সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গোলরক্ষক সংকটে বাংলাদেশ!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

গোলরক্ষক সংকটে বাংলাদেশ!

ফুটবলে প্রতিটি পজিশনই গুরুত্বপূর্ণ। তবে গোলরক্ষক ও স্ট্রাইকারে নির্ভর করার মতো কেউ না থাকলে দল সংকটে পড়বেই। ৭০ ও ৮০ দশকে ফুটবলে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা ছিল। তারপরও মান যে খুব আহামরি ছিল তাও বলা যাবে না। কেননা যতটুকু সাফল্য ছিল সাফ ঘিরেই। ওই সময়ে আবার বিভিন্ন পজিশনে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় ছিল। এখন না আছে জনপ্রিয়তা না মান। দীর্ঘ সময় ধরে হাহাকার চলছে। কোনো পজিশনেই  মানসম্পন্ন খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

গোলরক্ষক ও স্ট্রাইকার পজিশনেতো আরও করুণ হাল। গোল রক্ষা ও গোল করা যাদের দায়িত্ব, সেখানেই কিনা শূন্যতা। এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ দুটো জয় পেয়েছে। অথচ এই ক্ষেত্রে স্ট্রাইকারের কোনো অবদানই  ছিল না। পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের নায়ক ছিলেন ডিফেন্ডার  তপু বর্মণ।

ভুটানের বিপক্ষে প্রথম গোলটি আসে তারই পা থেকে। টোটাল ফুটবল যুগে অবশ্য পজিশনটা সেভাবে কার্যকরী নয়। কে কখন সামনে বা পেছনে খেলবে তা ম্যাচের চেহারার ওপরই নির্ভর করে।

দুই ম্যাচ জিতেও বাংলাদেশ ফের সেমিফাইনাল খেলতে পারল না। নেপালের কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিল। অথচ ড্র করলেই বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ চারে জায়গা করে নিত। কি করুণ হাল— যে নেপাল এক সময়ে গোল বন্যায় ভাসতো, তাদেরই বিপক্ষে ঘরের মাঠে ড্র করার সামর্থ্য রাখে না। এমন হারে হতাশায় ভেঙে পড়েছেন ফুটবলপ্রেমীরা। কেউ তার দলকে ইচ্ছা করে হারান না। কিন্তু নেপালের কাছে হারে দর্শকদের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে গেছেন গোলরক্ষক সহিদুল আলম সোহেল।

বাংলাদেশ ২-০ গোলে হেরেছে। তারপরও মনোবল ভেঙে দিয়েছেন সোহেলই। ৩১ মিনিটে নেপাল একটি ফ্রি কিক পায়। বিমলের সেই শট তেমন জোরালোও ছিল না। হালকা শট ঠেকাতেই সোহেল যেন সার্কাস প্রদর্শন করলেন। এই শট অনায়াসে গ্লাভসে বন্দী করা যায়। তা না হলে ফিস্ট করে কর্নার করা যেত। একেবারে কম সময় ধরে খেলছেন না। তারপরও তার হাত ফসকে  বল জালে জড়িয়ে  যায়। ৩০ মিনিট পর্যন্ত সমান তালেই খেলেছে বাংলাদেশ। আচমকা গোলটা খাওয়ার পরই এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশ। শেষের দিকে আরেক গোল হজম করে বিদায়।

কথা হচ্ছে সোহেল এভাবে গোল খেলেন কেন? তিনি তো কোচ জেমি  ডেকে সন্তুষ্ট করে বেস্ট ইলেভেনে জায়গা পেয়েছেন। কেউ কেউ আবার বলছেন এশিয়ান গেমসে ভালো করা আরেক গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা খেললে এমন অবস্থা হতো না। যেহেতু রানা মাঠে নামেননি তাই এ প্রশ্নটা যুক্তি সংগত নয়। আলোচনা এখন সোহেলকে ঘিরেই।

শুধু সোহেল কেন। দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশে আস্থা রাখা যায় সেই মানের গোলরক্ষকের দেখা মিলছে না। শহিদুর রহমান সান্টুর পর সেই মানের গোলরক্ষক দেখা যায়নি। পরবর্তীতে মহসিন ও কানন মাঠ কাঁপালেও পরে শূন্যতা নেমে আসে। আমিনুল ও বিপ্লব আস্থার স্বাক্ষর রাখলেও এরপর যেন গোল লাইনে নির্ভর করার মতো শক্তিশালী কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। দেশে গোলরক্ষকের অভাব নেই। তবে তারা মানসম্পন্ন নয়। একটা ভুলই যে কত বড় সর্বনাশ হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ফুটবলপ্রেমীরা।  কথা হচ্ছে, মানসম্পন্ন গোলরক্ষকের দেখা কি মিলবে না? দেশে অনেক খ্যাতনামা গোলরক্ষক আছে অলস সময় কাটাচ্ছেন। বাফুফের উচিত হবে তাদেরকে কাজে লাগানো। দলে হেড কোচ তো থাকবেই। গোলরক্ষক প্রশিক্ষণের দায়িত্বে গোলরক্ষক নিতে পারলে ভালো কিছুর সন্ধান মিলবে। সোহেলতো আর ইচ্ছা করে গোল খাননি। হাত ফসকে গেছে। তাই অভিজ্ঞতারও দরকার রয়েছে।

সর্বশেষ খবর