সোমবার, ১১ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ফুটবলে জেগে ওঠার স্বপ্ন

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফুটবলে জেগে ওঠার স্বপ্ন

এক ম্যাচ জিতলেই ফুটবলারদের প্রশংসা করতে হবে এর কোনো যুক্তি নেই। তবে জয় পাওয়াটা যেখানে ভাগ্যের ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে সেখানে প্রশংসা না করলে নয়। ক্রিকেটে বাংলাদেশের জয় অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। ফুটবলে ঠিক উল্টোটা। শিরোপা তো এখন স্বপ্ন। প্রতিপক্ষ যতই দুর্বল হোক না কেন জয় আশা করা যায় না। অথচ এক সময়ে ফুটবলে বাংলাদেশ গুনে গুনে গোল দিত মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান ও ভুটানকে। জাতীয় দল কেন মোহামেডান-আবাহনীর কাছেও উল্লেখকরা দেশগুলোর চ্যাম্পিয়নরা গোলের বন্যায় ভেসে যেত। সেসব বর্তমান প্রজন্মের ক্রীড়ামোদীদের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হবে। তাদেরই বা দোষ কীসের! বাংলাদেশই তো এখন মালদ্বীপের সামনে দাঁড়াতে পারে না। নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা বা ভুটানকে হারাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। যে ভুটান এক সময়ে কম গোল দেওয়ার জন্য হাত জোড় করে অনুরোধ রাখত তারাই কি না বাংলাদেশকে হারাচ্ছে। শনিবার কম্বোডিয়ার মাটিতে কম্বোডিয়াকে প্রীতিম্যাচে হারিয়ে বাঁধভাঙ্গা উচ্ছ্বাস করেছে বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ফেসবুকে দৃশ্যটি দেখে মনে হয়েছে চ্যাম্পিয়নই যেন হয়ে গেছে বাংলাদেশ। উৎসব তো হবেই, কেননা জয় পাওয়াটা বাংলাদেশের কাছে বড় প্রাপ্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা কথা না বললেই নয়, কিছুদিন আগেও ফুটবলারদের সমালোচনা করে বলা হতো ৯০ মিনিটের লড়াইয়ে ৫০ মিনিট খেলার দম নেই। বাস্তবে কিন্তু তাই দেখা গেছে। প্রথমার্ধটা কোনোভাবে পার করে দিলেও দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের ফুটবলাররা রীতিমতো হাঁপাত। এই কারণে অনেক সময় শেষ মুহূর্তের গোলে হার মেনেছে। এখন উল্টো বাংলাদেশ শেষের দিকে গোল করে জিতছে। ২০১৫ সালে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে মালয়েশিয়া ক্লাবভিত্তিক দলের কাছে ফাইনালে ২-০ গোলে পিছিয়ে ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে ২ গোল শোধাও করে দিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে দম হারিয়ে গোল খেয়ে সব শেষ বাংলাদেশের। দম ঘাটতির বদনামটা বোধ হয় ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। জার্কাতা এশিয়ান গেমসে ও শেষ মুহূর্তে গোল বাংলাদেশ হারিয়েছে কাতারকে। যারা কি না এখন এশিয়া চ্যাম্পিয়ন। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে সেমিফাইনালে না খেললেও গ্রুপের ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়েছিল শেষের দিকে। ৮০ মিনিটে ম্যাচে গোল না হওয়া মানে ম্যাচের ড্রটাই ধরে নেওয়া যায়। কিন্তু বাংলাদেশ জানপ্রাণ দিয়ে লড়াই করে ম্যাচ জিতেছে। সুফিলের পাসে রবিউল অসাধারণ গোল করেন। রবিউল নেমেছিলেন বদলি হিসেবে। কোচ জেমি ডের চিন্তাটাও ছিল চমৎকার। দেখছিলেন বিপলু ঠিকমতো আক্রমণে যেতে পারছিলেন না। রবিউল নামালে গোল পেতে পারে। সেটাই করলেন এবং সফলও হন। এই জয় বাংলাদেশের ফুটবলে পরিবর্তন এসেছে তা বলা না গেলেও এটা বলা যায় ফুটবলাররা এখন উজ্ববীত। বিশেষ করে সামনে বাহরাইনে এএফসি অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলে শক্তির টনিক হিসেবে কাজ করবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর