বুধবার, ২ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

প্রথমবারেই ফুটবলার জর্জের চমক

রাশেদুর রহমান

প্রথমবারেই ফুটবলার জর্জের চমক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন সেলিম আলতাফ জর্জ। কুষ্টিয়ার ছেলেটা ফুটবলে দারুণ। দিন কয়েক যেতে না যেতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুটবল দল জাত চিনেছিল তার। দলভুক্ত হতে বেশি সময় লাগেনি। এরপর দুরন্ত এই স্ট্রাইকারের কাঁধে অধিনায়কের দায়িত্ব সঁপে দেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়। একজন পেশাদার ফুটবলার হিসেবে নাম লেখান অগ্রণী ব্যাংকে। পরবর্তীতে খেলেছেন বাড্ডা জাগরণীতেও।

সময়টা ১৯৯৪/৯৫। সেসময় বাংলাদেশের ফুটবলে শেখ মো. আসলাম, সাব্বির, কায়সার হামিদ, কাননরা অনেক বড় তারকা। অগ্রণী ব্যাংক ছিল প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব। সেই ক্লাবের জার্সিতে খেলতে গিয়েই কুষ্টিয়া-৪ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জের পরিচয় হয়েছিল ফুটবলের তারকাদের সঙ্গে। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরেই একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে আসলামরা গিয়েছিলেন কুষ্টিয়ায়। প্রচারণা চালিয়েছিলেন জর্জের পক্ষে। কুষ্টিয়ার খোকসা-কুমারখালী এলাকায় বিপুল ভোটে সাবেক এই ফুটবলারকে নির্বাচিত করেছেন ভোটাররা। আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীকে জর্জ ২৭৮৮৬৪ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকের সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি পেয়েছেন ১২৩১৯ ভোট।

ফুটবল ছেড়ে আইন পেশায় নিয়োজিত সেলিম আলতাফ জর্জ। তবে রাজনীতিতে তার আগমন হঠাৎ করেই হয়নি। জর্জ বলেন, ‘রাজনীতিতে আমার আগমন হঠাৎ করেই হয়নি। আমার পূর্ব পুরুষরা রাজনীতির সঙ্গে ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছেন। ১৯৭৩ সালে আমার দাদা শহীদ গোলাম কিবরিয়া কুষ্টিয়া থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আমার চাচাও রাজনীতি করেছেন।’ রাজনৈতিক পরিবারের এই সন্তান প্রথমবারের মতো মনোনয়নপত্র চাইলে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও সম্মতি দেন। আর প্রথমবারেই তাকে কুষ্টিয়ার মানুষ আপনজন হিসেবে গ্রহণ করেছে। নির্বাচিত হওয়ার পর সেলিম আলতাফ বলেন, ‘ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করতে চাই আমি। প্রথমত, আমাদের অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন প্রয়োজন। কারণ, মাঠের অভাবে এখন খেলার প্রতি আগ্রহটাই কমে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে দায়িত্ব পেলে সারা দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নের উপর জোর দিব। আর দায়িত্ব না পেলেও নিজের এলাকায় খেলাধূলার উন্নয়নে কাজ করব।’ কেবল খেলাধুলাই নয়, সেলিম আলতাফ উন্নয়নমুখী দেশটাকে আরও উন্নত করে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রাখতে চান বলে জানিয়েছেন। বাড্ডা জাগরণীতে সেলিম আলতাফ জর্জ খেলেছেন ১৯৯৭-৯৮ সালে। স্ট্রাইকার হিসেবে তার বেশ নামডাক ছিল সেসময়। ফুটবলের মাঠ থেকে রাজনীতির মাঠে চলে এসেছেন তিনি। নির্বাচিত হয়ে স্থান করে নিয়েছেন জাতীয় সংসদে। আগামী দিনগুলোতে সেলিম আলতাফ জর্জ কেবল সামনের দিকেই এগিয়ে যেতে চান। তার এই স্বপ্ন পূরণে খেলার জগতের অন্যরাও নিশ্চয়ই পাশে থাকবেন। বাংলাদেশ ফুটবলের অন্যতম তারকা আবদুস সালাম মুর্শেদী খুলনা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। সাবেক ফুটবলার যেমন আছেন সংসদে। ক্রিকেটাররাও তো আছেন। মাশরাফি বিন মর্তুজা এবং নাঈমুর রহমান দুর্জয়। তাছাড়া ক্রীড়া সংগঠকরা তো আছেনই। এবার ক্রীড়া-উন্নয়নে একটা যজ্ঞ শুরু হবে বলেই ধারণা করা যায়!

সর্বশেষ খবর