মঙ্গলবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ফুটবলের প্রতিশোধ টেনিসে

রাশেদুর রহমান

ফুটবলের প্রতিশোধ টেনিসে

কী দুঃসহ যন্ত্রণায় যে কাতর হয়েছিলেন লুকা মডরিচরা! গত জুলাইয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ৪-২ গোলে পরাজয়ের ঘটনাটা ক্রোটরা কোনো দিনই ভুলতে পারবে না। একটা বিশ্বকাপ ফাইনালে পরাজয়ের দগদগে ক্ষত যে কী ভয়ঙ্কর তা কেবল ক্রোয়েশিয়ার মতো বুঝতে পারে নেদারল্যান্ডস। আরও অনেকেই ফাইনালে হেরেছে। তবে তাদের দখলে বিশ্বকাপের সোনালি ট্রফিটাও তো আছে! ক্রোয়েশিয়ার পরাজয়ের ক্ষতে তাই কোনো প্রতিশেধক ছিল না। অন্তত দিন এটাই ছিল বাস্তবতা। এবার ক্রোটরা কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারে। ফুটবলে না হলেও টেনিসে দারুণ একটা প্রতিশোধ নিয়েছে তারা। টেনিসের বিশ্বকাপ হিসেবে পরিচিত ডেভিস কাপে ফরাসিদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ক্রোয়েশিয়া। ফরাসিদের মাটিতে পাওয়া এই জয়টা আরও বিশেষ হয়ে থাকল ক্রোটদের কাছে। ক্রোয়েশিয়া প্রথমবার ডেভিস কাপ জিতেছিল ২০০৫ সালে। সেবার তারা স্লোভাকিয়াকে ৩-২ ব্যবধানে পরাজিত করেছিল। এরপর ২০১৬ সালে ফাইনাল খেললেও ক্রোটরা হেরে যায় আর্জেন্টিনার কাছে। এবার ডেভিস কাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে হারিয়েছে ক্রোয়েশিয়া ৩-১ ব্যবধানে। এই জয়ের নায়ক মারিন চিলিচ। ২০১৪ সালে কেই নিশিকুরিকে হারিয়ে প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম জেতা এই ক্রোট তারকা এককের দুটি ম্যাচেই ফরাসিদের পরাজিত করেছেন। ফ্রান্স কেবল দ্বৈতের ম্যাচটা জিতেছে। বিশ্বকাপে ৪-২ গোলে হেরেছিল ফ্রান্স। সেই পরাজয়ের একটা প্রতিশোধ নিয়ে নিল তারা। দ্বিতীয়বারের মতো ডেভিস কাপ জয়ের পর চিলিচ বলেন, ‘স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। আমরা সবাই মিলেই এটা (ডেভিস কাপ) জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলাম।’ ফুটবলের সঙ্গে টেনিসের তুলনাটা যে খুব বেশি বাড়াবাড়ি হবে না এর প্রমাণ দিলেন চিলিচও। তিনি বলেছেন, ‘আমরা দ্রুত রাজধানী জাগরেবে পৌঁছতে চাই। যেভাবে ফুটবলাররা বীরের বেশে ফিরেছিল রাশিয়া থেকে।’ এদিকে পরাজিত হয়ে প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়াকে প্রসংশায় ভাসালেন ফ্রান্সের ডেভিস কাপ টিমের অন্যতম সদস্য লুকাস পুলি। তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের চেয়ে অনেক ভালো খেলেছে। আমরা তাদের এই জয়ের জন্য অভিনন্দন জানাই।’

লুকা মডরিচও গত জুলাইতে এভাবেই ফ্রান্স ফুটবল দলকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন বিশ্বকাপ জয়ের জন্য।

তবে ফুটবল বিশ্বকাপের মূল্যই যে আলাদা! একটা বিশ্বকাপ, পুরো একটা জাতিকে রাতারাতি বদলে দিতে পারে। টেনিসের জনপ্রিয়তা থাকলেও ফুটবলের সঙ্গে কোনোভাবেই তা তুল্য হতে পারে না। লুকা মডরিচদের হৃদয়ে হয়তো ডেভিস কাপ জয়ের বিষয়টা কোনো রেখাপাতই করবে না। কিন্তু ক্রোটরা জাতিগতভাবে কিছুটা স্বস্তি পাবে এ জয়ে। এর প্রমাণ অবশ্য দিয়েছেন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কলিন্ডা গ্রাবার কিটারোভিচ। বিশ্বকাপ ফাইনালে যেভাবে নেচে-গেয়ে ফুটবলারদের উৎসাহ দিয়েছিলেন তিনি ঠিক সেভাবেই ডেভিস কাপ ফাইনালেও চিলিচদের উৎসাহ দিয়েছেন। রাশিয়ার দুঃখটা তিনিও কিছুটা ভুললেন ফ্রান্সের মাটিতে।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর