মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বিপলুর গোলে বাংলাদেশের শুভ সূচনা

শাহ্ দিদার আলম নবেল, সিলেট

বিপলুর গোলে বাংলাদেশের শুভ সূচনা

সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের হতাশা ঝেড়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। গতকাল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে লাওসকে হারানোর পর উল্লসিত জামাল, সুফিল, বিপলুরা —বাংলাদেশ প্রতিদিন

কয়েক সপ্তাহ আগে ঢাকার মাঠে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দর্শকদের ঢল নেমেছিল। ট্রফি জিততে না পারলেও গ্রুপ পর্বে দুটি ম্যাচ জিতে সমর্থকদের মন ভরিয়েছিল বাংলাদেশ। ঢাকার ফুটবল মাঠে দর্শকদের ঢল সচরাচর চোখে পড়ে না। সিলেটে দৃশ্যটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে ফুটবল খেলা হলে দর্শকরা দিন কয়েক আগে থেকেই ম্যাচ দেখার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। কাজ কর্ম গুছিয়ে ম্যাচ শুরু হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগেই স্টেডিয়ামে প্রবেশের জন্য লাইনে দাঁড়ান। গতকাল সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে শুরু হলো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। উদ্বোধনী ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল লাওস। ২৫ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন গ্যালারি ছিল দর্শকে পরিপূর্ণ। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের মতো এবারেও শুরুটা দুর্দান্ত হলো। লাওসকে ১-০ গোলে হারিয়ে দর্শকদের খুশি মনেই বাড়ি ফিরিয়েছেন জামাল ভূইয়ারা। এই লাওসের সঙ্গেই কয়েক মাস আগে ২-২ গোলে ড্র করেছিল বাংলাদেশ। লাওসের মাঠে গত মার্চের সেই ম্যাচে শেষ মুহূর্তে গোল করে দলকে পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন সুফিল। এছাড়াও গোল করেছিলেন জাফর।

কোচ জেমি ডে দল মাঠে নামিয়েছিলেন ৪-৩-৩ ফরমেশনে। কাউন্টার আক্রমণের জন্য উপযুক্ত এই ফরমেশনেই আস্থা তার। গতকালও বাংলাদেশের দারুণ কিছু কাউন্টার আক্রমণ চোখে পড়ল। অবশ্য বার বারই আক্রমণগুলো লাওসের ডি বক্সে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলচ্ছিল। সুফিলদের লক্ষ্যভ্রষ্ট শট হতাশ করছিল দর্শকদের। প্রথমার্ধে গোল শূন্য থেকেই দুই দল বিরতিতে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে নেমেও বেশ কয়েকটা গোলের সুযোগ নষ্ট করে বাংলাদেশ। তবে ম্যাচের ৫৯তম মিনিটে এক নাটকীয় গোলে এগিয়ে যায় জেমি ডে’র শিষ্যরা। বাম প্রান্ত থেকে হঠাৎ আক্রমণে যান ২৪ নম্বর জার্সিধারী মোহাম্মদ রবিউল হাসান। তার শট ফিরিয়ে দেন লাওসের গোলরক্ষক স্যামানোলিন। তবে ডি বক্সের ভিতরে সুবিধাজনক স্থানে দাঁড়িয়ে শট নেন বিপলু। দুবারের চেষ্টায় গোল করেন তিনি। তার শেষ শটটা অবশ্য লাওসের ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বল জালে জড়ায়। এই গোলেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ। শুক্রবার বাংলাদেশ গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে ফিলিপাইনের মুখোমুখি হবে। আজ এ গ্রুপের ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নেপাল ও তাজিকিস্তান।

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আসর বসছে ১৯৯৬ সাল থেকে। এর আগে এই টুর্নামেন্ট হয়েছে চারবার। বাংলাদেশ এখনো এই টুর্নামেন্ট জিততে পারেনি। তবে ২০১৫ সালে ফাইনাল খেলেছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। সেবার মালয়েশিয়ার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের কাছে ৩-২ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। আরও একবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আয়োজন করছে বাফুফে। এবার কী করবে বাংলাদেশ! লাওসের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিতে আশা জাগিয়েছেন জামাল ভূইয়ারা। সেমিফাইনাল মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে। ফিলিপাইনের বিপক্ষে ড্র করলেই চলবে। দেখা যাক, বাংলাদেশ এবার আশা পূরণ করতে পারে কি না!

এই জয়ের পর কোচ জেমি ডে বলেছেন, ‘জয় পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত। তবে আরও গোল করার সুযোগ ছিল। সেগুলো আমরা কাজে লাগাতে পারিনি।’ সামনের ম্যাচটাও জয়ের জন্যই খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এদিকে গতকাল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মো. সালাউদ্দিন, পৃষ্ঠপোষক কে-স্পোর্টসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহাদ করীম ও বাফুফের সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ।

সর্বশেষ খবর