শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। আজ কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ। চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে জয় পাওয়ায় এগিয়ে আছে ভারত। সিরিজ বাঁচাতে হলে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের। অন্যদিকে ম্যাচটা ড্র করলেই সিরিজ জয় করবে স্বাগতিক ভারত।
গতকাল সকাল থেকেই গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখে বৃষ্টি মাথায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে অপেক্ষা করছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। স্থানীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা বাংলাদেশ ও ভারত ক্রিকেট দলের অনুশীলন দেখতে মাঠে ঢুকতে চাইছেন। কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ ঢুকতে দিচ্ছে না। কারণ যাতে মাঠের ভিতর উভয় দলের ক্রিকেটাররা নির্বিঘ্নে অনুশীলন করতে পারেন, সেজন্য তিন স্তরের নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে ভারতের ৭২ বছরের পুরনো স্টেডিয়ামটিকে। দর্শক আটকে রাখার আরেক কারণ, স্থানীয় একটি হিন্দু সংগঠনের টেস্ট বয়কটের হুমকি! শুধু কানপুর টেস্ট নয়, ৬ অক্টোবর গোয়ালিয়রের প্রথম টি-২০ ম্যাচ বয়কটেরও হুমকি দিয়েছে সংগঠনটি। বয়কটের হুমকি উপেক্ষা করে আজ সকাল ১০টায় টেস্ট শুরু হবে। প্রস্তুত দুই দলই। নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বে বাংলাদেশ চাইছে সিরিজে সমতা আনতে। রোহিত শর্মার ভারত চাইছে চেন্নাইয়ের পর কানপুরেও জয়োৎসবে মাততে। এক দলের ফেরার ম্যাচ, আরেক দলের সিরিজ হোয়াইটওয়াশের স্বপ্নের ম্যাচ। শিডিউলে সকাল ১০টায় ম্যাচ শুরুর কথা। কিন্তু দিনভর বৃষ্টিতে প্রশ্ন উঠেছে টেস্ট শুরু হবে তো?
কানপুরে গতকাল দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। মাঠের বাইরে ক্রিকেটপ্রেমীরা অধীর অপেক্ষায় থাকলেও সকাল ও দুপুরে অনুশীলন করতে পারেননি ক্রিকেটাররা। যদিও মাঠে এসেছেন। সকাল থেকে টানা বৃষ্টি। গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামের মাঠকর্মীরা মাঠ ঢেকে রেখেছেন কাভার দিয়ে। বৃষ্টি নিয়ে উত্তরপ্রদেশ আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ ও কাল বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হবে। ম্যাচ মাঠে না গড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। উত্তরপ্রদেশে এখন ভয়াবহ বন্যা। টানা বৃষ্টি হচ্ছে। সুতরাং টেস্ট বৃষ্টিতে বাধাগ্রস্ত হবেই। চেন্নাইয়ে চিদাম্বরম স্টেডিয়ামের লাল মাটির উইকেটে নাজমুল বাহিনি সোয়া তিন দিনে হেরেছে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরেছে ২৮০ রানের আকাশসমান ব্যবধানে। ১৪ টেস্ট ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে রানের ব্যবধানে সবচেয়ে বড় হার। কানপুরে খেলা হবে কালো মাটির উইকেটে। গঙ্গা নদীর পাড়ের শহরটিতে এই প্রথম খেলবে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বিভিন্ন শহরে খেললেও কানপুরে খেলেনি। এই মাঠ, কন্ডিশন সবই অপরিচিত। তারপরও কালো মাটির উইকেটের সঙ্গে বেশ পরিচিত। মিরপুরের উইকেট অনেকটাই এরকম। কানপুরের রেকর্ডস বলে, পেসারদের তুলনায় স্পিনাররা সুবিধা পেয়ে থাকেন। বল নিচু হয়ে আসে। ব্যাটাররাও সুবিধা পান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফুয়াদ বাক্কাস ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ২৫০ রানের ইনিংস খেলেছেন এখানে। বোলিংয়ে স্পিনারদের প্রাধান্য প্রশ্নাতীত। এই মাঠে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং জশুয়া প্যাটেল ও সুভাষ গুপ্তের।
প্যাটেল ১৯৫৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৪ উইকেট নিয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেট নেন ৫৯ রানের খরচে। দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৫টি। সুভাষ ১৯৫৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নেন ১০ উইকেট। প্রথম ইনিংসে ১০২ রানের খরচে নেন ৯ উইকেট। ভারতীয় দলের দুই সদস্য রবীচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজাও এক ইনিংসে উইকেট নিয়েছেন ৫টির ওপর। কালো মাটির উইকেট বলেই হয়তো নাজমুল বাহিনী একাদশ সাজাবে তিন স্পিনার দিয়ে। সাকিব ও মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে একাদশে দেখা যেতে পারে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে। অফ স্পিনার নাঈম ইসলামও রয়েছেন স্কোয়াডে।