শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

তবু তৃপ্ত নন তপু

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তবু তৃপ্ত নন তপু

উৎসব ছিল শুধু ক্রিকেটকে ঘিরে। ফুটবল হতাশা ছাড়া কিছুই দিতে পারছিল না। অতীত ঝেড়ে ফেলে তারুণ্যের জয়গানে ফুটবলেও আশার আলো জাগতে শুরু করেছে। জনপ্রিয় এই খেলার ধস্ নামার পেছনে মূলত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপই আলোচনায় এসে যায়। প্রতি আসরে ফেবারিট থাকার পরও জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই দিতে পারছিলেন না। সমান মানের দল ভারতের সাফ শিরোপা জেতাটা অভ্যাসে পরিণত হলেও বাংলাদেশ কিনা ট্রফি জিতেছে মাত্র একবার!

২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে মালদ্বীপকে ফাইনালে হারিয়ে বাংলাদেশ স্বপ্নের ট্রফি জিতেছিল। এরপর ফাইনাল খেললেও ট্রফি হাতে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এতটা সংকটাপন্ন অবস্থা যে তিন আসরে বাংলাদেশ সেমিফাইনালই খেলতে পারেনি। গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায় নিয়েছেন লোকাল আসরে লাখ লাখ টাকা পাওয়া ফুটবলাররা। ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী থাকায় ক্ষোভে অনেকে ফুটবল থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন। যার প্রভাব পড়ে ঘরোয়া আসরে। পেশাদার লিগে হাইভোল্টেজ ম্যাচেও গ্যালারি থাকছে প্রায় ফাঁকা।

২০০৯ সালে ঢাকাতেই সাফে শেষবার সেমিফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। নয় বছর পর ঘরের মাটিতে ফের অনুষ্ঠিত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত এ টুর্নামেন্ট। অতীত যাই হোক, কেন যেন মনে হচ্ছিল এবার ঘরের মাঠে বাংলাদেশ জ্বলে উঠবে। এর পেছনে বড় কারণটি ছিল পর্যাপ্ত অনুশীলন। বাফুফে প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি রাখেনি। দেশ-বিদেশে কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পাশাপাশি একাধিক প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছে। এশিয়ান গেমসে কাতারকে হারিয়ে নকআউট পর্বে জায়গা করে নিলে সাফ ঘিরে আশাটা আরও বেড়ে যায়।

সেই ঢাকায় এবার কপাল খুলতে যাচ্ছে বাংলাদেশের। গ্রুপ পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচে ভুটানকে ২-০ গোলে হারিয়ে বাংলাদেশ আভাস দেয় এবার সঠিক পথেই হাঁটবে। বৃহস্পতিবার মর্যাদার লড়াইয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশ সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত করে ফেলে। এখন বাংলাদেশ যদি নেপালের কাছে হেরে যায়, অন্যদিকে পাকিস্তান তাদের শেষ ম্যাচে ভুটানকে হারায় তাহলে তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যাবে। এসব এখন কাল্পনিকই বলা যায়।

যে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে তাতে সেমি কেন, বাংলাদেশ ফাইনালে উঠে ঘরের মাটিতে ফের হারানো গৌরব উদ্ধার করতে পারে। এমন অসাধারণ পারফরম্যান্সে সবাই প্রশংসা পেতেই পারেন। কিন্তু তপু বর্মণকে রাখতে হবে সবার ওপরে। অনেক দিন পর একজন ফুটবলার ১৬ কোটি মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন। তিনি হলেন তপু বর্মণ। মূলত আক্রমণ ঠেকানোর কাজ হলেও তপু এখন গোল নেশায় মেতেছেন। টানা দুই ম্যাচে ২ গোল। ২টিই যেন সোনার চেয়ে দামি। পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে তপু হেডে যে গোলটি করলেন তা ফুটবলপ্রেমীরা অনেক দিন মনে রাখবেন। রীতিমতো নায়ক বনে গেছেন তপু। ভুটানের বিপক্ষে শুরুতে আর কাল শেষে ২টি গোলই যে বাংলাদেশের শিরোপার পথ দেখাচ্ছে। ২ গোল দিয়ে তপু কি তৃপ্ত। না, তার চাই ট্রফি। বাংলাদেশের ফুটবলকে নতুনভাবে জাগাতে তারা যে লড়াইয়ে নেমেছেন। ট্রফি হাতে উঠলেই তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলবেন তপুরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর