মঙ্গলবার, ২১ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

সুফিলের ওপর বিশেষ নজর কোচের!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সুফিলের ওপর বিশেষ নজর কোচের!

সত্তর দশকে এনায়েত, সালাউদ্দিন, আশির দশকে আসলাম ছিলেন বাংলাদেশের ফুটবলের সেরা স্ট্রাইকার। এদের উত্তরসূরি হিসেবে নব্বই দশকে বাংলাদেশের ফুটবলকে বেশ অনেকদিন টেনেছেন আলফাজ ও নকিব। এরপর গত এক দশক দেশসেরা স্ট্রাইকার হিসেবে খেলছেন জাহিদ হোসেন এমিলি। এখনো খেলছেন তিনি। তবে নিয়মিত নন জাতীয় দলে। তার অনুপস্থিতিতে রবিনকে দিয়ে চেষ্টা করা হচ্ছে অনেকদিন ধরে। এখনো খেলছেন রবিন। কিন্তু পূর্বসূরিদের অভাব পূরণ করতে পারছেন না বর্তমান স্ট্রাইকাররা। ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাফল্যও পাচ্ছে না বাংলাদেশ। ব্যর্থতার খোলশ ভাঙতে যুব দলের স্ট্রাইকার জাফর ইকবাল ও মাহাবুবুর রহমান সুফিলের উপর নির্ভরতা বাড়ান। তার নেওয়া সিদ্ধান্ত যে এখন পর্যন্ত ভুল প্রমাণিত হয়নি, তার জ্বলজ্বলে প্রমাণ সুফিল। জাকার্তা এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের দুটি গোলের একটি করেছেন তিনি। কিন্তু প্রতিটি ম্যাচেই গোলের সুযোগ সৃষ্টি করে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতার অভাবে ফিনিশিং দিতে পারছেন না। একজন দক্ষ  স্ট্রাইকার হিসেবে গড়ে তুলতে কোচ মাহাবুব হোসেন রক্সি কাজ করছেন তাকে নিয়ে। মৌলভীবাজারে জন্ম সুফিলের ফুটবলে হাতেখড়ি মোহামেডানের একাডেমিতে। সেখানে দুটি টুর্নামেন্ট খেলে জায়গা করে নেন আরামবাগ ক্রীড়া চক্রে। দলটির হয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে দারুণ পারফরম্যান্স করেন তরুণ স্ট্রাইকার। তার নেতৃত্বে নিজেদের ৬০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতে আরামবাগ। সুফিল টুর্নামেন্টের দারুণ ফুটবল খেলে নজর কাড়েন সাবেক কোচ ওডের। জায়গা দেন লাওস সফরে। আশিয়ানভুক্ত দেশটির সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র ম্যাচে একটি গোল করেন সুফিল। জাতীয় দলে এখন পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছেন একটি। লাল-সবুজ পতাকার তলে সুফিলের অভিষেক অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। যুব দলের হয়ে তিনি ভারত, মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গোল করেন। সব মিলিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ দলের জার্সি গায়ে ৮ ম্যাচে গোল তার ৪টি। অনূর্ধ্ব-২৩ বা অলিম্পিক দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছেন ৩টি। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে গোল করেছেন একটি। ওই ম্যাচে নিশ্চিত মিস করেছেন দুটি গোল। কাতারের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ী ম্যাচে গোল না পেলেও নিশ্চিত গোল মিস করেছেন একটি। গোল না পেলেও তার বল রিডিং ইঙ্গিত রাখছে ভবিষ্যতের একজন সুযোগ্য স্ট্রাইকারের।

বয়স মাত্র ১৯। অস্থিরতার জন্য প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারছেন না। আগামীতে যাতে এই সমস্যা না থাকে এবং একজন সুযোগ্য স্ট্রাইকার হিসেবে ক্যারিয়ার উজ্জ্বল করতে পারেন, সেজন্য সুফিলকে নিয়ে কাজ করছেন সহকারী কোচ রক্সি,‘এখন খেলা চলছে। তাই সুফিলকে নিয়ে আলাদা করে কাজ করা যাচ্ছে না। তারপরও আমরা তাকে নিয়ে কাজ করছি। তাকে বোঝাতে চেষ্টা করছি বল বক্সের ভিতর কোথায় থাকলে তাকে কোথায় কোথায় অবস্থান নিতে হবে। বয়স যেহেতু কম, তাই ফিনিশিং দিতে যেয়ে অস্থিরতায় ভোগেন। আশা করি এটা সামলে নিবে। আমার বিশ্বাস সুফিল বাংলাদেশকে অনেকদিন সার্ভিস দিবেন। গতির সঙ্গে স্কিলও রয়েছে তার।’ সারা মাঠ দৌড়ে খেলার ক্ষমতা রয়েছে মাহাবুবুর রহমান সুফিলের। ২৪ আগস্ট তরুণ স্ট্রাইকারকে কঠিন পরীক্ষায় পড়তে হবে এশিয়ার দুই পরাশক্তি ইরান অথবা সৌদি আরবের দৃঢ় রক্ষণভাগের সামনে।

সর্বশেষ খবর