আওয়ামী লীগ পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন হয়েছে। এরপরও ক্রীড়াঙ্গনে আতঙ্ক কাটছে না। একের পর এক ক্লাবগুলো ভাঙচুর ও লুটপাটের উৎসব চলছে। কোনোভাবে ঠেকানো যাচ্ছে না। দেশের অন্যতম শীর্ষ ও জনপ্রিয় ক্লাব ঢাকা আবাহনী ভাঙচুর করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টা পরই। ৫২ বছরের ইতিহাসে তারা যেসব ট্রফি জিতেছিল সব লুটপাট করেছে হামলাকারীরা। কয়েক লাখ টাকাও সঙ্গে নিয়ে গেছে তারা।
রক্ষা পায়নি আরেক জনপ্রিয় ক্লাব শেখ জামাল ধানমন্ডিও। গত বুধবার দুপুরে হামলা ও লুটপাটের তাণ্ডবলীলা চলেছে। অবাক লাগে এমন ঘটনার পরও নিরাপত্তারক্ষীদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব নেই। ক্রীড়াঙ্গনে যে ক্লাব সবেমাত্র যাত্রা শুরু করেছিল সেই ফর্টিস এফসিতেও ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। দলের ম্যানেজার রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘একটি কোচিং কোর্সে আমি মালয়েশিয়ায় ছিলাম। ক্লাবে এসে দেখি ভঙ্গুর অবস্থা। ফর্টিস ক্রীড়াঙ্গনের একটি ক্লাব এখানে কেন এমন করা হলো তা বুঝে উঠতে পারছি না।’
ক্লাব লুটপাটের ঘটনায় কর্মকর্তা ও খেলোয়াড়রা শঙ্কিত। এ অবস্থায় তারা খেলাধুলায় অংশ নিতে পারবে কি না তা নিয়ে দুশ্চিতায় রয়েছেন। তিনটি ক্লাবই দেশের ফুটবলে সর্বোচ্চ আসর প্রিমিয়ার লিগে খেলে থাকে। নতুন মৌসুমের জন্য তারা বড় বাজেটে দল গঠনের প্রক্রিয়াও শেষ করেছে। চলতি মাসেই ফুটবলে দল বদলের কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা। এরপরই নতুন মৌসুম শুরু হওয়ার কথা সেপ্টেম্বর থেকেই। প্রশ্ন হচ্ছে এই ভীতিকর পরিস্থিতিতে ঘরোয়া ফুটবল নির্ধারিত সময়ে গড়াতে পারবে কি না? মতিঝিল ক্লাব পাড়াতেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুল, ওয়ান্ডারার্স, আরামবাগ, ভিক্টোরিয়া, ওয়ারী এমনকি ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান ক্লাবেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। দলের সাবেক এক ফুটবলার বলেছেন, ‘আমাদের দায়িত্বশীল বেশ কয়েক কর্মকর্তা কোথায় আছেন তা আমাদের জানা নেই। এ অবস্থায় আমরা কী করব তা বুঝে উঠতে পারছি না।’
ক্রীড়াঙ্গনে সর্বত্র আতঙ্ক, সুস্থ পরিবেশ ফিরিয়ে তা সচল করার দায়িত্ব তো অন্তর্বর্তী সরকারের। আসিফ মাহমুদ সজীব ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হয়েছেন। তিনি যত দ্রুত উদ্যোগ নেবেন ততই মঙ্গল।