বৃহস্পতিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সেই ভারত-মালদ্বীপই ফাইনালে

ক্রীড়া প্রতিবেদক

সেই ভারত-মালদ্বীপই ফাইনালে

২০০৯ সালে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে খেলেছিল ভারত ও মালদ্বীপ। গতকাল সেমিফাইনালে দুই দল জয়ী হয়ে ৯ বছর পর আবারও শিরোপার লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে —রোহেত রাজীব

ফাইনালে দেখা মিলল না নতুন কোনো দলের। ঘুরেফিরে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিততে লড়বে ভারত ও মালদ্বীপই। গতকাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দুই সেমিফাইনালে মালদ্বীপ ৩-০ গোলে নেপালকে, পরের ম্যাচে ভারত ৩-১ গোলে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। ১৫ সেপ্টেম্বর দুই দলের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। নেপাল ও পাকিস্তান সাফ গেমস ফুটবলে সোনা পেলেও কখনো সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনালে উঠতে পারেনি। এবার ইতিহাস গড়ার হাতছানি দিচ্ছিল তাদের। তা আর হলো কই। ২০০৯ সালের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল। ঢাকায় সেবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ফাইনাল খেলেছিল ভারত-মালদ্বীপই।

শক্তির বিচারে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তান পারবে না তা অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান হেরেই গেল। তবে নেপাল গ্রুপের শেষ দুই ম্যাচে ভুটান ও বাংলাদেশের বিপক্ষে নৈপুণ্য প্রদর্শন করে জয় পেয়েছিল। তাতে সেমিফাইনালে তারাই ছিল ফেবারিট। নেপাল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন। অন্যদিকে মালদ্বীপ টস ভাগ্যে সেমিতে জায়গা করে নেয়। অথচ এক শিরোপা জেতা দেশটি কাল নতুন রূপ ধারণ করল। মালদ্বীপের পরিকল্পিত খেলার সামনে নেপাল পাত্তাই পায়নি। ৩-০ গোলে বিধ্বস্ত হয়েছে।

মালদ্বীপ কোচ আগের দিন বলেন, হতে পারে আমরা কপাল জোরে টিকে গেছি। কিন্তু সেমিতে আমার ছেলেরা অন্যরূপ ধারণ করবে। সেই কথা বাস্তবেও দেখা গেছে। মালদ্বীপের গতিময় খেলার কাছে নেপালকে বেশ ক্লান্ত মনে হয়েছে। প্রথম ৫ মিনিটে সমানতালে লড়াই হলেও পরবর্তীতে নেপাল এলোমেলো হয়ে যায়। সুযোগটা ভালোভাবে কাজে লাগায় মালদ্বীপ। প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ ভেঙে ফেললেও সুযোগ হাতছাড়া করায় এগিয়ে যেতে পারছিল না মালদ্বীপ। তবে গোল পেতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ৯ মিনিটেই গোল পেয়ে এগিয়ে যায় দ্বীপ রাষ্ট্রটি।

আবদুল আকরাম ঘানির বাঁকানো ফ্রি-কিকের শট জালে জড়িয়ে যায়। ২৭ মিনিটে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে। ৩২ মিনিট পর পুনরায় লড়াই শুরু হয়। নেপাল সমতা ফেরার সুযোগ পেয়েছিল। গোল করতে পারেনি। ৮৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করলে মালদ্বীপের ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যায়। কাউন্টার অ্যাটাকে গোল করেন ইব্রাহিম। এরপরই নেপাল যেন আত্মসমর্পণ করে। দুই মিনিট পর বল আরও একবার জাল স্পর্শ করলে ৩-০ ব্যবধানে জিতে যায় মালদ্বীপ। এ নিয়ে তারা পাঁচবার ফাইনাল খেলছে।

ক্রিকেট ও হকিতে ভারত-পাকিস্তানের ম্যাচ ঘিরে যতটা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, ফুটবলে তার দেখা মিলে না। এখানে বরাবরই ফেবারিট ভারত। তবুও ইতিহাস লিখতেই মাঠে নেমেছিল পাকিস্তান। সত্যি কথা বলতে কী পাকিস্তানকে হিসেবের মধ্যে রাখা না হলেও তারা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে ঢাকার দর্শকদের বাহবা পেয়েছে। বাংলাদেশের কাছে হারলেও নেপাল ও ভুটানের বিপক্ষে দারুণ জয় পেয়েছিল। বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়ে সেমিতেও জায়গা করে নেয়। প্রতিপক্ষ দলটা পাকিস্তান বলেই সমীহ করে মাঠে নেমেছিল ভারত। সাতবারের চ্যাম্পিয়নদের সামনে দাঁড়ানোর কথা নয়। অথচ শুরু থেকেই পাকিস্তান সমানতালে লড়েছিল। মাঠে ভারতীয়দের চোখে-মুখে চিন্তার ছাপ ফুটে উঠেছিল। প্রথমার্ধে তুলনামূলকভাবে বল বেশি ছিল পাকিস্তানিদের পায়ে। সুযোগও এসেছিল, কিন্তু কাজের কাজ গোলই শুধু করতে পারেনি দুই সাফ গেমসে সোনা জয়ী দেশটি। ভারতও সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু প্রথমার্ধে কেউ গোলের দেখা পায়নি।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকেই গুছিয়ে খেলতে থাকে ভারত। ৪৯ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলেরও দেখা পেয়ে যায়। পাকিস্তানের ডিফেন্ডারদের বোকা বানিয়ে ক্রশ নেন আশিক কুরুনিয়ান। চলন্ত বলে প্লেসিংয়ে গোল করেন মানবীর সিং।

৬৯ মিনিটে মানবীয়ই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ভিনটি রায়ের পাস ধরে একটু এগিয়ে বল জালে পাঠান এই ফরোয়ার্ড। টুর্নামেন্টে এটি তার তৃতীয় গোল। ৮৪ মিনিটে ভারতের পক্ষে তৃতীয় গোল করেন সুমিত পাশি। ৮৮ মিনিটে হাসান ব্যবধান কমালেও বাকি সময়ে অঘটন ঘটেনি। ৯ বছর পর ঢাকায় সাফে ফের ফাইনাল খেলবে ভারত-মালদ্বীফ। গ্রুপ পর্বে মালদ্বীপকে ২-০ গোলে হারালেও ভারত ফাইনালে কী করবে সেটাই দেখা অপেক্ষা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর