সামনের মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন (২৬ অক্টোবর)। এই নির্বাচন ঘিরে ফুটবল অঙ্গন বেশ সরব হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বর্তমান সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন নির্বাচন না করার ঘোষণা দেওয়ার পর। কে হবেন নতুন সভাপতি! ২০০৮ সাল থেকে টানা সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন সালাউদ্দিন। তার উত্তরসূরি নিয়ে তাই আগ্রহটা বেশিই ফুটবল পাড়ায়। আগেই সভাপতি পদে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন তরফদার রুহুল আমিন। এবার বাফুফে সভাপতি পদে লড়াই করার ঘোষণা দিলেন বাফুফের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক ফুটবলার তাবিথ আউয়াল। গতকাল ঢাকার একটি হোটেলে আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলন করে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেন তিনি।
আগামী নির্বাচনে বাফুফে সভাপতি হিসেবে নিজের নাম ঘোষণার আগে গত জুলাই-আগস্টের গণ অভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তাবিথ আউয়াল। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন তিনি। এরপর বলেন, ‘আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর বাফুফের প্রথম নির্বাচন। এই নির্বাচনে আমি সভাপতি পদে লড়াই করার ঘোষণা দিচ্ছি।’ এ সময় তিনি নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বাফুফের গত তিনটি নির্বাচনেই লড়াই করেছেন তাবিথ আউয়াল। তিনবারই সহসভাপতি পদে। ২০১২ ও ২০১৬ সালে নির্বাচিত হলেও ২০২০ সালে অল্পতে হেরে যান। বাফুফের টেকনিক্যাল কমিটিতে কাজ করেছেন তিনি ২০১৬ সালের পর। তাবিথ বলেন, ‘আমি টেকনিক্যাল কমিটিতে কাজ করার সময় ৪০০ কোচ তৈরি করেছি।’ এ ছাড়াও ফুটবলের সঙ্গে নিজের সংশ্লিষ্টতা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ফুটবল খেলেছি। সংগঠক হিসেবেও কাজ করছি। আগে ফেনী সকারকে পৃষ্ঠপোষকতা দিতাম। বর্তমানে নোফেল স্পোর্টিংকে দিচ্ছি।’ আপাতত কেবল সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণাতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চান তাবিথ। পরবর্তীতে তিনি মেনিফেস্টো তুলে ধরবেন। তবে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হলে খেলার মাঠে চমক দেখাতে চান বলে জানিয়েছেন। তাবিথ বলেন, ‘নির্বাচনে অফিশিয়ালি প্রার্থিতা পেশ করে আমার নির্বাচনি প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে জানাব। নির্বাচনি ইশতেহারের ব্যাপারে এখনই কিছু বলতে চাইছি না। তবে এটুকু বলতে পারি, আমি সভাপতি হলে খেলার মাঠে চমক দেখাব। ফুটবলকে পরের ধাপে নিতে পারব আশা করি।’ আপাতত একাই নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন তাবিথ। নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর কারা নির্বাচন করতে চায় তাদের মধ্য থেকে দক্ষ ও যোগ্যদের নিয়ে প্যানেল করার ইচ্ছে আছে তার। অবশ্য এখনো কোনো কিছুই নিশ্চিত নয়। আগে কারা নির্বাচনে আগ্রহী তা পর্যবেক্ষণ করবেন তিনি। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি নির্বাচন চান তাবিথ। তিনি বলেন, ‘প্রার্থী যে কেউই হতে পারে। সেই প্রার্থীকে যে কেউ সমর্থনও দিতে পারে।’
তাবিথের পরিচয় অনেক, ব্যবসায়ী, বিএনপির জাতীয় কমিটিতে আছেন। ঢাকা উত্তর সিটির নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই করেছেন দুবার। ফুটবল সংগঠক। পরিচয় অনেক হলেও রাজনীতি ও ক্রীড়ানীতিকে একসঙ্গে মিলিয়ে ফেলতে চান না তিনি। তাবিথ বলেন, ‘আমি ক্রীড়াঙ্গন ছাড়তে পারব না। এটা আমার আত্মার সঙ্গে মিশে আছে। আমি অনেক খেলাই খেলি। তবে ফুটবলই হচ্ছে আমার প্রাণের খেলা।’ ফুটবলেই কাজ করতে চান তাবিথ। তিনি বাংলাদেশে ফুটবলের ব্র্যান্ডিং নিয়ে বলেন, ‘আমাদের জাতীয় দল ভালো করলে ফুটবলের ব্র্যান্ডিংও ভালো হবে।’ পৃথিবীতে ফুটবল সেভেনথ লারজেস্ট ইকোনমি (সপ্তম সর্বোচ্চ অর্থনীতি)। বাংলাদেশেও ফুটবল নিয়ে ব্র্যান্ডিংয়ের অনেক সুযোগ আছে বলে মনে করেন তাবিথ আউয়াল। কেবল তাবিথ আউয়াল ও তরফদার রুহুল আমিনই নন, বাফুফের আগামী নির্বাচনে আরও সভাপতি প্রার্থীর নাম শোনা যেতে পারে সামনের দিনগুলোতে।