মঙ্গলবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

হকিতে নির্বাচনী হাওয়া

ক্রীড়া প্রতিবেদক

হকিতে নির্বাচনী হাওয়া

প্রায় এক বছর ধরে দেশের হকি পরিচালিত হচ্ছে অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে। নিয়মানুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে অ্যাডহক কমিটি ভেঙে দিয়ে নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা। শুধু হকি নয়, আরও কয়েকটি ফেডারেশনও দীর্ঘদিন অ্যাডহকেই আটকিয়ে আছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এ নিয়ে মাথাব্যাথ্যা নেই। নির্বাচনের প্রস্তুতির ব্যাপারে ফেডারেশনকে তাদেরই তাগাদা দেওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে হকি ফেডারেশনই বরং এগিয়ে এসেছে।

বাংলাদেশের হকির কিংবদন্তি আবদুস সাদেক বর্তমানে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক। সত্যি বলতে কি হকির অচল চাকা সচল হয়েছে তারই তৎপরতায়। যোগ্য লোকের হাতে দায়িত্ব এসে পড়ায় হকিতে ফিরে এসেছে প্রাণ। সাবেক তারকা খেলোয়াড় খাজা রহমত উল্লাহ কমিটিতে থাকা অবস্থায় হকি উন্নয়নে তিনিও যথেষ্ট পরিশ্রম করেন। ৩২ বছর পর ঢাকায় এশিয়ান কাপের আয়োজন হয়। স্বপ্নের ফ্লাড লাইটও বসানো হয় হকি স্টেডিয়ামে। নীলটার্ফ, ইলেকট্রনিকস বোর্ড সবই এখন মিলেছে।

সাদেক-রহমত উল্লাহ্ বা গত কয়েক বছর ধরে যারা হকি পরিচালিত করছেন তাদের অবদানের কথা ভোলবার নয়। একজন যোগ্য সংগঠকের কতটা প্রয়োজন। রহমত উল্লাহ্র মৃত্যুর পর ক্রীড়ামোদীরা তা উপলব্ধি করছে। তবু হকি উন্নয়ন বা অগ্রগতির জন্য দরকার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি পরিচালিত হওয়া। ক্রীড়া পরিষদ নীরব থাকলেও এগিয়ে এসেছেন অ্যাডহক কমিটিই। হকি উন্নয়নে তারা চায় দ্রুত নির্বাচন। এরপরই তৎপর হয়ে উঠেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ। তবে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করার আগেই কাজগুলোতো গুছিয়ে আনতে হবে। তা এখন করছে হকি ফেডারেশন। কাউন্সিলর নাম ঠিক করে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তা জমা দেওয়া হবে।

বিভাগীয় জেলা, ক্লাব, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বা বিভিন্ন সংস্থা মিলিয়ে কাউন্সিলারের সংখ্যা প্রায় ৮৫ জন। এরাই ভোটার বা প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা রাখবেন। কবে নির্বাচন তা নিশ্চিত নয়,তবে সব কিছু ঠিকভাবে এগোলে আগামী মাসেই হকির নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। হকির নির্বাচন ঘিরে এখন চলছে নানা আলোচনা। বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী কারা হবেন এ নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে।

হকির সচেতন মহল চাচ্ছে যোগ্য লোকই সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে বসুক। এতে সচল চাকা অচল হওয়ার আশঙ্কা নেই। এ নিয়ে নাকি কিছুদিন আগে একটি ক্লাবে আলোচনায় বসেন কর্মকর্তারা। তারা চান সাধারণ সম্পাদক পদে যোগ্য লোকই বসুক। তারা চাইলে তো হবে না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যে কোনো কাউন্সিলর সাধারণ সম্পাদক বা অন্য পদে প্রার্থী হতে পারেন। এটাই গণতন্ত্রের নিয়ম।

সাধারণ সম্পাদক পদটি গুরুত্বপূর্ণ বলেই এ নিয়ে আলোচনাটা হচ্ছে বেশি। এটাই স্বাভাবিক, প্রার্থী এক বা একাধিক হোক তা নিয়ে কারও আপত্তি নেই। কিন্তু যে আলামত পাওয়া যাচ্ছে তা হকির জন্য বড় হুমকিই বলা যায়। নির্বাচন কবে হবে তার কোনো ঠিক নেই। এরই মধ্যে নাকি শুরু হয়ে গেছে নানা নোংরামি বা পলিটিক্স। ভোট টানতে অর্থ ছড়ানো হচ্ছে। শুধু তাই নয় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে ভোটারদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাচ্ছে। মতিঝিল ক্লাব পাড়ায় নাকি চলছে ভয়ভীতির মহড়া। প্রশ্ন উঠতে পারে যেখানে কাউন্সিলরের নাম চূড়ান্ত হয়নি। যেখানে ভোট, অর্থ উড়ানো কিংবা ভয়ভীতি দেখানোর প্রসঙ্গ আসবে কেন? বিষয়টি জটিল আবার কঠিনও নয়। কারণ কারা কাউন্সিলর হচ্ছে তা ইতিমধ্যে সবার জানা হয়ে গেছে। সেভাবে কাউন্সিলর বেছে বেছে একটি বিশেষ মহল ষড়যন্ত্রে ব্যস্ত। এসব যদি সত্যি হয়ে থাকে তা হলে সামনে হকির জন্য কি অপেক্ষা করছে? নির্বাচনের মাধ্যমে যারা জিতবে তারাই কমিটিতে ঠাঁই পাবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অর্থের প্রলোভন আর ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কেউ যদি বড় দায়িত্বে বসে যায় তাহলে হকির সর্বনাশ ছাড়া আর কিছু হবে কি? হকি বাংলাদেশের তিন জনপ্রিয় খেলার একটি। এখন কারও ভয়ভীতিতে সব কিছু থমকিয়ে যায় তা কতটুকু মঙ্গল হবে ক্রীড়াঙ্গনে প্রভাবশালী মহলকে ভাবতে হবে। নির্বাচন মানে নিশ্চয় এই নয় যা খুশি করে পদ পাওয়া।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর