নারী ক্রিকেটে ভারত ভয়ংকর প্রতিপক্ষ। বিশেষ করে এশিয়া কাপে। এই টুর্নামেন্টে ভারতের আধিপত্য প্রশ্নাতীত। ২০০৪ সালে শুরু এশিয়া কাপের টানা ৯ আসরের ফাইনাল খেলছে ভারত। আগের আট আসরের সাতবারের চ্যাম্পিয়ন। আগামীকাল অষ্টম শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে খেলবেন হারমানপ্রীত কাউর, স্মৃতি মান্ধানা, রেনুকা সিংরা। গতকাল ডাম্বুলার রাংগিলি স্টেডিয়ামে নারী টি-২০ এশিয়া কাপের প্রথম সেমিফাইনালে ভারতের সঙ্গে পাত্তাই পাননি নিগার সুলতানারা। ব্যাটিং, বোলিং-কোনো বিভাগেই লড়াই করতে পারেননি। একপেশে লড়াইয়ে নিগাররা হেরেছেন ১০ উইকেটের আকাশসমান ব্যবধানে। এবার নিগাররা স্বপ্ন দেখেছিলেন ২০১৮ সালের পর পুনরায় ফাইনাল খেলার। ছয় বছর আগে প্রথম ও শেষবার এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। সেবার মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। সেবারই প্রথম ফাইনালে হেরেছিল ভারত।
আগামীকাল ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। পাকিস্তান ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৪০ রান করেছিল। স্বাগতিকরা সেটা টপকে যায় ১ বল হাতে রেখে।
গত মার্চে ঘরের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলেছিল নিগার বাহিনী। সিলেটের ওই সিরিজে বিন্দুমাত্র লড়াই করতে পারেনি। তারপরও সিরিজের ভুলগুলো শুধরে ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখেছিলেন এশিয়া কাপে। তার ওপর অক্টোবরে ঘরের মাটিতে ১০ জাতির নারী টি-২০ বিশ্বকাপ। আয়োজক হিসেবে ভালো কিছুর স্বপ্ন দেখছেন নিগাররা। অথচ দলের ব্যাটিং লাইন যাচ্ছেতাই। দুর্বল শক্তির দলগুলোর সঙ্গে ভালো করলেও পরীক্ষিত শক্তির বিপক্ষে নাজেহাল হচ্ছে। এশিয়া কাপে থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দাপুটে জয় পেয়েছে। রান করেছেন দিলারা আক্তার, মুর্শিদা খাতুন ও নিগার। গতকাল ভারতের শক্তিশালী বোলিংয়ের বিপক্ষে নিগার ছাড়া আর কেউই লড়াই করতে পারেননি। শেষদিকে শুধু কিশোরী স্বর্ণা আক্তার রান করেন। নিগার বরাবরের মতো গোটা আসরে ধারাবাহিকভাবে রান করেছেন। রেনুকা সিং, রাধা যাদবদের সাঁড়াশি আক্রমণে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল ২০ ওভারে ৮ উইকেটে মাত্র ৮০ রান করে। এর মধ্যে একাই ৩২ রান করেন অধিনায়ক নিগার। ধীরলয়ে ব্যাটিং করলেও দলের মূল ব্যাটিং ভরসা নিগার। গতকাল ৫১ বলের ইনিংসটিতে ছিল ২টি চার। শেষদিকে স্বর্ণা ১৮ বলে ১৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন। নিগার আসরের ৪ ম্যাচের তিনটিতে ব্যাট করে ১৪২ গড়ে ১৪২ রান করেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অপরাজিত ৪৮, মালয়েশিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ৬২ ও গতকাল ৩২ রান করেন। ম্যাচসেরা রেনুকা সিংয়ের স্পেল ৪-১-১০-৪।
৮১ রানের লক্ষ্যমাত্রা ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনের জন্য আহামরি কিছু নয়। দুই ওপেনার শেফালি ভার্মা ও স্মৃতি মান্ধানা দেখেশুনে ৬৪ বল হাতে রেখে ১০ উইকেটের জয় তুলে নেন। ভারত টানা নবমবার এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলবে।
থাকেন ৫৫ রানে। তার ৩৯ বলের ইনিংসটিতে ছিল ৯টি চার ও একটি ছক্কা। শেফালি অপরাজিত থাকেন ২৬ বলে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ইনিংস
৮০/৮, ২০ ওভার (দিলারা আক্তার ৬, মুর্শিদা খাতুন ৪, ইশমা তানজিম ৮, নিগার সুলতানা ৩২, রিতু মনি ৫, স্বর্ণা আক্তার ১৯*। রেনুকা সিং ৪-১-১০-৩, পূজা ভাস্ত্রকার ৪-০-২৫-১, দীপ্তি শর্মা ৪-০-১৪-১, রাধা যাদব ৪-১-১৪-৩)।
ভারত ইনিংস
৮৩/০, ১১ ওভার (শেফালি ভার্মা ২৬*, স্মৃতি মান্ধানা ৫৫*। মারুফা আক্তার ২-০-১৭-০, রাবেয়া খান ২-০-১০-০, রুমানা আহমেদ ১-০-৫-০)।
ফল : ভারত ১০ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা : রেনুকা সিং