রবিবার, ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

কিংস এগোচ্ছে কিংয়ের মতোই

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কিংস এগোচ্ছে কিংয়ের মতোই

গোপালগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভেন্যুতে টপ ফেবারিট বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচ। টানা তিন ম্যাচ জিতলেও মুক্তিযোদ্ধাকে গতকাল গুরুত্ব দিয়ে মাঠে নেমেছিল ইতিহাস গড়ার অপেক্ষায় দলটি। কেননা এই ভেন্যুতে ঘরের মাঠে ফামুসার হ্যাটট্রিকে আরেক ফেবারিট শেখ জামালকে পরাজিত করে মুক্তিযোদ্ধা। ৩-০ গোলে হেরে যান সলোমন কিংরা। যা সাম্প্রতিককালে ঘরোয়া ফুটবলে বড় অঘটনই বলা যায়। বসুন্ধরা কিংস ঠিকই জিতে নিয়েছে ৩-১ গোলে।

যতই শক্তিশালী হোক না কেন, অ্যাওয়ে ম্যাচে মুক্তিযোদ্ধাকে গুরুত্ব দিয়েই মাঠে নেমেছিল বসুন্ধরা কিংস। লাভ হয়েছে জয়ের চাকা সচল রেখেছে। টানা চার ম্যাচ জিতে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেল কিংস। ঢাকা আবাহনী এক ম্যাচ বেশি খেলে ১২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে। তবে গোল ব্যবধানে তারা দ্বিতীয়স্থানে আছে। চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয়স্থানে আছে আরেক ফেবারিট শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।

নতুন দল হিসেবে অভিষেকেই স্বাধীনতা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ঘরোয়া ফুটবলে নতুন ইতিহাসে গড়ে বসুন্ধরা কিংস। গতকাল মুক্তিযোদ্ধাকে ৩-১ গোলে হারিয়ে আরেক নতুন রেকর্ড গড়ল তারা। কেননা এর আগে কোনো দলই অভিষেকেই লিগে টানা চার ম্যাচ জিততে পারেনি। কিংসের অবশ্য এই রেকর্ডে কোনো যায় আসে না। শিরোপা জিততেই মাঠে নেমেছে তারা। দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রথম ম্যাচে শেখ জামাল, পরের ম্যাচে ঢাকা আবাহনী আর নোফেলকে হারিয়ে ছিল। কিংসই একমাত্র দল যারা এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচে হোঁচট খায়নি। অপ্রতিরোধ্য কিংস এগিয়ে যাচ্ছে কিংসের মতোই। স্প্যানিশ কোচ অস্কার তার শিষ্যদের ছক এঁকেই মাঠে নামান। সেভাবে খেলেই পুরো পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বসুন্ধরা কিংস। গোপালগঞ্জ শেখ ফজলুল হক মনি স্টেডিয়ামে দর্শকদের দৃষ্টি ছিল কোস্টারিকার ড্যানিয়েল কলিনড্রেসের দিকে। কেননা এই প্রথম গোপালগঞ্জে বিশ্বকাপ খেলা খেলোয়াড়ের দেখা মিলেছে। সব নজর কলিনড্রেস কেড়ে নিলেও গতকাল কিংসের স্থানীয় ফুটবলাররা দারুণ খেলেছেন। বিশেষ করে মতিন মিঞার পরিশ্রমী খেলা দেখে সবাই মুগ্ধ। তবে গোলের সূচনা করেন সুশান্ত ত্রিপুরা। যাকে ফেডারেশন কাপ ফাইনালে বিতর্কিতভাবে লাল কার্ড দেখানো হয়। শুরু থেকেই বসুন্ধরা কিংস গতিময় ফুটবল খেলে। পরিকল্পনা ও একে অপরের মধ্যে চমৎকার সমন্বয় থাকায় মাত্র ৯ মিনিটের মাথায় ত্রিপুরার গোলে এগিয়ে যায় কিংস। তবে এই উল্লাস বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না। ১৯ মিনিটে মুক্তিযোদ্ধার ইউসুকি সমতা ফেরান। গোলের সুযোগ নষ্ট করায় বসুন্ধরা কিংস প্রথমার্ধে আর গোল পায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে উজ্জীবিত হয়ে খেললেও প্রতিপক্ষের জালে বল জড়াতে পারছিল না। একের পর এক সহজ সুযোগ হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছিল। ৭১ মিনিটে বসুন্ধরা কিংসের স্বস্তি এনে দেন মতিন মিঞা। এবারে লিগে একের পর এক গোল করে যাচ্ছেন তিনি। ৭৫ মিনিটে গ্যালারিতে উল্লাসটা একটু বেশি নজরে আসে। কলিনড্রেস গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন।

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসার দিনে নীলফামারীতে নিজ ভেন্যুতে বসুন্ধরা কিংস লড়বে রহমতগঞ্জের বিপক্ষে। সামনে আরও দুর্বার হয়ে উঠবে এই প্রত্যাশা কিংস সমর্থকদের।

ম্যাচের আগে টুঙ্গিপাড়ার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করে বসুন্ধরা কিংসের কর্মকর্তারা। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ক্লাব সভাপতি ইমরুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিনহাজসহ অন্য কর্মকর্তারা। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে পেশাদার লিগের আরেক খেলায় ১-১ গোলে ড্র করেছে নোফেল ও রহমতগঞ্জ। টানা তিন ম্যাচ হারের পর এ ড্রয়ে প্রথম পয়েন্ট পেল নোফেল। বিপরীতে রহমগঞ্জের এটা তৃতীয় ড্র। ২৫ মিনিটে পুরনো ঢাকার দল রহমতগঞ্জকে এগিয়ে নেন কঙ্গো স্ট্রাইকার সিও জুনাপিও। ৫০ মিনিটে নোপেলের সমতা সূচক গোলটি করেন মোহাম্মদ নোমান। নোফেলের পয়েন্ট চার ম্যাচে ১ এবং রহমতগঞ্জের ৫ ম্যাচে ৩।

সর্বশেষ খবর