শুক্রবার, ৩০ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সাকিবের ‘অন্যরকম’ চ্যালেঞ্জ

মেজবাহ্-উল-হক

সাকিবের ‘অন্যরকম’ চ্যালেঞ্জ

চট্টগ্রাম টেস্টে জিতে সিরিজে ১-০তে এগিয়ে বাংলাদেশ। এই টেস্টে জিতে সিরিজ ২-০তে শেষ করতে চাইবে টাইগাররা সেটাই স্বাভাবিক। ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো ক্রিকেট পরাশক্তিকে হারানোর ইতিহাসও পুরনো নয়। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ‘বাংলাওয়াশ’ করার দারুণ সুযোগটা কেন হাত ছাড়া করবে বাংলাদেশ! ঢাকা টেস্টে জিততে পারলে ক্রিকেটাতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে।ক্যাপ্টেন হিসেবে সাকিব আল হাসানও এমন এক স্মরণীয় মুহূর্তের জন্য রোমাঞ্চিত, ‘বাংলাদেশের জন্য স্পেশাল হবে যদি আমরা মনে করি ২-০ তে জিততে পারি। আমরা চাই ২-০ তে জিততে। তার জন্য যা কিছু করা দরকার, যেভাবে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার আমরা সেভাবেই নিচ্ছি।’ জয় ছাড়াও ঢাকা টেস্টে সাকিবের সামনে আজ ‘অন্যরকম’ এক চ্যালেঞ্জ এসে হাজির। অন্যরকম এক লড়াই। মধুর এক যুদ্ধ। সবাই আগেই জেনে গেছে, চট্টগ্রামের মতো ঢাকা টেস্টের উইকেটও হতে যাচ্ছে স্পিনারদের স্বর্গরাজ্য। বন্দরনগরীতে দলে ছিলেন চার জেনুইন স্পিনার-সাকিবের সঙ্গে থাকবেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান। এই চার স্পিনারই প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ক্যারিবীয়দের ২০ উইকেট ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। ৭ উইকেট নিয়ে এগিয়ে রয়েছেন তাইজুল। সাকিবের সঙ্গে নাঈমও নিয়েছেন ৫ উইকেট। বাকি ৩ উইকেট শিকার করেছেন মেহেদী মিরাজ। দলে স্পিনারদের মধ্যে মধুর প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে। এমন প্রতিদ্বন্দ্ব্বিতা বেশ উপভোগই করছেন সাকিব, ‘আমার কাছে মনে হয়, এটা এক্সাইটমেন্টের চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। এটা খুব ভালো একটা কম্পিটিশন তৈরি করবে দলের ভিতরে, আমাদের চার স্পিনারের ভিতরে। আমাদের দুজন লেফট আর্ম স্পিনার আর দুজন অফ স্পিনার, আমাদের নিজেদের ভিতর একটা কম্পিটিশন থাকবে। যেটা দলের জন্য খুবই ভালো।’ এই টেস্টে বাংলাদেশ ড্র করলেও সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাবে। তবে এমন রক্ষণাত্মক চিন্তা করছেন না সাকিব। আবার অতি আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার কথাও ভাবছেন না টাইগার দলপতি। সাকিবের চাওয়া যে যার স্বাভাবিক খেলাটাই প্রদর্শন করুক, ‘আমি সব সময় ফিল করি যার খেলার ধরন যেটা সেটা থেকে বের না হতে। যদি না দলের জন্য খুবই দরকার হয়ে পড়ে। আমি মনে করি যে কারও কোনো ন্যাচারাল গেইম প্ল্যান, সেটা যেন চেইঞ্জ না করে। আমি সব সময় সেটা প্রিফার করি। বিরেন্দ্র শেবাগ টেস্ট ম্যাচে যদি ফার্স্ট বলে চার মারার সুযোগ পায় তাহলে সেটাও চার মারতো, সেটা টি-২০তেও একই, ওয়ানডেতেও তাই। আমার কাছে মনে হয় এই অ্যাপ্রোচটা থাকা খুবই জরুরি।’ চট্টগ্রাম টেস্টটা শেষ হয়েছে মাত্র আড়াই দিনে। উইকেট থেকে বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিয়েছেন স্পিনাররা। কিন্তু মিরপুরের উইকেট কেমন? এটা কি চট্টগ্রামের উইকেটের মতোই হবে নাকি ভিন্ন রকম হবে? এমন প্রশ্নে সাকিব দিয়েছেন কূটনৈতিক উত্তর, ‘আসলে উইকেট দেখে সব সময় প্রেডিক্ট করা যায় না। এটা পৃথিবীর কোনো উইকেটই যায় না। বলতে পারবে এরকম হতে পারে, কিন্তু কেউ বলতে পারবে না এরকমই হবে। যখন খেলাটা শুরু হবে তখন গেলে বোঝা যাবে। আরেকটা জিনিস হচ্ছে টেস্ট ম্যাচ পাঁচ দিনের খেলা। প্রতিদিন উইকেট চেঞ্জ হয়, প্রতি সেশনে উইকেট চেঞ্জ হয়। আসলে কোনো ফিক্সট প্ল্যান মাথায় নিয়ে না খেলাই উচিত। ওপেন মাইন্ডে থাকলে বরং টিমের জন্য ভালো।’ বাংলাদেশ ২০০৯ সালে ক্যারিবীয় দ্বীপে গিয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল। আবার সেই সুযোগ সামনে এসেছে। তবে কাজটা খুব কঠিন বলেই মনে করেন সাকিব, ‘সুযোগ আছে, বাট সুযোগটা কাজে লাগাতে অনেক কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই উইন্ডিজ দল আরও ভালো করার জন্য এক্সাইটেড থাকবে। ওরা ওদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করবে যেন ওরা ভালো করতে পারে, জিততে পারে। আমাদের জিততে হলে ওদের থেকে ভালো পারফর্ম করতে হবে। চট্টগ্রামে যেমন পারফরম্যান্স করেছি তার চেয়েও ভালো পারফর্ম করতে হবে এখানে জিততে হলে।’

সর্বশেষ খবর