মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

৪৭ বছরে মাত্র ১০ বার!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

৪৭ বছরে মাত্র ১০ বার!

বাংলাদেশের বয়স ৪৭। একেবারে কম নয়। অথচ পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই করার দেশটি আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে মাত্র ৯ বার। অবিশাস্য হলেও এটাই সত্যি। গতকাল সিলেটে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের পর্দা ওঠার পর সংখ্যা দাঁড়ালো ১০-এ। এটা ঠিক ৪৭ বছরে দেশে আন্তর্জাতিক আসরের কমতি ছিল না। কিন্তু বাফুফের নিজস্ব টুর্নামেন্ট বলতে এই ১০টিই। ১৯৮১ সালে প্রেসিডেন্ট গোল্ডকাপই ছিল বাফুফের প্রথম নিজস্ব টুর্নামেন্ট। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করেন। কথা ছিল প্রতিবছরই এই টুর্নামেন্ট হবে। অথচ হয়েছে পাঁচবার। ১৯৮১, ১৯৮৩, ১৯৮৭, ১৯৮৯ ও ১৯৯২ সাল। এরপরই টুর্নামেন্টের বিলুপ্তি ঘটে।

১৯৯৬ সালে দেখা মিলে নতুন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের। জাতির জনকের নামকরণে প্রথমবারের মতো মাঠে গড়ায় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। এখানেও একই প্রতিশ্রুতি। বাফুফের সভাপতি তখন ছিলেন মেয়র হানিফ। এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেওয়া হয় জাতির জনকের নামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রতিবছরই হবে। সেই কথা কি বাস্তবে দেখা গেছে? দ্বিতীয় আসর গড়ায় ১৯৯৯ সালে। এরপর যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপেরও দেখা আর মিলবে না। দেখা মিলেছে ঠিকই। ১৬ বছর পর। ২০১৫ সালে তৃতীয় ও ২০১৬ সালে চতুর্থ। এবার নিয়ে হচ্ছে পাঁচ বার।

কথা হচ্ছে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট নিয়ে বাফুফের এমন খামখেয়ালিপনা কেন? ১৯৭৫, ১৯৭৬, ১৯৭৭ ও ১৯৮২ সালে ক্লাবভিত্তিক টুর্নামেন্ট আগাখান গোল্ডকাপ মাঠে গড়ালেও এরপর থেকে লাপাত্তা। অবশ্য এর জন্য বাফুফেকে দায়ী করা যায় না। স্পন্সররা আগ্রহ হারিয়ে ফেললে বিলুপ্তি ঘটে জনপ্রিয় টুর্নামেন্টটি। ১৯৯১ সালে বিটিসি ক্লাব কাপও মাঠে গড়ায় তাও একবার হয়ে শেষ। চট্টগ্রাম আবাহনী শেখ কামাল আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট করে প্রশংসিত হয়েছিল। এটাও এখন নিয়মিত নয়।

বাফুফে কর্মকর্তারা একটাই কথা বলেন, অর্থ সংকটের কারণে নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। এটাও ঠিক খরচ একেবারে কম হয় না। কিন্তু লক্ষণীয় বিষয় যে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ হলে স্পন্সরের ছড়াছড়ি দেখা যায়। তাহলে অর্থটা এখানে ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে কেন? কর্মকর্তাদের আন্তরিকতা থাকলে অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। মজার ব্যাপার হচ্ছে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অর্থের ছড়াছড়ি থাকলেও উন্নতমানের দলের দেখা মিলে না। এ নিয়ে পাঁচ বার হতে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। এমন কোনো দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি যা নিয়ে বাফুফে বাহবা পেতে পারে। এবার বলা হচ্ছে প্রকৃত জাতীয় দলগুলোকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাস্তবে কি দেখা মিলবে। প্রশ্ন উঠতে পারে উন্নতমানের দল এলে বাফুফেতো পাত্তাই পাবে না। কিন্তু দুর্বলরা এসেই বা লাভ হয়েছে কী? বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তি হচ্ছে একবার রানার্সআপই। জাতির জনকের নামকরণে টুর্নামেন্ট। এতে উন্নতমানের দল আসলে আসরের গুরুত্ব কি বাড়ে না? এ কথা কে কাকে বোঝাবে?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর