বুধবার, ৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গ্রুপ সেরা বসুন্ধরা কিংস

রাশেদুর রহমান

গ্রুপ সেরা বসুন্ধরা কিংস

গোলের পর জনি (ডানে) ও সুফিলের উল্লাস —বাংলাদেশ প্রতিদিন

স্প্যানিশ ডিফেন্ডার জর্জ গোটর এবং কোস্টারিকার বিশ্বকাপ খেলা মিডফিল্ডার ড্যানিয়েল কলিনড্রেসের মধ্যে বোঝাপড়াটা চমৎকার। ডিফেন্স লাইন থেকে লম্বা পাসে ফরোয়ার্ড লাইনে বল আদান-প্রদান করেন তারা নিখুঁতভাবে। জর্জ গোটর আর কলিনড্রেসের রসায়ন গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে দারুণভাবে ধরা পড়ল। দিনে দিনে তাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা আরও ভালো হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পরই গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি করছেন তারা। প্রতিপক্ষ নোফেলের রক্ষণভাগে চাপ বাড়াচ্ছেন। কিন্তু দুর্দান্ত ফুটবল খেলেও ম্যাচটা জিতে মাঠ ছাড়তে পারল না শক্তিশালী দল গড়া বসুন্ধরা কিংস। ডি গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে নোফেল স্পোর্টিং ক্লাবের সঙ্গে ১-১ গোলের ড্রয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি করেছে তারা। অবশ্য ড্রয়ের পরও গোল পার্থক্যে গ্রুপসেরা হয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বসুন্ধরা গ্রুপের দলটি। ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে বসুন্ধরা কিংস। অন্যদিকে এক পয়েন্ট নিয়েই ওয়ালটন ফেডারেশন কাপের গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিল নোফেল স্পোর্টিং ক্লাব।

ম্যাচের ১২তম মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত বসুন্ধরা কিংস। কী দুরন্ত একটা ফ্রি কিকই না করেছিলেন কলিনড্রেস। ডি বক্সের বাম প্রান্ত থেকে তার নেওয়া ফ্রি কিক প্রতিপক্ষ নোফেলের গোলকিপার আপেল মাহমুদের আঙ্গুলের ডগায় লেগে আটকে যায়। একটু এদিক-সেদিক হলেই গোলটা হতে পারত। দুর্ভাগ্য কলিনড্রেসের। এরপরও দারুণসব সুযোগ তৈরি করেন কলিনড্রেসরা। প্রথমার্ধে ম্যাচটা পুরোপুরিই নিয়ন্ত্রণ করে বসুন্ধরা কিংস। অবশ্য গোল পেতে ৩৬ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় তাদের। ডি বক্সের বাম প্রান্ত থেকে ইব্রাহিমের পাসে বল পেয়ে ডান পায়ের আলতো ছোঁয়ায় গোলটা করেন মাসুক মিয়া জনি। এগিয়ে যাওয়ার পর যেন আরও দুরন্ত হয়ে উঠে বসুন্ধরা কিংস। তবে অনেক সহজ সুযোগও নষ্ট করেন সবুজরা। ৪২তম মিনিটে ডি বক্সের ভিতরে চমৎকার সুযোগ পেয়েছিলেন সবুজ। তার শটটা জায়গায় দাঁড়িয়েই থামিয়ে দেন গোলরক্ষক আপেল মাহমুদ।

প্রথমার্ধে নোফেল ডিফেন্সিভ খেললেও দ্বিতীয়ার্ধেই তাদের খেলার ধরন পাল্টে যায়। একের পর এক আক্রমণে বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্স লাইনকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেন আশরাফুল-ইসমাইল বাঙ্গুরা। ৬০তম মিনিটে সমতায় ফিরে তারা। মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে ছুটতে শুরু করেন রোমান। তার কাছ থেকে বল পেয়ে ইসমাইল বাঙ্গুরা বসুন্ধরার ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে পাস দেন ডি বক্সের ভিতরে ডান পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আশরাফুল ইসলামকে। তিনি কোনো ভুল করেননি। ঠাণ্ডা মাথায় মাটি ঘেঁষা শটে পরাস্ত করেন বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে। এর পরের মিনিটেই আবারও সুযোগ পেয়েছিলেন ১১ নম্বর জার্সিধারী আশরাফুল। এবার তিনি সুযোগটা নষ্ট করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে প্রথম একাদশের বাইরে রাখা ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার মার্কোসকে মাঠে নামিয়ে দেন অস্কার ব্রুজোন। ৬২তম মিনিটে তিনি মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই যেন বদলে যায় দৃশ্যপট। নোফেল রক্ষণভাগে শক্তি বাড়ায়। তবে মার্কোসকে রুখতে পারেনি। একের পর এক সুযোগ তৈরি করেছেন তিনি। ৭৬তম মিনিটে একটা দারুণ সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি মার্কোস। গোল মিসের মহড়ায় ফেডারেশনকাপে দুর্বল নোফেলের সঙ্গে ড্র করে মাঠ ছাড়ে বসুন্ধরা কিংস। যা অঘটনই বলা যায়।

 মৌসুমের সব শিরোপা জয়ের আশায় দল গড়েছে বসুন্ধরা কিংস। ওয়ালটন ফেডারেশনকাপের শেষ আটে তারা উঠে এসেছে। দেখা যাক, এবার সামনের পথ কতটা সহজে পাড়ি দিতে পারে!

সর্বশেষ খবর