শিরোনাম
রবিবার, ৭ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

স্ট্রাইকারদের সমস্যা কাটছে না

নাবিব নেওয়াজ জীবনও তো সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না। দারুণ একটা লড়াইয়ের পর পরাজয়ের হতাশা তাই কাটছেই না। বাংলাদেশ জাতীয় দলে স্ট্রাইকার সমস্যা নতুন কিছু নয়।

রাশেদুর রহমান, সিলেট থেকে

স্ট্রাইকারদের সমস্যা কাটছে না

গার্ড অব অনার দেওয়ার অপেক্ষায় সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে দর্শকরা বসে থাকল। বাংলাদেশ দলের পরাজিত সদস্যরা ম্যাচ পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে দর্শকদের দিকে এগিয়ে গেল। অপেক্ষমাণ হাজার হাজার দর্শক দাঁড়িয়ে, হাত তালি দিয়ে দলকে অভিবাদন জানাল। গোলের হিসেবে দলকে পরাজিত বললেও হাজারো দর্শকের কাছে ওটা পরাজয় নয়। বীরত্বপূর্ণ খেলার একটা নেতিবাচক ফল মাত্র। ফুটবলে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে। একটা দল দুর্দান্ত ফুটবল খেলল। মন জয় করল দর্শকদের। কিন্তু দিন শেষে ফলটা নিয়ে গেল অন্য কেউ। কিন্তু এই ফল না পাওয়ার বেদনাও কম নয়। দর্শকদের অভিবাদন গ্রহণ করেও লাল-সবুজের জার্সিধারীরা শান্তিতে নেই। ফিলিপাইনের বিপক্ষে ম্যাচটা জিতেই হোটেলে ফিরতে পারতেন তারা। সিলেটের প্রিয় ফুটবলার মতিন মিয়া শেষ সুযোগটা কাজে লাগিয়ে গোল করতে পারলে নিদেনপক্ষে ড্র নিয়ে ফিরতে পারতো বাংলাদেশ। নাবিব নেওয়াজ জীবনও তো সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না। দারুণ একটা লড়াইয়ের পর পরাজয়ের হতাশা তাই কাটছেই না। বাংলাদেশ জাতীয় দলে স্ট্রাইকার সমস্যা নতুন কিছু নয়। মাঝে মধ্যে দুয়েকজন হঠাৎ করে ভালো করেন। তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে পুরো দেশ। কিন্তু কিছুদিন পরই ঘোর কেটে যায়। চরম বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারে সবাই। এখানে খেলার লোকের অভাব নেই। কিন্তু ‘বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধবে কে’ প্রবাদের মতোই শেষ শটে গোলটা করবে কে, এর উত্তর জানা নেই। ফিলিপাইনের বিপক্ষে ম্যাচেই যেমন জীবন দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি নিজে শট না নিয়ে সতীর্থদের দিয়ে গোল করাতে চেয়েছিলেন। ততোক্ষণে ফিলিপিনো ডিফেন্ডাররা ডি বক্সের সীমানায় নিরাপত্তা বেস্টনি তৈরি করে নেয়। এমনই আরও কত ভুলের সমাহার ছিল ফিলিপাইন ম্যাচে। তৌহিদুল আলম সবুজ গতবার প্রিমিয়ার লিগে স্থানীয় ফুটবলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতা (৮টি)। কিন্তু তিনিও জাতীয় দলের জার্সিতে ম্লান। নতুন করে জীবনকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। তিনিও ব্যর্থ। এই ব্যর্থতা স্ট্রাইকারদেরও কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। ‘আমার বিশ্বাস ছিল, ফিলিপাইন ম্যাচে যে হেডটা করেছিলাম, এটা নিশ্চিত গোল। একটু এদিক-ওদিক হলেই গোলটা হতে পারত। হোটেলে ফিরে ম্যাচের ভিডিও দেখেছি। ওটা দেখার পর রাতে ঘুমাতে পারিনি।’ এভাবেই বললেন নাবিব নেওয়াজ জীবন। তবে তার কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসের সুর ফুটে ওঠে, ‘সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ যেই আসুক না কেন, আমরা সুযোগ পাব। সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। ফিলিপাইন ম্যাচের পর কোচ বলেছেন-তোমরা ভালো খেলেছ; শুধু সুযোগ কাজে লাগাতে পারনি। সেমিতে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।’ আর কোচ জেমি ডে বলছেন, ‘আমি গত কয়েক মাস ধরে তাদেরকে নিয়ে কাজ করছি। এখন তারা অনেক সুযোগ তৈরি করছে। গোল করার মতো অবস্থা নিয়ে আসছে। এগুলো কাজে লাগাতে পারলেই আমরা জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারবো।’ কোচের দাবি, আরও কিছুটা সময় লাগবে এজন্য। পাকাপোক্ত হতে হলে সময়ের প্রয়োজন তো বটেই। কিন্তু সেই সময় যে কতটা প্রয়োজন, তা কেবল ভবিষ্যতেই জানা যাবে।

সর্বশেষ খবর