বৃহস্পতিবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

কাউন্সিলর নিয়ে যত কথা

ক্রীড়া প্রতিবেদক

কাউন্সিলর নিয়ে যত কথা

নির্বাচনের অপেক্ষায় হকি ফেডারেশন। অ্যাডহক কমিটি বিলুপ্তি করাটা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। তবে এখনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। মার্চের শেষ বা এপ্রিলের প্রথম দিকে হকি ফেডারেশনের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফেডারেশন ইতিমধ্যে গঠনতন্ত্র ও হালনাগাদ কাউন্সিলর তালিকা জমা দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে। ক্লাব, জেলা, বিভাগীয় ক্রীড়া ও বিভিন্ন সংস্থা মিলিয়ে কাউন্সিলরের সংখ্যা ৮০ জন। এরপর আবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের যোগ হবে আরও পাঁচজন। অর্থাৎ ৮৫ জনই প্রার্থী বা ভোটার হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।

যোগ্য সংগঠকরা দেশের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা হকির কাউন্সিলর হবেন এটাই স্বাভাবিক। যোগ্যতার কাছে অর্থ বা প্রভাবের কোনো মূল্য নেই। হকি যারা বোঝেন বা এত বড় ফেডারেশন পরিচালনায় যারা যোগ্যতা রাখেন তারাই নির্বাচিত হয়ে চেয়ারে বসবেন এটাই ক্রীড়ামোদীদের প্রত্যাশা। তা কি বাস্তবায়িত হবে? কেননা তফসিল ঘোষণা না হলেও হকির নির্বাচন ঘিরে যা শোনা যাচ্ছে তা মোটেই সুখকর নয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যে কোনো কাউন্সিলর যে কোনো পদে প্রার্থী হতে পারেন। এখানে কোনো বাধা নেই।

কিন্তু কেউ যদি ভোট পেতে নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখায় তাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাঘাত কি ঘটবে না? জানি না জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ খোঁজখবর রাখছে কিনা। বাস্তবে নাকি অর্থ উড়ানো ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে? গত কয়েক বছর ধরে হকির মান আহামরি উন্নয়ন না হলেও চাকা কিন্তু সচল রয়েছে। ৩২ বছর পর ২০১৮ সালে ঢাকায় এশিয়া কাপের মতো বড় আসর বসেছে। ফ্লাডলাইটে রাতে খেলার ব্যবস্থা, নীল টার্ফ, ইলেকট্রনিক্স বোর্ড সবই হয়েছে। বিশৃঙ্খলাকারদের কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। লিগে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল দেরিতে হলেও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধানও করেছিল ফেডারেশন। এখন কি হকির সেই সচল চাকা কিংবা পরিবেশ ঘোলাটে করার জন্য বিশেষ কোনো মহল ষড়যন্ত্রের জাল বুনছে কী। তা না হলে নির্বাচন ঘিরে এসব অভিযোগ উঠছে কেন? কেউ কাউন্সিলর হবে বা হবে না তা ক্লাব কিংবা সংস্থার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু কাউন্সিলর নিয়েও বিতর্ক উঠেছে। বিশেষ করে দেশের ঐতিহ্যবাহী এক ক্লাব যা করেছে তা সত্যিই লজ্জাকর। দেশের হকিতে ক্লাবটির অবদান কোনোভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। তবে এই ক্লাবের হকির সাফল্যের পেছনে এক সাবেক খেলোয়াড় ও সংগঠকের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এক যুগের বেশি সময় ধরে এই সংগঠক প্রায় নিজ অর্থে দলটির হকি পরিচালনা করেছে। তিনি আবার দলটির অন্যতম স্থায়ী সদস্যও। অথচ এমন এক নিবেদিত সংগঠককে এড়িয়ে ক্লাবটি এবার কাউন্সিলর করেছে আরেকজনকে। যিনি কখনো এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে কোনো খেলার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। যাক কাকে কাউন্সিলর করবে বা করেছে এটি ক্লাবের নিজস্ব ব্যাপার। তবে ক্লাবের পেছনে এত বড় ত্যাগ স্বীকার করার পরও তাকে বঞ্চিত করা নিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে নানারকম আলোচনা হচ্ছে। আসা যাক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের কাউন্সিলরশিপ নিয়ে। ক্রীড়াঙ্গন পরিচালিত হয় ক্রীড়া পরিষদের মাধ্যমে। এখানে কাউন্সিলরের যে কোটা রয়েছে তা সম্মানিত ক্রীড়া ব্যক্তিদের জন্য। এখানে ক্লাব বা সংস্থার কোনো গুরুত্ব নেই। দেখতে হবে তাদের যোগ্যতা বা ব্যাকগ্রাউন্ড। জানি না হকি নির্বাচনের ক্রীড়া পরিষদ কাদেরকে কাউন্সিলর দিচ্ছে। তবে তা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে হবে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকে। অনেকে বলেন, একজনের বেশি কোনো ক্লাবের কাউকে কাউন্সিলর করা উচিত নয় ক্রীড়া পরিষদের।

কথাটা কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে ভাবতে হবে। অযোগ্য ব্যক্তি অথচ ক্লাবগুলোকে ভাগাভাগি করে কাউন্সিলর দিতে হবে এই নিয়ম কি ক্রীড়া পরিষদের গঠনতন্ত্রে আছে? হকির নির্বাচনে কেউতো আর মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেন না। এক ক্লাবের একের অধিক কাউন্সিলর দিলে ক্ষতি কি? দেখতে হবে তিনি হকির জন্য পুরোপুরি যোগ্য কিনা। তাছাড়া কোনো ক্লাবে খেললেই যে কেউ ওই ক্লাবের লোক হয়ে গেল তা ভাবাটা কতটা যৌক্তিক।

এখানে আবার যারা হকিতে আর্থিক সহযোগিতা করে তাদেরকেও গুরুত্ব দিতে হবে। অর্থ দেবেন অথচ সামান্য সম্মানটুকু পাবেন না তা কি হয়? ক্রীড়া পরিষদকে এসব গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। কে কি বলল তাতে কোনো কিছুই আসে যায় না। হকিতে অবদান ও যোগ্যতা বিচার করেই কাউন্সিলর দিতে হবে। কোনো ক্লাব কম বা বেশি পেল তা কোনো ফ্যাক্টর নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর