষণ করেই ফুটবলাররা খেলতে নামতো। ফলও হতো না সুখকর। এবার প্রস্তুতির দিক দিয়ে বাংলাদেশ অন্য দেশগুলোর চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে অনুশীলন ও প্রস্তুতি ম্যাচও খেলছে। ফুটবলে এশিয়ার শক্তিশালী দেশ দক্ষিণ কোরিয়া সফরে গিয়ে তিন প্রস্তুতি ম্যাচে দুটোতেই জিতেছে বাংলাদেশ।

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের আগে খেলোয়াড়দের ছন্দ ও আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর জন্য কোনো কিছুর ঘাটতি রাখছে না বাফুফে। তাহলে সাফ জিতে ফুটবলে হতাশা ঝেড়ে দাঁড়াতে পারবে কি বাংলাদেশ? এ ব্যাপারে মামুনুল এক টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানালেন, লক্ষ্য আমাদের ট্রফিই জয়। তবে গ্যারান্টি দিতে পারব না। প্রস্তুতিটা ভালোই হচ্ছে। দেশে-বিদেশে ম্যাচ খেলে নিজেদের ঝালাই করে নিতে পারছি। আশা করি ঘরের মাঠে আমরা সেই খেলাটা খেলবো যেন দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি। মামুনুল বলেন, আমার আফসোস সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ ঘিরেই। দেখেন ফুটবলে আমরা যত পিছিয়ে থাকি না কেন, যদি সাফ চ্যাম্পিয়ন হতে পারতাম এত সমালোচনা হতো না। খারাপ খেললে তো তিরস্কৃত হবই। এ নিয়ে আমার কোনো ক্ষোভ নেই। আমরা জানি একটা সাফ জিতলেই ফুটবল একটা অবস্থানে যেতে পারবে। ঘরের মাঠে সেই চেষ্টাটাই জান-প্রাণ দিয়ে করব। নিজের অবসর সম্পর্কে বলেন, এখনো সেই চিন্তা করছি না। আরও কয়েক বছর খেলতে চাই। তবে খেলা ছাড়ার পর কোচ হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে আমার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর