শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভারতের অষ্টম না মালদ্বীপের দ্বিতীয়

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ভারতের অষ্টম না মালদ্বীপের দ্বিতীয়

সংবাদ সম্মেলনে ভারতের অধিনায়ক শুভাশিষ ঘোষ (বায়ে), মালদ্বীপের অধিনায়ক আকরাম আবদুল —বাংলাদেশ প্রতিদিন

সাফে ভারতকে ব্রাজিল আর মালদ্বীপকে আর্জেন্টিনা বললে ভুল হবে কি? কারণ দুই দেশেরই একাধিক ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ভারত সর্বোচ্চ ৭ ও মালদ্বীপ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতেছে একবার। আজ ঢাকা বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারত-মালদ্বীপ ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা নেই বলে সাফকেই বলা হয় এ অঞ্চলের বিশ্বকাপ।

ভারত ও মালদ্বীপ সাফল্য দেখাচ্ছে বলেই দুই দেশকে তুলনা করা হয় ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সঙ্গে। বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সর্বোচ্চ শিরোপার রেকর্ড থাকলেও আর্জেন্টিনা পাঁচবার ফাইনাল খেলে স্বপ্নের ট্রফি জিতেছে দুবার। অনেক কিছুর মিল আছে বলেই বিশ্ব ফুটবলে দুই জায়ান্টের সঙ্গে তুলনা করা হয়।

ঢাকাকে মালদ্বীপের লাকি ভেন্যু বললেও ভুল হবে না। ২০০৩, ২০০৯ ও এবার নিয়ে ঢাকায় তিন আসরেই তারা ফাইনাল খেলছে। আগের ফাইনালেও প্রতিপক্ষ হিসেবে ভারতকে পেয়েছিল। তবে শিরোপা নয়, রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়। ২০০৩ সালেও ফাইনালে হেরে যায় বাংলাদেশের কাছে। দান দান তিন দান— আজও কি তার পুনরাবৃত্তি ঘটবে, নাকি প্রতিশোধ নিয়ে বিজয়ের হাসি হাসবে দ্বীপরাষ্ট্রটি? বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান একবার করে শিরোপা জিতেছে। ভারতকে হারালে শিরোপা খতিয়ানে দ্বিতীয় স্থানে উঠে যাবে মালদ্বীপ। তা কি সম্ভব? আসলে প্রতিপক্ষ ভারত বলেই আজ তাদের ফেবারিট বলা যাচ্ছে না। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে ভারত। ২০০৩ ছাড়া প্রতিটি আসরেই ফাইনালে খেলেছে। তারা সাতবার চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। তাই তো তাদের সাফের ব্রাজিল বলা হয়। এ অপ্রতিরোধ্য দলের সামনে প্রতিপক্ষ যখন মালদ্বীপ তখন তো ফাইনালে তারাই ফেবারিট।

তাহলে কি ভারতের চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা সময়ের ব্যাপার? এবার গ্রুপ পর্বেও দুই দল মুখোমুখি হয়। ভারত জিতে যায় ২-০ গোলে। মালদ্বীপ কপাল জোরে সেমিতে জায়গা করে নিয়েছিল। গ্রুপের আরেক দেশ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে পয়েন্ট ও গোল ব্যবধান সমান হলে বাইলজ অনুসরণ করে দুই দেশের ভাগ্য নির্ধারণে টস করা হয়। এতেই খুলে যায় মালদ্বীপের কপাল। টস ভাগ্যে শেষ চারে জায়গা করে নেয় তারা। সেমিফাইনালে নেপাল প্রতিপক্ষ হওয়ায় অনেকের ধারণা ছিল মালদ্বীপ এখান থেকেই বিদায় নেবে। কেননা অন্য গ্রুপে নেপাল প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে হারলেও পরের দুই ম্যাচে ভুটান ও বাংলাদেশকে যেভাবে বিধ্বস্ত করে তাতে অনেকে ভেবেছিলেন মালদ্বীপও দাঁড়াতে পারবে না। টস ভাগ্যে যে দল সেমিতে আসে তারাই কিনা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে! নেপালকে রীতিমতো উড়িয়ে দেয়।

এমন জয় দেখার পর ভারত আজ ফাইনালে মালদ্বীপকে নিশ্চয়ই তাচ্ছিল্য চোখে দেখবে না। ভারত কোনো ম্যাচ না হেরেই ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। সিনিয়র খেলোয়াড়রা দলে না থাকার পরও ভারতের পারফরম্যান্স ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে নেপালের বিপক্ষে মালদ্বীপ যে গতিময় খেলা খেলে তা যদি ধরে রাখতে পারে তাহলে ভারতকে হারানো কঠিন হবে বলে মনে হয় না। দলের ইংলিশ কোচ স্টিফেন কনস্ট্র্যান বলেছেন, ‘ফাইনালে প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবার প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া মালদ্বীপ তো যোগ্য দল, নেপালের বিপক্ষে তারা যে খেলাটা খেলেছে আমি বলব, এমন পারফরম্যান্স এবার কোনো দলই দেখাতে পারেনি। গ্রুপ পর্বে যাইহোক না কেন শিরোপা জিততে হলে তাদের বিরুদ্ধে সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। তা না হলে শিরোপা হাতছাড়া হয়ে যাবে।’ ভারত যখন মালদ্বীপ নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে তখন মালদ্বীপ কোচ পিটার সের্গার বললেন অন্য কথা। ফাইনালে কে শক্তিশালী বা দুর্বল তা ভাবাটা ঠিক নয়। শিরোপা জিততে দুই দলই মাঠে নামবে। আমার বিশ্বাস ছেলেরা হতাশ করবে না। পিটারের এমন কথায় বোঝা যায় সেমিতে জিতে তারা বেশ ফুরফুরে মেজাজে আছেন। কিন্তু কে হাসবে বিজয়ের হাসি। ভারত না মালদ্বীপ? তা জানা যাবে রেফারির শেষ বাঁশি বাজার পরই।

সর্বশেষ খবর