শুক্রবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ কার?

ফিলিস্তিন-তাজিকিস্তান ফাইনাল আজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ কার?

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনাল খেলার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। ফাইনাল খেলতে পারলে দলের কতটা উন্নতি হবে তার চেয়েও বেশি বিবেচ্য ছিল, দর্শকদের আশা-আকাঙ্ক্ষা অনেকটাই পূরণ হবে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে বাধাগুলো দূর করতে পারলেন না জামাল ভুইয়া-জীবনরা। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের পঞ্চম আসরে বাংলাদেশকে হতাশায় ডুবিয়ে ফাইনালে উঠে এল ফিলিস্তিন। অপরদিকে এল তাজিকিস্তান। টুর্নামেন্টের দুই নবাগত দল। এর আগে তারা কখনো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ খেলতে আসেনি। প্রথমবার খেলতে এসেই বাজিমাত করবে কারা? ফিলিস্তিন নাকি তাজিকিস্তান? আজ সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের পঞ্চম ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে দুই দল।

টুর্নামেন্টজুড়ে দারুণ খেলেছে ফিলিস্তিন ও তাজিকিস্তান। জয়-পরাজয়ের সংখ্যায় অবশ্য এগিয়ে আছে ফিলিস্তিনই। গ্রুপ পর্বেই তো তারা তাজিকিস্তানকে হারিয়েছে ২-০ গোলে। এখনো পর্যন্ত অপরাজিত ফিলিস্তিন। সেমিফাইনালে তারা স্বাগতিক বাংলাদেশকে হারিয়েছে ২-০ ব্যবধানে। সব ম্যাচ জিতে ফিলিস্তিনই ফেবারিট। তবে তাজিকিস্তানও কম শক্তিশালী নয়। টুর্নামেন্টজুড়ে তারা দুর্দান্ত খেলেছে। বিষয়টা ভালোই জানা আছে ফিলিস্তিনি কোচের। তাই প্রতিপক্ষকে কোনো সুযোগ দিতে চান না তিনি। অন্যদিকে তাজিকিস্তানও ফাইনাল জিতে দীর্ঘদিনের শিরোপা খরা ঘুচাতে চায়।

ফিলিস্তিন এক দুর্দান্ত দল গড়ে তুলেছে। মূলত তারা এশিয়ান কাপের জন্য দল গঠন করতে এসেছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে। দলটার মধ্যে বুঝাপড়া দারুণ। নিচ থেকে খেলতে খেলতে উপরের দিকে উঠে আসে তারা। সমুদ্রের ঢেউয়ের মতো একটার পর একটা আক্রমণ চলতেই থাকে। দারুণ এই ছন্দময় আক্রমণ রুখবার সাধ্য খুব কম দলেরই আছে। ছোট ছোট পাসে খেলে ফিলিস্তিন। কখনো বালা কখনো অধিনায়ক আবদেলতিফ দলকে এগিয়ে নেন। দারুণ বুঝাপড়া থাকায় দলটা এখনো পর্যন্ত অপরাজিত টুর্নামেন্টে। গোলের সুযোগ পেলে তা কাজে লাগাতে তারা কখনো ভুল করে না। ফিলিস্তিনের এসব বৈশিষ্ট্য ভালো করেই জানেন তাজিকিস্তানের কোচ আলিশের।

ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ফিলিস্তিন অনেকটা এগিয়ে আছে তাজিকিস্তানের চেয়ে। ফিলিস্তিন আছে ১০০ নম্বরে। তাজিকিস্তান আছে ১২০ নম্বরে। র‌্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকলেও খেলার ধরনে, মানে, গুনে তেমন একটা ব্যবধান নেই দুই দলের মধ্যে। এ কারণেই আজকের ফাইনাল নিয়ে খুব সতর্ক দুই দল। তাজিকিস্তানের কোচ আলিশের বললেন, ‘আমাদের প্রতিপক্ষ খুব শক্তিশালী। তাদের কাছে আমরা গ্রুপ পর্বে হেরেছি। তবে এখানে প্রতিশোধের কোনো ব্যাপার নেই।’ ফাইনালে ফিলিস্তিনকে হারিয়ে শিরোপা নিয়েই ঘরে ফিরতে চান আলিশের। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা এখনো শিরোপা জয় নিয়ে ভাবছে না। তাদের ভাবনায় কেবল দল গঠনের চিন্তা। সামনেই যে বড় টুর্নামেন্ট! বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আগে দুই দলের পরিসংখ্যান ছিল সমানে সমান। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দুটি প্রীতিম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। প্রথম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল তারা। পরের ম্যাচে দুই দলই দুর্দান্ত খেলেছিল। বার বার এগিয়ে গিয়েও কোনো দলই শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। ৩-৩ গোলে ড্র হয়েছিল ম্যাচটা। অবশ্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের গ্রুপ পর্বে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে জয় পাওয়ায় মানসিক দিক দিয়ে অনেকটা এগিয়ে থাকবে ফিলিস্তিন। তবে ফাইনালের চাপ সহ্য করতে পারবে যে দল তারাই হয়ত বিজয়ী হিসেবে মাঠ ছাড়বে।

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের আসর বসছে ১৯৯৬-৯৭ থেকে। প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল মালয়েশিয়ার অনূর্ধ্ব-২৩ দল। ফাইনালে তারা হারিয়েছিল ইন্দোনেশিয়ার ক্লাব পিএসএম মাকাসসারকে। ১৯৯৯ সালে জাপান লিগ একাদশ ফাইনালে হারিয়েছিল ঘানার অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে। দীর্ঘ বিরতির পর ২০১৫ সালে আবার অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। সেবার ফাইনালে বাংলাদেশকে হারিয়ে দেয় মালয়েশিয়ার অনূর্ধ্ব-২২ দল। ২০১৬ বাহরাইনের অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ জিতে নেয় নেপাল। এবার কে জিতে, দেখা যাক!

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর