শেষ পর্যন্ত যে কারণেই হোক, কাজী সালাউদ্দিন বাফুফের সভাপতি পদে আর নির্বাচন করছেন না। নির্বাচন ঘিরে এখনো তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। তবে এরই মধ্যে নির্বাচন জমে ওঠার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ক্রীড়াঙ্গনের পরিচিত দুই মুখ এতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ার। প্রথম ঘোষণা দেন তরফদার রুহুল আমিন। এর পর তাবিথ আউয়াল। তাবিথ আবার দুবার বাফুফের নির্বাচিত সহসভাপতি ছিলেন। তরফদার কখনো নির্বাচন না করলেও ফুটবলে তাকে ঘিরে আলোচনা থাকে। ২০২০ সালে সভাপতি প্রার্থী হয়েও শেষের দিকে এসে সরে দাঁড়ান। সভাপতি পদে দুই প্রার্থীই থাকবে না এর সংখ্যা বাড়বে না কমবে তা সময়ই বলে দেবে। প্রশ্ন হচ্ছে- সালাউদ্দিনবিহীন এবার বাফুফের নির্বাচনটা কেমন হবে? অতীতে তো নির্বাচন ঘিরে বিতর্কও কম হয়নি। এবার কি তা মুক্ত থাকবে? স্বচ্ছভাবে নির্বাচন করা যাবে কি? এ নির্বাচন আবার ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার জন্য চ্যালেঞ্জই বলা যায়। তিনি দায়িত্বে থাকা অবস্থায় ক্রীড়াঙ্গনের প্রথম নির্বাচন হতে যাচ্ছে। তাও আবার ফুটবলের মতো বড় ফেডারেশনের। ক্রীড়াঙ্গনে সব ফেডারেশনে নির্বাচন হলেও মূলত চোখ থাকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও বাফুফের দিকে।
বাফুফে নির্বাচনের এখনো শিডিউলই ঘোষণা হয়নি। এরই মধ্যে যা শোনা যাচ্ছে তা সত্যিই হতাশার। আগে নির্বাচনে টাকা উড়ত। এখনই নাকি বাফুফে নির্বাচন ঘিরে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটতে যাচ্ছে। সুবিধাবাদী সংগঠকরাই মূলত পকেট ভারী করে থাকে। এবার নাকি চেহারা বদলালেও ঘুরেফিরে সেই কলঙ্কিত কাজটিই হচ্ছে। এর মধ্যে কেউ কেউ লাখ লাখ টাকা পকেটেও তুলে ফেলেছেন। গুঞ্জন কখন তৈরি হয়, যখন অদৃশ্য কিছু ঘটে তাকে। এখনই নাকি পর্দার আড়ালে তা শুরু হয়ে গেছে। সাবেক ফুটবলার কায়সার হামিদ বলেন, ‘অল্প দিন হলেও ক্রীড়া উপদেষ্টার বিভিন্ন উদ্যোগ প্রশংসিত হচ্ছে। এখন বাফুফের নির্বাচন ঘিরে যেসব গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে তা অবশ্যই তাকে খতিয়ে দেখতে হবে।’
শুধু বাফুফে নয়, সময় এসেছে ফেডারেশনের নির্বাচনে পরিবর্তন আনার। অনেক যোগ্য সংগঠকই এখন বিভিন্ন ফেডারেশন থেকে বিতাড়িত। কেউবা আবার অভিমানে দূরে সরে যাচ্ছেন। কারণ অযোগ্য ও বিতর্কিতরাই দীর্ঘদিন ধরে ফেডারেশনের গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসে আছেন। একজনই যদি যুগের পর যুগ পদ দখল করে রাখেন তাহলে অন্যরা তো সুযোগই পাবেন না। দীর্ঘদিন থাকলেও আপত্তি থাকত না যদি যোগ্য হতেন। কোনো ফেডারেশনে কোনো যোগ্য ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্বে আছেন এমন উদাহরণ কি দেওয়া যাবে?
জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফুটবলার শেখ মো. আসলাম বলেন, ‘যে কোনো ফেডারেশনের কমিটির এক মেয়াদ চার বছরেই। এখন থেকে কোনো পদে কেউ দুই মেয়াদের বেশি থাকতে পারবেন না। এমনটা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। আর দুর্নীতি যখন আছে তখন ফেডারেশন বা সংস্থার নির্বাচনে যারা প্রার্থী হবেন তাদের বাধ্যতামূলকভাবে হলফনামা দিতে হবে। সেখানে তাদের সম্পত্তির হিসাব দেওয়াটা খুবই জরুরি। কেননা ক্রীড়াঙ্গনের দায়িত্ব পেয়ে কোটি কোটি টাকা, ফ্ল্যাট, জমি ও গাড়ির মালিক হয়েছেন এমন সংখ্যাও একেবারে কম নয়। কাউন্সিলরশিপের রীতি পরিবর্তন দরকার।’