রবিবার, ১৯ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

সেরা ষোলোর হাতছানি বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সেরা ষোলোর হাতছানি বাংলাদেশের

জাকার্তায় অনুশীলনে ব্যস্ত বাংলাদেশ ফুটবল দল —বাফুফে

সত্তর বা আশি দশকে পদক না হোক এশিয়ান গেমসে অন্তত নকআউট পর্বে খেলার সামর্থ্য ছিল বাংলাদেশ ফুটবল দলের। পারফরম্যান্স থাকার পরও শেষ ষোলতে জায়গা না পাওয়াটা ছিল সত্যিই হতাশাজনক। পরবর্তীতে ফুটবলে বাংলাদেশের মান এত নিচে নেমে গেছে যে গেমসে অংশ নেওয়াটাই মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। তবু এবার কোচ জেমি ডে বলেছেন তিনি শিষ্যদের নিয়ে আশাবাদী। কোচ যাই বলুক না কেন পুরুষ ফুটবলে যে সংকটাপন্ন অবস্থা তাতে এশিয়ান গেমসে গ্রুপ পর্ব পেরুবে তা ক্রীড়ামোদীরা ভাবতেই পারে না।

অতীতে ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী থাকলেও ফুটবলে নতুন এক রেকর্ডের হাতছানি দিচ্ছে বাংলাদেশের। জাকার্তা এশিয়ান গেমসে পদক না হোক দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সম্ভাবনা জেগেছে জামাল ভুইয়াদের। শুরুটা হয়েছিল শক্তিশালী প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ গোলে হার দিয়ে। গ্রুপের পরের ম্যাচে থাইল্যান্ডের সঙ্গে এগিয়ে থেকেও ১-১ ড্র করে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে মূল্যবান পাঁচ পয়েন্ট হারানোর পরও গেমসে বাংলাদেশের নক আউটের খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।

টানা দুই ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই শেষ ষোলতে জায়গা করে নিয়েছে উজবেকিস্তান। কাতারও দুই ম্যাচে বাংলাদেশ, থাইল্যান্ডের মতো এক পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে। তবে উজবেকিস্তানের কাছে ৬-০ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ায় কাতারের সম্ভাবনা নেই বললে চলে। বাংলাদেশ যদি আজ কাতারকে হারাতে পারে তাহলে গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে জামালদের এশিয়ান গেমসে দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলার সম্ভাবনা রয়েছে। একই দিনে উজবেকিস্তান লড়বে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে। শক্তির পার্থক্য উজবেকিস্তানের ম্যাচ জয়ের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। যদি বাংলাদেশ হারায় কাতারকে এবং একই সঙ্গে থাইল্যান্ড জিতে যায় তাহলে দুই দলের গোল পার্থক্য গ্রুপ রানার্সআপ নির্ধারণ হবে। অর্থাৎ দ্বিতীয় রাউন্ডের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে হলে বাংলাদেশকে আজ জিততেই হবে।

পুরুষ ফুটবলের দুর্দিনে বাংলাদেশ যদি কাতারকে হারিয়ে এশিয়ান গেমসের দ্বিতীয় রাউন্ডও খেলতে পারে তা হবে বড় প্রাপ্তি। কথা হচ্ছে বাংলাদেশ পারবে কিনা? কোনো সন্দেহ নেই শক্তির বিচারে কাতারই এগিয়ে রয়েছে। তবে সেই ভয়ঙ্কর শক্তিটা তাদের অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।

বয়স ভিত্তিক টুর্নামেন্টে কাতারের সঙ্গে সমান তালে লড়ছে। প্রদর্শনী ম্যাচে জয়ও পেয়েছে যুবারা। সেক্ষেত্রে কাতারকে যদি আজ বাংলাদেশ হারিয়েও দেয় তাহলে অবাক কিছু হবে না।

ইন্দোনেশিয়া থেকে বাংলাদেশ দলের সহকারী কোচ মাহবুব হোসেন রক্সি বলেছেন, উজবেকিস্তান শক্তিশালী প্রতিপক্ষ তাই তাদের কাছে ৩-০ গোলে হারে লজ্জার কিছু নেই। কিন্তু থাইল্যান্ডের বিপক্ষে আমরা জয়ের টার্গেট নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। ৫২ মিনিটে সুফিলের দুর্দান্ত গোলে আমরা এগিয়েও যাই। সহজ সহজ সুযোগ হাত ছাড়া করায় ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। উল্টো যে আক্রমণে গোল খাওয়ার কথা নয়। গোলরক্ষকের ভুলে ম্যাচ ড্র করে থাইল্যান্ড। সত্যি কথা বলতে ছেলেরা এই এক ভুল ছাড়া ভালোই খেলেছিল। কাতারকে হারানোর সম্ভব কিনা? রক্সি বলেন, কাতারের খেলা দেখেছি। ওরা এমন কোনো দল নয় যে হারানো যাবে না। ছেলেদের ভিতর যে আত্মবিশ্বাস রয়েছে তা কাজে লাগিয়ে খেলতে পারলে অবশ্যই জয় সম্ভব। এশিয়ান গেমসে আমরা খেলছি সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ভুলত্রুটি শুধরিয়ে নিতে। এরপর যদি দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলতে পারি সাফে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ মাঠে নামতে পারবে।

রক্সি বলেন, অনূর্ধ্ব-১৯ ও ২৩ দলের পাশাপাশি অভিজ্ঞ ফুটবলারও এশিয়ান গেমস খেলছে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়া এইতো সময়। সাফকে গুরুত্ব দিয়ে বাফুফে এবার দীর্ঘমেয়াদি অনুশীলনের ব্যবস্থা করেছে। আমার বিশ্বাস আগে যাই হোক না কেন এবারে সাফে ফুটবলাররা ঘরের মাঠে ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবে।

রক্সি দল নিয়ে আশাবাদী। কিন্তু একটা ব্যাপার লক্ষ্যণীয় যে লিড নিয়েও শেষ মুহূর্তে এসে বাংলাদেশ তা ধরে রাখতে পারছে না। এভাবেই তো জাতীয় দলের ভরাডুবি হচ্ছে। এই দৃশ্য সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দেখা যাবে না তার কি নিশ্চয়তা দেওয়া যায়।

সর্বশেষ খবর